শতাধিক অভিযোগে ৮৮টি নিষ্পত্তি
সুমন শাহ্, আনোয়ারা
কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৯ কিলোমিটার আয়তন জুড়ে রয়েছে ৪২ হাজার ৬৬ জন মানুষের বসাবস। এরমধ্যে পুরুষ ২১ হাজার ৯৬ জন ও মহিলা ২০ হাজার ৯শত ৭০জন। ৩ গ্রামের ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে এখানে। যেখানে বসাবাস করছে ৬ হাজার ৪শত ৫৭টি পরিবার। এ ইউনিয়নে সফলভাবে গ্রাম আদালত পরিচালনার সুফল পাচ্ছেন প্রান্তিক মানুষ। ছোটখাট বিরোধ নিরসনে জেলা-উপজেলার আদালতে আগতদের সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে।চলতি বছর উপজেলার গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে শর্তাধিক মামলা। বিচার পদ্ধতি ভোগান্তি ছাড়া ও সহজ হওয়ায় উকিল মোক্তারের পরিবর্তে জনপ্রতিনিধিদের ওপর আস্থা রাখছে মানুষ। তাই প্রান্তিক মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে ইউনিয়নের এ গ্রাম আদালত। আগে গ্রাম আদালতে বিচারযোগ্য বিরোধগুলো প্রায়ই সালিশ কিংবা থানায় নিষ্পত্তি হতো। বর্তমানে সুবিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যমেই বিরোধ মেটাচ্ছে বড়উঠানের মানুষ। আস্থাও বাড়ছে দিনদিন। ২০১৭ সালের বাংলাদেশে গ্রাম আদালত কার্যক্রম শুরু করে ইইউ, ইউএনডিপি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রাম আদালতে শতাধিক অভিযোগে ৮৮ টি হচ্ছে নিষ্পত্তি।সেবা নিতে আসা শাহমীরপুর ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সানোয়ারা বেগম (২৮) নামে এক নারী বলেন, আমাদের জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে একটি অভিযোগ করলে তিনি দ্রুত গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সমাধান করে দিয়েছেন। সে জমিতে এখন ঘর নির্মাণ করে রয়েছি। বাকি জমির বিরোধ নিয়ে আজ এসেছি চেয়ারম্যানের কাছে। তিনি আশ^াস দিয়েছেন দ্রুত সমাধানের। গ্রাম আদালতে সাধারণ মানুষ সুষ্ঠ বিচার পাচ্ছেন। আর যেতে হচ্ছে না উচ্চ আদালত বা থানায়। ইউপি সদস্য মো. হারুনুর রশিদ বলেন, আমি ৫ বার নির্বাচিত ইউপি সদস্য। দীর্ঘদিন ২৯ বছর ধরে এ ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করছি। সাধারণ মানুষ এখানে জমি বিরোধসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে আসে। সে গুলো আমরা আলাপ-আলোচনা করে কাগজপত্র দেখে সুষ্ঠু সমাধান দিই। এতে গ্রামের মানুষ উপকৃত হয়।পরিষদের সচিব ওমর ফারুক বলেন, সাধারণ মানুষ বিচারের আশায় অভিযোগ নিয়ে আসলে উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয়। এরপর গ্রাম আদালতে সপ্তাহে দুইদিন দু’পক্ষকে নিয়ে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে সমাধানের চেস্টা করা হয়। গ্রাম আদালতে শতাধিক অভিযোগে ৮৮ টির নিষ্পত্তি হয়েছে এখানে।বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গ্রামের মানুষরা ছোট ছোট বিরোধ নিম্পত্তির জন্য গ্রাম আদালত সৃষ্টি করেছেন। মানুষ ছোট ছোট বিরোধ গ্রাম আদালতে অভিযোগ দিচ্ছে। স্বল্প সময়ে ন্যায় বিচার পাচ্ছে তারা। গ্রাম আদালতে বিচার নিম্পত্তি হওয়ার মধ্যদিয়ে সুফলও পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।