উখিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৫ ঘরে তালা দিল প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »

মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ পরিবার হিসেবে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হলুদবনিয়া এলাকায় পাওয়া ১৮টি ঘরের মধ্যে ১৫টি’তে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
সূত্র জানায়, উক্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৮ ঘরের মধ্যে ১৫টি পেয়েছেন সম্পদশালীরা, তাই এখানে কেউ থাকেন না। বাকি ৩টি’তে বসবাস করছেন তিন পরিবার। যেসব ঘরে বরাদ্দ পাওয়া লোকজন থাকেন না সেসব ঘরেই তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের ২০ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ১৪৫টি অসহায় ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ পরিবারকে জমি ও ঘর উপহার দেয় সরকার। এর মধ্যে বিভিন্নস্থানে বরাদ্দ পাওয়া লোকজন তাদের ঘরে থাকছেন না। ঘর বরাদ্দ পাওয়া এমনও আছেন যারা বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা আসলে গৃহহীন নন । বরাদ্দ পাওয়া কয়েকজন সম্পদশালী। কারও কারও বাড়ির পাশাপাশি জমিজমাও আছে। সঠিকভাবে ঘরগুলো বরাদ্দ না হওয়াতে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। কোন কোন জায়গায় ঘরগুলো সম্পদশালীরা বরাদ্দ নিয়ে এর কয়েকটি বিক্রি করেছেন, কেউ আবার ভাড়া দিয়েছেন, আবার কেউ অন্যকে উপহার দিয়েছেন- যা তদন্ত করলে বের হবে।
এদিকে, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের যে ১৮টি ঘর করা হয়েছে, তার মধ্যে কেবল তিনটিতে বরাদ্দপ্রাপ্তদের থাকতে দেখা গেছে। মোহাম্মদ আলী, মনোয়ারা বেগম ও এরশাদ উল্লাহ থাকছেন নিজেদের ঘরে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যেসব ঘরে বরাদ্দ পাওয়া লোকজন বসবাস করছে না শনিবার সেসব ঘরে তালা দিয়েছে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন।
রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন সজীব বলেন, ‘যেহেতু প্রাথমিক তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে, সে হিসেবে এসব ঘরে তালা দেয়া হয়েছে। তাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে।
‘তদন্ত করে কমিটি দ্রুত প্রতিবেদন দেবে। এরপর এসব বরাদ্দ বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
কত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘একজন তহসিলদারের নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেবেন।’
হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ইউএনওর নির্দেশে ইউনিয়নের গ্রামপুলিশের সদস্যরা এসব ঘরে তালা দিয়েছেন। পরে বরাদ্দ পাওয়া প্রত্যেককে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
প্রশাসন জানায়, উপহারের এসব ঘরের মালিকানা স্থানান্তরযোগ্য না হলেও ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় তা বিক্রির তথ্য মিলেছে এবং অনেকেই এসব ঘর ভাড়া দিয়েছেন।