‘তোমার কাজ আমার কাছে অভিনয় শেখার ব্যাকরণ বই’

সুপ্রভাত ডেস্ক :
পরপারে গমন করেছেন ৪০টি বসন্ত পেরিয়েছে। আজও বাঙালির মননে উত্তম কুমার আবেগ এতটুকুও অমলিন হয়নি। মুখো গোঁজা সিগারেট, একমেবাদ্বিতীয়ম অ্যাটিটিউডে তিনিই সেরা। তিনি অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। টালিগঞ্জ স্টুডিও পাড়ায় যেই ব্যক্তির নামই যথেষ্ট। তখনও ছিল। আজও রয়েছে। কারণ, বাংলা স্বর্ণযুগের সিনেমার সেরা আবিষ্কার এই ‘মহানায়ক’। অপলক আকর্ষণীয় চাহনি। ঠোঁটের কোণের মিষ্টি হাসি। দুর্দান্ত অভিনয়- এটুকুই যথেষ্ট উত্তম কুমার আবেগটাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। কত মোহমোয়ী তার মোহে মুগ্ধ হয়ে বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছেন এককালে। আজ সেই মহানায়কের চলে যাওয়ার চল্লিশটা বছর পেরলো। বাঙালির কাছে কিন্তু এখনও তিনিই ম্যাটিনি আইডল। আবেগে এতটুকু কৃত্রিমতা আসেনি, কিংবা ভাঁটা পড়েনি। সেই উপলক্ষেই উত্তম কুমারকে নিয়ে আবেগে ভাসলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
উত্তম কুমার তার কাছে আজও ‘মাস্টারমশাই’। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘উত্তমজ্যেঠু, তোমার রেখে যাওয়া কাজ আজও আমার কাছে অভিনয় শেখার ব্যাকরণের বই। তোমার এমন ভুবন ভোলানো হাসি ও মনমুগ্ধ করা চোখের চাহনি বাঙালি সিনেপ্রেমীর কাছে আজও এক এবং অদ্বিতীয়। প্রয়াণদিবসে তোমাকে স্মরণ করে জানাই আমার অন্তরের প্রণাম।’
সৃজিতের স্মৃতিচারণায় মহানায়কের কথা উঠে এল খানিক অন্যভাবে। পরিচালক বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের একটি ছবি শেয়ার করেছেন, যেখানে মহারাজা এবং মহানায়ককে একই ফ্রেমে দেখা যাচ্ছে। সাদাকালো সেই ছবির সঙ্গে আবেগে ভাসলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। লিখলেন, ‘৪০ বছর পরেও, এখনও ছবিটায় তুমি থাকলেই সবার জন্য যথেষ্ট। সে আমজনতাই হোক কিংবা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকা কোনও ব্যক্তিই হোক… প্রয়াণ দিবসে গুরুকে জানাই প্রণাম।’
বাঙালির সিনেদর্শকের কাছে এখনও তিনিই যে ম্যাটিনি আইডল, সেই প্রমাণ মিলল আরও একবার। কীভাবে? বাংলার এক ওয়েব চ্যানেলে উত্তম কুমারের নামে একটি আলাদা বিভাগ রয়েছে। আর এই লকডাউনে দর্শকরা যখন হলমুখো হতে পারছেন না, তারা নাকি মহানায়কের সেসব মুভিতেই মজেছেন। সংশ্লিষ্ট ওটিটি প্ল্যাটফর্মের পরিসংখ্যান বলছে, গত সাড়ে তিন মাসে উত্তম কুমারের ছবির ‘ভিউয়ারশিপ’ বেড়ে গিয়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। দর্শকদের পছন্দের তালিকায় প্রাধান্য পাচ্ছে মহানায়কের সেরা পাঁচ ছবি- ‘চিড়িয়াখানা’, ‘সাড়ে চুয়াত্তর’, ‘চৌরঙ্গী’, ‘দেওয়া-নেওয়া’, ‘ধন্যি মেয়ে’।
খবর : সংবাদপ্রতিদিন’র।