তরুণ ও মধ্যবয়সীরা বেশি আক্রান্ত

করোনা ভাইরাস

মাস্ক পরিধান ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পড়ার পরামর্শ

রুমন ভট্টাচার্য <<
বন্দর নগরী চট্টগ্রামে আবারো তরুণ ও মধ্যবয়সীরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। গেলো বছরের মত এ বছরও তরুণ ও মধ্যবয়সীদের আক্রান্ত হার বেশি। যা মোট আক্রান্তের ৪৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণ ও মধ্যবয়সীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধিতে অগ্রাহ্য মনোভাব থাকা এবং মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়ানো, জনসমাগম এড়িয়ে না চলা ইত্যাদি কারণেই তাদের মধ্যে সংক্রমণ হার সবেচেয়ে বেশি। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পড়ার পাশাপাশি জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
সিভিল সার্জন অফিস হতে বয়সভিত্তিক প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সংক্রমণ বেশি ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের। এরপরেই আছে ২১ থেকে ৩০ বছর এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা। পরের অবস্থান ৫১-৬০ বছর বয়সী। সবচেয়ে কম সংক্রমিত ০ থেকে ১০ বছর বয়সীরা। করোনা আক্রান্ত ২৪ শতাংশের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর। ১৯ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ ও ৪১ থেকে ৫০ বছর। ১৫.৩১ শতাংশের বয়স ৫১-৬০ বছর, ১৩ শতাংশের বয়স ৬০ এর উর্ধ্বে, ৭ শতাংশের বয়স ১১-২০ বছর ও ২.৪৪ শতাংশের বয়স ০-১০ বছর।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘গেলো বছরের মত এবার একই চিত্র দেখতে পাচ্ছি। তরুণ ও মধ্যবয়সীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তরুণ ও যুবকরা বাইরে বেশি বের হয়। কিন্তু তারা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করে না। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাফেরাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান, বিনোদনকেন্দ্র ও পর্যটন কেন্দ্র জনসমাগম হয় এমন স্থানে মানুষ বেশি যাচ্ছে। ফলে ঘুরে এসে বেশিরভাগই নিজের অজান্তেই সংক্রমিত হচ্ছে। এ অবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। না হয় সামনে কঠিন সময়ের সম্মুুখীন হতে হবে।’
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৫৫১ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। এর মধ্যে তরুণ ও মধ্যবয়সী রয়েছেন ১৬ হাজার ৩২৬ জন। যা মোট আক্রান্তের ৪৩ শতাংশ। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার শনাক্ত হয়েছিল ২১২ জন, শনিবার ২০০ জন ও রোববার ১১১ জন। শনাক্তের হার ১২.৩৩ শতাংশ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার ছিল ৯ শতাংশ।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রজত শংকর রায় বিশ্বাস সুপ্রভাতকে বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে বিভিন্ন রোগী আসছে। এদের অধিকাংশ বয়স তরুণ। আউটডোরে আজ ১৯-২০ জন রোগী দেখলাম এর মধ্যে ৪ জন করোনা সাসপেকটেড। ৪ জনের মধ্যে ৩ জনই তরুণ। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বাইরে ঘুরছে, আড্ডা মারছে বন্ধুদের সাথে। অনিয়ন্ত্রিত চলাফেলা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই প্রত্যেকের উচিত বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলা। তাহলে সংক্রমণের হার কমে আসবে।’
এদিকে, সংক্রমণ বাড়লেও মানুষের মাঝে সচেতনতার বড় অভাবই পরিলক্ষিত হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় নগরীর জামালখানের ফুটপাতে মাস্ক ছাড়াই তরুণ-তরুণীদের ছিল চোখে পড়ার মত। এর মধ্যে কেউ একে অপরের সাথে আড্ডায়, কেউ খাবার কিনতে আবার কেউ খাবার খেতে ব্যস্ত।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত সোমবার থেকে জেলা প্রশাসনের ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করছেন। শুরুতে মানুষকে সচেতন করা হলেও এখন মাস্ক না পড়লে জরিমানা করা হচ্ছে।