কোন ইস্যুতেই বঙ্গবন্ধুর অবমাননা সহ্য করা হবে না

প্রেস কাউন্সিলের অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনভাবেই কোন ইস্যুতেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অবমাননা সহ্য করা হবে না। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আয়োজিত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবকে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মুজিববর্ষকে আমরা যেভাবে পালন করতে চেয়েছি করোনার কারণে ঠিক সেভাবে পালন করতে পারছি না। একটি মহল মুজিববর্ষের শেষের দিকে এসে নানাভাবে, নানা প্রসঙ্গ টেনে এনে বিতর্ক তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রসঙ্গ টেনে সমাজে অস্থিরতা করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কোনভাবেই কোন ইস্যুতে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা সহ্য করতে পারি না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা সমাজকে পিছিয়ে নিতে চায়, সমাজকে যারা মধ্যযুগে নিয়ে যেতে চায়, মধ্যযুগীয় সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে চায় এবং তাদের যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের বিরুদ্ধে আজকে কলম নিয়ে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে। সাংবাদিক সমাজকে অনুরোধ জানাব, যারা সমাজে হানাহানি করতে চায়, নানা ইস্যু তৈরি করে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রেস কাউন্সিলের বই প্রদান কার্যক্রম একটি অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। আজকের দুনিয়ায় মানুষ ধীরে ধীরে বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বর্তমানে তরুণদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস আগের মতো নেই। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে সার্বিকভাবে পৃথিবীকে জানতে হলে, জ্ঞান অর্জন করতে হলে বইয়ের কোন বিকল্প নেই। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাসটা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।
করোনাকালীন সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, এই করোনার মধ্যে কাজ করতে গিয়ে কয়েকশ’ সাংবাদিক বন্ধু আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৯ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আপনাদের অনুরোধ জানাব, আপনারা যেভাবে অকুতোভয়ে কাজ করে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলে কাজ করে যাবেন।
প্রেস কাউন্সিল সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রেস কাউন্সিলের যেটুকু ক্ষমতা আছে আজকের প্রেক্ষাপটে তা খুব বেশি কার্যকর নয়। প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের পর্যায়ে রয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি এই সংশোধিত প্রেস কাউন্সিল আইন আগামী সংসদে উপস্থাপন করা জন্য। এটি পাস হলে প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা আরো বাড়বে, সেইসাথে সংক্ষুব্ধ সাংবাদিক ও জনগণ প্রতিকার পাওয়ার জন্য প্রেস কাউন্সিলের দ্বারস্থ হতে পারবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রেস কাউন্সিল ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলো কিন্তু করোনার কারণে অনেক কার্যক্রম পালন করা যায়নি। তারপরে গত একমাস যাবৎ আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, তারই অংশ হিসেবে আজকের এই অনুষ্ঠান। সারাদেশে প্রাথমিকভাবে আমরা ২টি বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেছি, আগামীতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আরো ৫টি কর্নার স্থাপন করা হবে।
দৈনিক আজাদীর সম্পাদক ও প্রেস কাউন্সিলের সদস্য এম এ মালেক বলেন, প্রেস কাউন্সিলের যে অস্তিত্ব রয়েছে দেশের জনগণ আসলে সে সম্পর্কে কিছুই জানে না। একটি মাত্র আইন করলে যেখানে সংবাদপত্র সম্পর্কিত যতগুলো মামলা হবে সেটা যদি প্রথমে কাউন্সিলে আসবে, কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে যদি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সন্তুষ্ট না হয়, পরে কোর্টে যাবে। এ আইনটি হলে সাংবাদিকসহ সবাই উপকৃত হবেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ও বিএফইউজে’র যুগ্ন মহাসচিব এমএ মজিদ, বিএফইউজে’র সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।