জিয়াবুল হক, টেকনাফ :
মেজর সিনহা হত্যার ঘটনার পর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান না থাকার সুুুযোগে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুরোদমে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে টেকনাফের অন্যতম ইয়াবার আস্তানা সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া-কাটাবনিয়া পাড়া এলাকার তালিকাভুক্ত ও তালিকার বাহিরের অনেক ইয়াবা গডফাদাররা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে এসে মিয়ানমার থেকে বড় বড় ইয়াবার চালান পাচার করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। এমনকি কচুবনিয়া-কাটাবনিয়া সমুদ্র সৈকত রাত হলে এই ইয়াবা গডফাদারদের দখলে থাকে। সেই সমুদ্র সৈকতে ইয়াবা গডফাদারদের সহযোগী ছাড়া অন্য কাউকে দেখলে স্থানীয় প্রশাসনের দালাল বলে হেনস্তা ও মারধর করে। ইয়াবা গডফাদারদের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও মামলা করতে সাহস করেনা। সাবরাং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার অলি-গলিতে ইয়াবা গডফাদারদের আনাগোনা বেড়েছে। ফলে মিয়ানমার ঘেষা টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা প্রতিরোধ করতে স্থানীয় প্রশাসনের সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়,টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া-কাটাবনিয়া জেলে ঘাটকে ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত নাফনদী-বঙ্গোপসাগর পয়েন্ট ব্যবহার করে ইয়াবা প্রবেশ করছে। সুত্রে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গত কয়েক বছরে বন্দুকযুদ্ধে দুই শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হলে এলাকার গডফাদাররা আত্মগোপনে চলে যায়।
মেজর সিনহার হত্যাকান্ডের পর থেকে আতœগোপনে থাকা ইয়াবার গডফাদাররা এলাকায় এসে বর্তমানে জেলে ঘাটকে ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগরের সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার করছে। ইয়াবা পাচারকারীরা হলো টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার মুজাফ্ফরের পুত্র গুরা মিয়া, কবির আহমদ প্রকাশ জক কবিরের পুত্র মো.আমিন (৩২), মৌলভী জিয়াবুল হক (৪০), ছলিমের পুত্র গরু ব্যবসায়ী মাজেদ (৩৬), আব্দু শরিফের পুত্র রেদোওয়ান (২৮), গরু ব্যবসায়ী আব্দুল হকের পুত্র রশিদ আহমদ (৪৫), সাইফুল ইসলাম (৩০) লাল বানুর পুত্র জাবের আহমেদ (৩৮), শাকের আহমদ, রফির নাতি আব্দুল্লাহ (৩০), সৈয়দ আলীর পুত্র মনজুর (২৭), সিদ্দীকের পুত্র মনসুর, কাটাবনিয়া পাড়া এলাকার কালা পুতুর পুত্র আব্দুল মোনাফ (৩১)। নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের পয়েন্টকে ব্যবহার করে ইয়াবা মিয়ানমার থেকে পাচার করে তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলার ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবনিয়া কচুবনিয়া জেলে ঘাটকে ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত ইয়াবা আসছে। সেই কারনে এলাকার যুব সমাজ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে যাচ্ছে।স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারনে এলাকার যুব ও ছাত্র সমাজ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী ও তাদের নিয়ন্ত্রণকারীদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।এব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ সার্কেলের পরিদর্শক জিল্লুর রহমান বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা যতই বড় শক্তিশাল হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবনিয়া-কচুবনিয়া এলাকায় এই জেলে ঘাটের ব্যাপারে অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এবিষয়ে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান (পিএসসি) জানান, সাবরাং ইউনিয়নের বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের ২ বিজিবি সদস্যরা রাতদিন পরিশ্রম করে প্রতিনিয়ত ইয়াবা আটক করতে সক্ষম হচ্ছে। মাঝে মধ্যে পাচারকারীরা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে সুকৌশলে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এই এলাকার জেলে ঘাটগুলোকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ পেলে পাচারকারীরা যতই প্রভাবশাল হোক তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।