নিজস্ব প্রতিনিধি, উখিয়া :
দেশের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ইনানীর পর্যটন পরিবেশ বিপন্ন হতে চলেছে। যদিও বা সৌন্দর্যের আর্কষণে বিমোহিত করায় বৃহত্তর পর্যটক সেদিকে নজর ফেলার অবকাশ পাচ্ছে না। তবে পরিবেশবাদী সচেতন মহল এটাকে ভিন্ন চোখে দেখছে। তারা বলছেন, পর্যটন পরিবেশ সমুন্নত রাখতে প্রশাসনকে আরো আন্তরিক হয়ে নজরদারী বৃদ্ধি করতে হবে। তা না হলে পর্যটন পরিবেশের মারাতœক অবনতি হতে পারে। ইনানী পর্যটন স্পট ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউনের গ্যাড়াকলে পড়ে বিপর্যস্ত মনমানসিকতার আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যে মানুষ পর্যটন স্পটে ছুটে আসে। কিন্তু এখানে পরিবেশের অবনতি লক্ষ্য করে মনটা বিষণœতায় ভরে যায়। কুমিল্লা থেকে আসা পর্যটক অলিউল ইসলাম পেশায় একজন ব্যাংকার। তার ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ইনানীর সৌন্দর্যের গল্প বিভিন্ন মিডিয়া ছাড়াও মানুষের মুখে মুখে আত্মপ্রকাশ হচ্ছে। সেখানে এসব আবর্জনা পর্যটনের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় পরিবেশবাদী যুবক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পর্যটন এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীচ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপালনে তাদের অবহেলার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিচ কর্মী নাজিম উদ্দিন, বেলাল উদ্দিন ও আবুল মনজুরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, স্থানীয় ডাব বিক্রেতারা তাদের বিক্রিত ডাবের খোসা গুলো বিচে নামার অংশে বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে। এনিয়ে তারা প্রতিবাদ করলেও কোন কাজ হয়নি। বিচ কর্মীরা পর্যটন স্পটে ডাবের খোসা রেখে পর্যটনের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য ইজারাদারকে দায়ী করেন।
ইনানী পর্যটন স্পটের ইজারাদার মোজাম্মেল হক লিটন জানায়, বীচ ও মেরিন ড্রাইভের সংযোগ সড়ক নির্মাণকালে বিচের নামার অংশ বিশেষে বিশালাকার খাদের সৃষ্টি হয়েছিল। ওই খাদটি ভরাট করার জন্য অন্যান্য বর্জ্য ছাড়া শুধুমাত্র ডাবের খোসাগুলো রাখার জন্য বলা হলেও তা কিছুদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ডাব বিক্রেতারা ও পর্যটক ক্রেতা সাধারণ ডাবের খোসা যথাস্থানে ফেলা অব্যাহত রাখায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, অবিলম্বে ডাবের খোসা গুলো অন্যত্রে স্থানান্তর করা হবে। ইনানী ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. মিজান জানায়, ইনানী বীচের পর্যটন পরিবেশের যেন কোনরূপ বিঘœ সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে পর্যটন পুলিশ দিনরাত পরিশ্রম করছে। তিনি বলেন, কর্মস্থলে যোগদান করার পর থেকে ছিচকে চোর, টোকাই ও পকেটমারদের ধরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে এখন পর্যটকদের মালামাল চুরি চামারির ঘটনা ঘটছে না। তবে যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনা, মলমূত্র প্রভৃতি পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকান্ড বিভিন্ন স্পটে দেখা যাচ্ছে। যা পর্যটক এলাকার জন্য কোন ভাবে কাম্য নয়। তিনি এব্যাপারে স্থানীয়দের সহযোগীতা কামনা করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা বিচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের সুবিধার্থে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীতে পর্যটন স্পটের উন্নয়নের জন্য বৃহত্তর পরিসরে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে। তা হলে এখানে অধিকতর পর্যটকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা সহ পর্যটন পরিবেশ উপভোগ করার সুযোগ পাবে।