ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া »
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বৈশি^ক মহামারি করোনাকালে ছিলনা পর্যটক-দর্শনার্থী আগমন। তাতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল পার্কের প্রাণিকুল। আর সেই সুযোগে করোনাকালের অন্তত পাঁচমাস কোলাহলমুক্ত পরিবেশে প্রাণিকুলে যেমন প্রাণচাঞ্চল্য ছিল, তেমনি আগমন ঘটেছে একের পর এক নতুন অতিথি। করোনা সময়ে পার্কের অন্তত শতাধিক নতুন অতিথি জন্ম নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পার্কের বনবিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী। মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, করোনা সংকটকালে সাফারি পার্ক বন্ধ থাকলেও প্রাণিকুলে এসেছে একের পর নতুন অতিথি। উল্লেখিত সময়ে সাফারি পার্কের প্রতিটি প্রাণির বেশ বংশবিস্তার ঘটেছে। জন্ম নেয়া প্রাণির মধ্যে বেশি এসেছে হরিণ। পরের অবস্থানে আছে বানর। জন্ম নিয়েছে ভাল্লুক, জলহস্তী। পাশাপাশি জন্মলাভ করেছে ময়ুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। পার্কের বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, করোনা সময়ে জন্ম নেয়া বেশিরভাগ প্রাণিকে আমরা নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে তুলছি। সেইজন্য পার্কের ভেটেরিনারি বিভাগের চিকিৎসক কর্মকর্তা সবাই কাজ করে যাচ্ছেন।এদিকে করোনা সময়ে পার্কের প্রেক্ষাপট পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ। তিনি ওইসময় পার্কের বেস্টনী ঘুরে ঘুরে জন্ম নেয়া প্রাণিগুলোর খোঁজ-খবর নিয়েছেন।ইউএনও সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বৈশি^ক মহামারি করোনাকালে ছিলনা পর্যটক-দর্শনার্থী আগমন। তাতে বেশ স্বাচ্ছন্দে ছিলেন পার্কের প্রাণিকুল। আর করোনাকালীন কোলাহলমুক্ত পরিবেশে প্রাণিকুলে যেমন প্রাণচাঞ্চল্য ছিল, তেমনি আগমন ঘটেছে একের পর এক নতুন অতিথি। তিনি বলেন, পরিদর্শনকালে জন্ম নেয়া প্রাণিগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়েছি। প্রাণি যাতে নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে উঠে সেইজন্য পার্কের ভেটেরিনারি বিভাগের চিকিৎসক কর্মকর্তা সবাইকে যতœ সহকারে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছি। জানা গেছে, প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি কক্সবাজার জেলা। পাহাড়, পর্বত, ঝর্ণাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য দিয়ে ঘেরা এই জেলার প্রবেশদ্বার চকরিয়া উপজেলাতেই ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি অবস্থিত। এটি দেশের প্রথম সাফারি পার্ক। দেশের বিলুপ্তপ্রায় ও বিরল প্রজাতি বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধিসহ মানুষের চিত্ত বিনোদন, গবেষণা ইত্যাদি নিশ্চিতের লক্ষ্যে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চকরিয়া উপজেলা এলাকায় স্থাপন করেন দেশের প্রথম “ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক”। সেই থেকে সাফারি পার্কটি কক্সবাজারে ভ্রমনে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এখানে রয়েছে হাজার প্রজাতির দেশি-বিদেশি পশু-পাখি। সাফারি পার্ক ও চিড়িয়াখানার মধ্যে পার্থক্য হলো-সাফারি পার্কে পশুপাখি থাকে মুক্ত পরিবেশে আর দর্শনার্থীরা থাকে নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে। সাফারি পার্কের ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ডুলাহাজারা বগাচত্বর এলাকার ৯শ হেক্টর আয়তনের গাছগাছালিতে ভরপুর এই জনপদটি ১৯৮০-৮১ সালে হরিন প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে চালু হয়েছিল। বর্তমানে এটি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য নানারকম বন্য জীবজন্তুর আবাসস্থল এবং ইকো-ট্যুরিজম ও গবেষণার পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।