গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিতের দাবি

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক »
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর এবার গণপরিবহনে হাফ ভাড়া নিশ্চিত করার দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হাফ ভাড়াসহ ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মুখোরিত ছিল আন্দোলন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল জিইসিতে এসে শেষ হয়।
এ সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিতের দাবি তোলা হয়েছিল। সেসময় সরকারি পক্ষ থেকে সকল দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু সরকারের অবহেলায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। অল্প শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধিরও প্রধান কারণ এটি। কারণ যে হারে সবকিছুর দাম বাড়ছে সে হারে তো বাবাদের বেতন বাড়ছে না। এতে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল করে কর্মের পিছে ছুটতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ
প্রজ্ঞাপন জারি করে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে। গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দ্রুত বাতিল করতে হবে, পরিবহনখাতে শ্রমিকদের উপর চলমান সব প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, জ্বালানী তেল ও এলপিজি গ্যাসের দাম কমানো, রাস্তার ধারণক্ষমতা বিবেচনায় ব্যক্তিগত পরিবহন হ্রাস, গণপরিবহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থার মানোন্নয়ন করতে হবে।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হতেই হঠাৎ গণপরিবহনে এভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করা কোনভাবেই আমাদের কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা। তিনি বলেন, ‘শ্রমজীবী-পেশাজীবী মানুষ এ পরিস্থিতিতে অনেকে চাকরি হারিয়েছে। কেউবা নতুন চাকুরির খোঁজে। এ পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন না করে জ্বালানি তেলের দামসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি করে জনভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের দিকে নজর নেই সরকারের। দেশের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন করতে পারলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব। নতুবা সকল উন্নয়ন বিফলে যাবে।’
শিক্ষার্থী রকি দাশ বলেন, ‘সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় টিউশন করে এ শহরে জীবন বাঁচানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে না। সরকার আমাদের যে মাথাপিছু আয় দেখাচ্ছেন তা নিতান্তই হাস্যকর।’
রাজধানীতে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেতের দিকে যাওয়ার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দাবি আদায়ের পর ছাত্রলীগ সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগ করবে। কিন্তু আন্দোলনের সময় তারা কেন সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালাবে? দাবি আদায় হলে গণপরিবহন থেকে চাঁদা নিয়ে পকেট ভরা হবে না এজন্য আমাদের সুশৃঙ্খল আন্দোলনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নগর আহ্বায়ক দীপা মজুমদার বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় একজন শিক্ষার্থী এ নগরে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেতন ফি মওকুফের পাশাপাশি গণপরিবহনে হাফ ভাড়া চালু করতে হবে।’