চকরিয়ায় রেললাইন নির্মাণ
জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্রিজ-কালভার্ট স্থাপনের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রগাধিকার প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারি-কক্সবাজার পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি দেখতে সরেজমিন চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শন করেছেন রেল মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম এমপি। বর্তমানে প্রকল্পের অধীনে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন অংশে ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় দৃশ্যমান হচ্ছে রেললাইন নির্মাণ কাজ। তিনি শনিবার দুপুরে সরেজমিন এলাকা ভিজিট করে চকরিয়া উপজেলা অংশের নির্মিতব্য রেললাইন নির্মাণকাজে কী কী ধরণের সমস্যা সম্ভাবনা আছে সেই ব্যাপারে অবগত হয়েছেন। বিশেষ করে রেললাইন নির্মাণকাজের ফলে চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় জনপদের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্ষামৌসুমে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি এবং অতিবৃষ্টিতে কোথায় এবং কি কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে সেই বিষয়ের বিস্তারিত কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের। এ সময় যেসব এলাকায় নির্মাণকাজে জমি অধিগ্রহনে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধান করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম এবং প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন রেলপথ মন্ত্রী। চকরিয়া উপজেলার নির্মাণাধীন রেললাইনের বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম, রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শামীম হোসেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনষ্ট্রাকশন অ্যান্ড কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী এবং চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল। এছাড়াও পরিদর্শনকালে রেললাইন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষে চকরিয়া- পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘পালাকাটা, সাহারবিল থেকে পহরচাঁদা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজের বর্তমান প্রেক্ষাপট পরিদর্শনকালে মন্ত্রী মহোদয়ের নজরে আনা হয়। এসব এলাকায় রেললাইনের কারণে যাতে অদুর ভবিষ্যতে কোনধরণের সমস্যা তৈরি না হয় সেইজন্য প্রয়োজন অনুপাতে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে বলেও মন্ত্রীকে জানানো হয়। কারণ রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় প্রয়োজন অনুপাতে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ কর নির্মাণ না করায় বর্ষামৌসুমে উপজেলার বশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিশাল এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তাতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। এ সময় রেলমন্ত্রী সুজন সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন।এরআগে শুক্রবার কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হিলটপ সার্কিট হাউজ সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত দোহাজারি-কক্সবাজার ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসার। এ সময় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় রেলমন্ত্রী সুজন বলেছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ প্রদানের কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে। সামান্য জটিলতা কাটিয়ে বাকীদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে শিগগিরই। এজন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যথাসময়ে কাজ শেষ হলে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে সরাসরি ঢাকা-কক্সবাজার রেল চলাচল শুরু হবে। এই রেলপথ নির্মাণ শেষ হলে পাল্টে যাবে কক্সবাজারের চিত্র। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে আমূল পরিবর্তন। এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে সরকার।