আগামী বছর ডিসেম্বরে কক্সবাজার যাবে ট্রেন : মন্ত্রী

চট্টগ্রাম-দোহাজারী-পটিয়া রুটে চালু হলো ডেমু ট্রেন

নিজস্ব প্রতিনিধি, পটিয়া, সংবাদদাতা চন্দনাইশ :
চট্টগ্রাম-দোহাজারী ও চট্টগ্রাম-পটিয়া রুটে ডেমু ট্রেন আনুষ্ঠানিক চালু করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি পটিয়ায় ডেমু ট্রেন উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি সকালে দোহাজারী জংশন স্টেশনে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে আরও একটি ডেমু ট্রেন চালু করেন।
পটিয়ায় উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে চট্টগ্রাম-পটিয়ায় ডেমু ট্রেন চালু করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে সম্প্রসারিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে দুটি রেলওয়ের। একটি পদ্মাসেতুর সঙ্গে রেল যোগাযোগ, আরেকটি মিয়ানমার, চীন ও ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ। তিনি আরও বলেন চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে রেলওয়ের যেসব জায়গা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে তা শীঘ্রই উচ্ছেদ করা হবে।
এদিকে, গতকাল সকালে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, বাংলাদেশে ১০টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে রেলের মধ্যে রয়েছে ২টি। একটি সারা বাংলাদেশে রেললাইন সংস্কার। অপরটি রেললাইন সম্প্রসারণ। যে রেললাইনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে সারা দেশের সাথে রেল যোগাযোগ সম্পন্ন হবে। তাছাড়া ট্রান্স এশিয়ান রেললাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমার, চীন, ভারত পর্যায়ক্রমে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের সাথে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ সম্পন্ন করে জনগণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। ২০১১ সালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে রেল মন্ত্রণালয়কে আলাদা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রেল ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। চন্দনাইশের দোহাজারীতে একটি অত্যধিক রেলওয়ে জংশন প্রতিষ্ঠা করা হবে। যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
দোহাজারী রেলস্টেশন থেকে ডেমু কমিউটার ট্রেন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গতকাল সকালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে ডেমু ট্রেন উদ্বোধন উপলক্ষে রেলস্টেশন চত্বরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় প্রকৌশলী (পূর্ব) আহসান হাবিবের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ, সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, পূর্বাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেন্ট মো. সাহেব উদ্দিন, পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশগুপ্ত। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দোহাজারী পৌরসভার প্রশাসক ও চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন, চেয়ারম্যান যথাক্রমে হাবিবুর রহমান, আলমগীরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জুনু, দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ডেমু রেকের মাধ্যমে এসব ট্রেন নিয়মিতভাবে এ লাইনে চলাচল করবে। দোহাজারী কমিউটার-১ চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় রওনা হয়ে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে পটিয়া স্টেশনে পৌঁছবে। দোহাজারী কমিউটার-২ পটিয়া থেকে সাড়ে ৭টায় রওনা হয়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছবে। দোহাজারী কমিউটার-৩ চট্টগ্রাম থেকে বিকাল ৫টায় রওনা হয়ে রাত সাড়ে ৭টায় দোহাজারীতে পৌঁছবে। দোহাজারী কমিউটার-৪ দোহাজারী স্টেশন থেকে রাত ৭টা ৪০ মিনিটে রওনা হয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছবে।
ট্রেনটি পথে হাশিমপুর, কাঞ্চননগর, খাঁনহাট, খরনা, চক্রশালা, পটিয়া, খানমোহনা, ধলঘাট, বেঙ্গুরা, গোমদন্ডী, ষোলশহর স্টেশনে থামবে। যাত্রাপথে এ রেললাইনে সবকটি স্টেশনে যাত্রী উঠানামা করবে।
জনপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা। বর্তমানে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে ২ জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল করছে। তবে, এসব ট্রেন চলাচল শুক্রবার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।