চট্টগ্রাম টেস্টে ভালোই জবাব দিচ্ছে স্বাগতিকরা

তামিমের অপরাজিত সেঞ্চুরি

এ জেড এম হায়দার »

চট্টগ্রাম টেস্টে বল হাতে ’লোকাল হিরো’ নাঈম হাসানের ক্যারিয়ার সেরা ৬ উইকেট, আর গতকাল তৃতীয় দিনে তার সিনিয়র অপর চাটগাঁইয়া তামিমের সেঞ্চুরি, জয়-মুশফিক-লিটনের হাফ সেঞ্চুরিতে শ্রীলকার বিরুদ্ধে ভালো অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ। লংকার ৩৯৭ রানের জবাবে তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১৮ রান। এরমধ্যে মুশফিক ৫৩ ও লিটন দাশ ৫৪ রানে অপরাজিত আছেন। চা বিরতি পর্যন্ত ১৩৩ করা তামিম বিশ্রামে থেকে আর ব্যাট করতে নামেন নি। এর আগে হোম ভেন্যুতে দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের ১০ম শতক করেন। এর আগে ব্যক্তিগত ১০২ রানে রিভিও নিয়ে রমেশের বলে লেগ-বিফোর থেকে বেঁচে যান এ ওপেনার। আরেকবার লাসিথার বলে স্লিপে ক্যাচ ড্রপ করলে দ্বিতীয়বার নতুন জীবন পান তামিম। আজ চতুর্থ দিনে ব্যাট করে তামিম নিজের ইনিংসকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
দ্বিতীয় দিন শেষ সেশনে বিনা উইকেটে ৭৬ রানের মধ্যে তামিম ৩৫ ও জয় ৩১ রানে অপরাজিত থেকে গতকালও ভালোই সূচনা করেন। লাঞ্চ বিরতির আগে নতুন জীবন পান জয়। ব্যক্তিগত ৫৩ রানের সময় আসিথা ফার্নান্ডোর ওভারে জয়ের ক্যাচ ড্রপ হয়। তখন দলীয় স্কোর ছিল ১৪৪। বিনা উইকেটে ১৫৭ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় তামিম ও জয়। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের প্রথম দিকেই আসিথা ফার্নান্ডোর গুডলেন্থ এক ডেলিভারী খোঁচা মারতে গিয়ে কিপার ডিকবোলার হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলে প্রথম সাফ্যলের দেখা পায় সফরকারীরা। তামিমকে ভালোই সঙ্গ দেয়া এ ওপেনারের সংগ্রহ ৫৮। এ সময় দলের রান ছিল ১৬২। নাজমুল হোসেন শান্ত এসে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে কাসুন রাজিতার ওভারে কিপারের গ্লাভসে ক্যাচ তুলে দেন। ২২ বলে শান্ত করেন ১ রান। অধিনায়ক মোমিনুল হক সৌরভও ব্যর্থতার খোলস থেকে বের হতে পারেন নি। এর আগে নিউজিল্যান্ড দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা হোমগ্রাউন্ডেও বজায় রেখেছেন। এ মাঠে ৭ সেঞ্চুরি করা মোমিনুল রাজিথার বলে সরাসরি বোল্ড হওয়ার আগে ১৯ বলে ২ রান করেন। ১৮৪ রানে তিন উইকেট নেই স্বাগতিকদের। চাপকে সামাল দিতে অভিজ্ঞ মুশফিকুরকে নিয়ে তামিম বিপর্যয়কে সামাল দিতে থাকেন। চা বিরতি পর্যন্ত তারা ২২০ রান স্কোর বোর্ডে তোলেন। এর মধ্যে তামিম ১৩৩ ও মুশফিক ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে নিজ মাঠে তামিম সাড়ে সাত বছর পর শতক পূর্ণ করেন ১৬২ বলে। আর ক্যারিয়ারের দশম। এছাড়া তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে এ ভেন্যুতে পূর্ণ করেন এক হাজার রান। মোমিনুলের বিদায়ের পর তামিমের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। দলের স্কোর মজবুত করার পাশাপাশি দু’জনের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা ছিল। দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রান স্পর্শ করা। এই টেস্টের আগে ৫ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করতে মুশফিকের ৬৮ রান ও তামিমের ১৫২ রান। প্রয়োজন ছিল।
তামিম বিশ্রামে থেকে লিটনকে পাঠালে মুশফিককে নিয়ে দলীয় ইনিংসের চাকা ভালোভাবে ঘুরাতে সমর্থ হন। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ধনাঞ্জয়ার বলে শর্ট লেগে ওশাদা ফানার্ন্দোর ক্যাচ মিসে জীবন পান তিনি। জীবন পেয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন লিটন। ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরি পান মুশফিক। দু’জনের হাফ-সেঞ্চুরির আগে ১০১তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩শ স্পর্শ করে।
দিন শেষে মুশফিক ৫৩ ও লিটন ৫৪ রানে অপরাজিত আছেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২১১ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ৯৮ রান করেন মুশফিক-লিটন। শ্রীলংকার রাজিথা ১৭ রানে ২ ও আসিথা ১ উইকেট শিকার করেন।