চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পেল আরেকটি জলহস্তী

সুপ্রভাত ডেস্ক »

অদল-বদল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঢাকা জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে আরও একটি জলহস্তী আনা হয়েছে চট্টগ্রামে; আর এর মাধ্যমে জোড়া জলহস্তী পেল নগরীর ফয়’স লেকের ধারের চিড়িয়াখানাটি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ৯ বছর বয়সী স্ত্রী জলহস্তীটি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এসে পৌঁছায়। খবর বিডিনিউজের।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে এক জোড়া বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় পাঠিয়ে তার বিনিময়ে ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে এক জোড়া জলহস্তী পেয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা।’

১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে দুই বছর বয়েসী এক জোড়া বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

ওই জোড়া বাঘের বদলে ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিড়িয়াখানা থেকে প্রথম দফায় ১২ বছর বয়সী একটি পুরুষ জলহস্তী আসে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়, আর এই দফায় এল একটি মেয়ে জলহস্তী।

ডেপুটি কিউরেটর শুভ বলেন, ‘জলহস্তী আনার অনুমতি পেয়েই আমরা সেগুলোর বাসস্থানসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু করেছিলাম। সেগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রথমবার আনা পুরুষ জলহস্তীটি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় খাপ খাইয়ে নিয়েছে। আশা করি এটাও পারবে।’

যেভাবে মিলল জলহস্তী
ডেপুটি কিউরেটর শুভ জানান, চিড়িয়াখানার প্রাণী বৈচিত্র্য বাড়াতে ২০২১ সালের শেষ দিকে জলহস্তী চেয়ে মন্ত্রাণালয়কে চিঠি দিয়েছিলেন চিড়িয়াখানার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রহমান। কিন্তু উত্তর পাওয়া যায়নি সে সময়।

এরপর গত বছরের ২২ অগাস্ট দুই জোড়া জলহস্তী চেয়ে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ে ফের চিঠি দেন চিড়িয়াখানার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি। তখন মন্ত্রণালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়, রংপুর চিড়িয়াখানার জন্য এক জোড়া বাঘ, ঢাকার চিড়িয়াখানার জন্য এক জোড়া সম্বর হরিণ ও ইন্দোনেশিয়ার এক জোড়া আয়াম সিয়ামি মোরগ দিতে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা রাজি আছে কী না।

‘পাশাপাশি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ পাঠানো এবং ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে জলহস্তী চট্টগ্রামে নেওয়ার যাবতীয় ব্যয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাকে বহন করতে হবে।’

রংপুরে বাঘ পাঠানো এবং ঢাকা থেকে জলহস্তী আনার ব্যয় বহন করার শর্তটি মেনে নিলেও অন্য প্রাণীটি (আয়াম সিয়ামি মোরগ) চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত না থাকায় সেগুলোর প্রজনন সাপেক্ষে পরে দেওয়ার আশ্বাস দেয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এসব কথা জানিয়ে মন্ত্রণালয়কে গত ১২ জানুয়ারি চিঠি পাঠায় চট্টগ্রাম।

এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জলহস্তী দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় মন্ত্রণালয়। আর সেই সিদ্ধান্তের সাত মাস পর চট্টগ্রাম ও রংপুর নিজেদের মধ্যে বাঘ-জলহস্তী বিনিময়ের কাজটি সেরে নেয়।

নগরীর ফয়’স লেক এলাকায় ১৯৮৯ সালে গড়ে ওঠে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। আর্থিক অনুদান ছাড়া টিকেট বিক্রির আয় থেকেই প্রাণি সংগ্রহ, উন্নয়ন এবং কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে কর্তৃপক্ষ।

কয়েক জোড়া প্রাণী নিয়ে তিন দশক আগে গড়ে ওঠা এ চিড়িয়াখানাকে নতুন রূপে সাজানোর উদ্যোগ নিয়ে গত কয়েক বছরে সংস্কারের পাশাপাশি আনা হচ্ছে নানা প্রাণী।

এ চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৭০ প্রজাতির ছয় শতাধিক পশু-পাখি রয়েছে।

বর্তমানে চিড়িয়াখানায় বাঘের সংখ্যা ১৪টি, যার মধ্যে চারটি পুরুষ ও ১০টি মেয়ে। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি বিরল প্রজাতীর সাদা বাঘ রয়েছে।
আরও আছে আফ্রিকা থেকে আসা এক জোড়া সিংহ ও চার জোড়া ওয়াইল্ড বিস্ট।