‘জীবনের একটা বড়ো সত্য হলো আনন্দ’

থিয়েটার ইন্সটিটিউটে নৃত্য-উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক »

‘হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ সুন্দর তৈরি করেছে। তার মধ্য দিয়েই আমরা সত্যকে পেয়েছি, মঙ্গলকে পেয়েছি ,আনন্দকে পেয়েছি। আমরা যে বাঁচবো তা শিল্পের মধ্য দিয়েই সম্ভব। মানুষের বাঁচার একটা বড়ো রাস্তা হলো শিল্পের মধ্য দিয়ে বাঁচা। আমি এখানে এসে মহাফূর্তিতে আছি। আরো আনন্দ গ্রহণ করবো তোমাদের সকলের সঙ্গে ,বুঝবো যে জীবনের একটা বড়ো সত্য হলো আনন্দ।’

গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউট চট্টগ্রামে ওড়িশী অ্যান্ড ট্যাগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টারের ২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিক উপলক্ষে আয়োজিত ২দিনব্যাপী নৃত্য-উৎসব অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার এসব কথা বলেন।

শিল্প বিষয়ে যোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘আনন্দলোকে মঙ্গল আলোকে, বিরাজ সত্য সুন্দর’ এ গানটা আমার গলায়ও গুণগুণিয়ে উঠলো। এ গানটার মধ্যে আমরা যে জীবনটায় বাঁচি, এ বাঁচায় কিছু মূল কথা দেওয়া আছে। আনন্দ, মঙ্গল, সত্য ও সুন্দর। এগুলো বললেই আমরা শিল্পকে বুঝি। এগুলো মিলেই তৈরি হয়েছে শিল্প। শিল্প কি? যা সুন্দর, যা কখনও ভাষায় তৈরি হয় কবিতা, কখনও সুরে তৈরি হয় গান, কখনও আঁকাতে তৈরি হয় ছবি, কখনও শরীরের ভঙ্গিতে তৈরি হয় নৃত্য। অসাধারণ সব সুন্দর তৈরি হয়।’

অনুষ্ঠানে নৃত্য-উৎসবের আহ্বায়ক নিবিড় দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা চেয়েছি, পড়ালেখার পাশাপাশি আনন্দ ও স্বপ্ন নিয়ে তারা নৃত্যকে সাথী করে নিজেদের পথ চিনে নেবে। আমরা তাদের স্বপ্ন সারথী হতে দীর্ঘ তেইশ বছর যাবত কাজ করছি। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকা- পৌঁছে গেছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। অর্জন করেছে বেশকিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। আমাদের প্রতিষ্ঠানের অনেক শিল্পীরা কাজ করছে দেশ ও দেশের বাইরে এবং তারা দেশের জন্য সুনামও বয়ে আনছে।’

বাচিক শিল্পী ও নৃত্যশিল্পী মনীশা পাল বলেন, ‘নৃত্যের মাধ্যমে আমরা যে আমাদের অন্তরকে বিশুদ্ধ করি, সেই বিশুদ্ধতা আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই। বিশুদ্ধতার চর্চা আমরা নৃত্যের মাধ্যমে চালিয়ে যেতে চাই। বিগত ২৩ বছর ধরে আমরা এই ধারা অব্যাহত রেখেছি। আগামীতেও রাখবো।’

আয়োজনে ২৩ বছর ১৩ থেকে ১৪ জানুয়ারি অব্দি ২দিনব্যাপী নৃত্য- উৎসব ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী দিনে সংগীতের তালে ছিলো প্রায় ২০০জন শিশু শিল্পীর পরিবেশনায় নৃত্য। নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেয় আগমনী, প্রজাপতি, হাসিখুশি, শাপলা ও সূর্যমুখী নৃত্যদল। এ সময় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ওড়িশী অ্যান্ড ট্যাগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টারের সভাপতি অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। তিনি বলেন, ‘নাচের মধ্যে যে আনন্দ, যেমন ময়ূর নাচে। একটা নির্দিষ্ট সময়ে ময়ূর নাচে। এটা একটা সুন্দর শিল্প। এটি দেখে মানুষ আনন্দ পায়। এ আনন্দ মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই নিছক আনন্দ লাভের জন্যই সৃষ্টি করেছে। যা এখন শিল্পের পরিধি লাভ করেছে’।