টানা কমছে পণ্যের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং

চট্টগ্রাম বন্দর

সুপ্রভাত ডেস্ক »

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে গত তিন মাস ধরে ক্রমাগত কমছে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং। একই সাথে কমছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এবং কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় এই চিত্র। খবর টিবিএসের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী করোনা পরবর্তী উৎপাদন সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারা, ডলার সংকট ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ক্রমাগত কমছে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কাস্টমসের রাজস্ব আদায়েও।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের আগস্টে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৯২০ টিইইউস (টুয়েন্টি ফুট ইকুয়েভিলেন্ট ইউনিট)। রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয় ৭৫ হাজার ৬৯৭ টিইইউস। সেপ্টেম্বরে আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয় ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩ টিইইউস এবং রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয় ৬৩ হাজার ৮০৩ টিইইউস।
আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ১৩ হাজার ৪২৭ টিইইউস বা ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমে যায়। একইভাবে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমে ১১ হাজার ৮৯৪ টিইইউস বা ১৬ শতাংশ।

সর্বশেষ গেল অক্টোবরে আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয় ৯৭ হাজার ৫৩৮ টিইইউস, রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয় ৫৯ হাজার ৩৩১ টিইইউস। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমে ৩ হাজার ৯৫৫ টিইইউস বা চার শতাংশ। রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমে ৪ হাজার ৪৭২ টিইইউস বা ৭ শতাংশ।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অঞ্জন শেখর দাস বলেন, ডলার সংকটের কারণে সরকার বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করছে। ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে না পারায় আমদানি করতে পারছেনা।

বিশ্বব্যাপী ক্রাইসিসের কারণে আরএমজি সেক্টরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তৈরি পোষাক শিল্প মালিকরা পোষাক ডেলিভারি দিতে পারছেনা। তারা কাঁচামাল আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে রপ্তানির পরিমাণও ক্রমাগত কমছে।

তিনি আরো বলেন, আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়া দেশের অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোন লক্ষণ নেই।
এদিকে আমদানি কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে গত আগস্টের পর ক্রমাগত কমতে থাকে রাজস্ব আদায়। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায় হয় ৪ হাজার ৭৮১ দশমিক ২১ কোটি টাকা। আগস্টে রাজস্ব আদায় বাড়ে। আগস্টে রাজস্ব আদায় হয় ৫ হাজার ৪৯৮ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা। আবার সেপ্টেম্বরে ৩৯৩ দশমিক ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কমে। সেপ্টেম্বরে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় হয় ৫ হাজার ১০৫ দশমিক ১৮ কোটি টাকা। সর্বশেষ অক্টোবর মাসে সেপ্টেম্বরের তুলনায় রাজস্ব কমে ১৯৩ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা। অক্টোবরে রাজস্ব আদায় হয় ৪ হাজার ৯১১ দশমিক ৫০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের সকল সমুদ্রবন্দর দিয়ে পরিবহন হওয়া কন্টেইনারের ৯৮ শতাংশ পরিবহন হয়। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউস কন্টেইনার। দেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে আসা আমদানি পণ্যের শুল্ক আদায় করে কাস্টম হাউস।