আম্পানে পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু ৭২

উত্তর ২৪ পরগণায় একশো বছরের পুরনো গাছ উপড়ে পড়ল রাস্তায়। সেই পথে গাছের ডালের নীচ দিয়েই প্রাণ হাতে চলছে আনাগোনা।

সুপ্রভাত ডেস্ক :

ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যেন দুমড়ে-মুচড়ে গেছে শহর। দুই ২৪ পরগনাসহ দক্ষিণের জেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এর মধ্যেই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এনডিটিভি জানায়, নিহতদের পরিবার পিছু ২.৫ লাখ রূপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মমতা। জানিয়েছেন বিপর্যস্ত জেলা পুনর্গঠনে ১০০০ কোটি রূপির তহবিল গঠন করার কথা।

দুর্যোগের এই সময়ে ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সাহায্যও চেয়েছেন তিনি।

উত্তর ২৪ পরগণার শ্যামনগর! সুপার সাইক্লোন আমপানের (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) দাপটে গোটা এলাকা তলিয়ে গিয়েছে জলের তলায়।

তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিজে এসে দেখে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, এত বছর কলকাতায় থেকেও এমন বিপর্যয় তিনি আগে কখনও দেখেননি।

বুধবার সন্ধ্যায় মমতা বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের চেয়েও আম্পান আরো বেশি খারাপ ফল বয়ে এনেছে। এই ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লক্ষ কোটি রূপি হতে পারে।

আম্পানের ঝাপটা মূলত পুরোটাই গেছে পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে। বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি সাগর থেকে স্থলে উঠে আসতে শুরু করে। সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন উপকূলে আছড়ে পড়ে আম্পান। খবর বিডিনিউজ।

এ সময় বাতাসের একটানা বেগে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার থাকলেও দমকা ও ঝড়ো হওয়া কখনো কখনো ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠে যায়।

শান্তিপুরে গাছের চাপে ভেঙে পড়েছে বাড়ি। এক রাতের সাইক্লোনে আশ্রয় হারিয়েছেন বহু মানুষ।

কলকাতার দমদম এলাকার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ১৩৩ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায়। “এলাকার পর এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে,” বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

করোনাভাইরাসে অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে এমন দুর্যোগে অনেকটাই বিধ্বস্ত মমতা নিজেও। তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের জন্য অর্থনীতির অবস্থা শেষ। তার ওপর এ দুর্যোগ। কোনও রোজগার নেই। পুনর্গঠন করতে অনেক টাকা লাগবে।’’

বৃহস্পতিবার টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শেষে ত্রাণের কাজে নামবে রাজ্য প্রশাসন। তাছাড়া, ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গে যাবে কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধি দলও।