বারইয়ারহাট পৌর আড়ৎ
রাজু কুমার দে, মিরসরাই :
হোরা মিয়া (৩৫)। দুই সন্তানের অভাবের সংসার। দিন কাটছিল অনাহারে অর্ধাহারে। তবে মাছ কেটে ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা।এখন সন্তানদের পড়ালেখা, সংসার খরচের পরও ব্যাংকে জমা হচ্ছে মাসে হাজার হাজার টাকা। মিরসরাইয়ে মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ করছে এমন প্রায় শতাধিক মানুষ। মাছ কাটার সাথে জড়িত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাছের আড়ৎ বারইয়ারহাট। এই আড়ৎ থেকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য মাছ কিনে থাকে সাধারণ মানুষ। মাছ বিক্রির পাশাপাশি মাছ কাটার লোকও সরবরাহ করে থাকে আড়ৎগুলো। হিসাব মতে, প্রতি কেজি মাছ কাটার পারিশ্রমিক নেয়া হয় ২০ টাকা। একজন মাছ কাটা শ্রমিক দৈনিক-৫০-২শ কেজি পর্যন্ত মাছ কাটতে পারেন। তবে কোন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও একজন শ্রমিক দৈনিক-৫০-১শ কেজি মাছ করে থাকেন। যিনি ১শ কেজি মাছ কাটতে পারেন তিনি দৈনিক আয় করেন ২ হাজার টাকা। ফলে একজন শ্রমিক মাসে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন। যা অনেক প্রবাসীর পক্ষেও আয় করা সম্ভব নয়। মাছ কাটা শ্রমিক বেলাল জানান, তিনি দৈনিক ৫০ থেকে ১শ৫০ কেজি পর্যন্ত মাছ কেটে থাকেন। তবে প্রতিদিন সমান হয় না। গড়ে দৈনিক ৫০-১শ কেজি হয়ে থাকে। তার সাথে সহকারী হিসেবে আরো একজন রয়েছে। তাকে দৈনিক ৩শ টাকা পারিশ্রমিক দেন তিনি। উপজেলায় প্রায় শতাধিক মাছ কাটার শ্রমিক রয়েছে বলে তিনি জানান। খসরু নামে একজন জানান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য বারইয়ারহাট বাজার থেকে মাছ সরবরাহ করে তা কেটে নিয়ে যায় আয়োজকরা। প্রতি কেজি বড় মাছ কাটেন ২০ টাকায়। আর ছোট হলে ৩০ টাকা। ফলে প্রতিদিন তিনি আয় করেন ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা। কখনো সে আয় এক থেকে দুই হাজার টাকা গিয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া মাছের তেলসহ অন্যান্য জিনিস বিক্রি করে বাড়তি আয় হয় বলেও জানান তিনি।বারইয়ারহাট পৌর মাছের আড়ৎদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী, ফেনী, সীতাকুন্ড, ফটিকছড়ি, রামগড়সহ বিভিন্ন উপজেলার মানুষ বৃহৎ সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য বারইয়ারহাট মাছ বাজার থেকে মাছ সরবারাহ করে থাকেন।
মাছ কেটে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছে বলে জানান তারা। বারইয়ারহাট পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন ভিপি বলেন, মাছ কাটা একটি ব্যতিক্রমী পেশা। এখন মানুষ আগের থেকে অনেক সুখি। বাড়িতে নিয়ে মাছ কাটতে চায় না। তাই মাছ কাটার সাথে জড়িতদের চাহিদা বেড়েছে। ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।