রাজু কুমার দে, মিরসরাই :
মিরসরাই উপজেলায় এ বছর বিভিন্ন প্রজাতির ডালের চাষ হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদন কম হয়েছে বলে জানান চাষিরা। ফলে অনেক চাষি ডাল চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া লকডাউন থাকায় উৎপাদিত ডাল বিক্রি করতে পারছে না তারা।
মিরসরাই কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ডাল চাষ হয়েছে। তারমধ্যে মুগ-২৮০০ হেক্টর, ফেলন-২৫০০ হেক্টর, খেশারী-৭০০ হেক্টর, মসুর-৮০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২শ মেট্রিক টন। কিন্তু এই বছর যথাসময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন কম হয়েছে বলে দাবি করেন চাষিরা।
উপজেলার ২ নম্বর হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের ডাল চাষি দীপক দে জানান, তিনি ১৮ শতক জমিতে ফেলন ডালের চাষ করেছেন। জমি চাষ, বীজ বপন ও কিটনাশকসহ প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন ভালো হয়নি। এছাড়া লকডাউনের কারণে তাদের উৎপাদিত ডাল বিক্রি করতে পারছে না বলে জানান তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে কৃষকরা জমিতে থেকে ডাল তুলে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি গোটা মুগ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, ফেলন ৬০-৭০ টাকা, খেসারি ৪৫-৫৫ টাকা, মসুর ৫৫-৬০ টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে উপজেলার মিঠাছরা বাজাওে ডাল কিনতে আসা বেপারি নুরুল আজম জানান, তিনি ১৫ এপ্রিল সকালে অনেক কষ্টে লকডাউনের মধ্যে ট্রাকে করে মিঠাছরা বাজারে এসেছেন ডাল কিনতে। প্রত্যেক বছর মিঠাছরা বাজার থেকে ডাল কিনে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করেন। কিন্তু গুটি কয়েক চাষি ডাল নিয়ে এলেও লকডাউনের কারণে সিংহভাগ আসতে পারেনি। যারা এসেছে তারাও কাঙ্খিত পরিমাণ ডাল আনতে পারেনি।
খৈয়াছরা ইউনিয়নের মসজিদ্দা গ্রামের বিপুল দাশ জানান, তিনি চলতি বছর ৬০ শতক জমিতে মুগ, কলাই, ভেল্লি ডালের চাষ করেছেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর তার জমিতে ভেল্লি ও মুগ ডালের ফলন ভালো হয়নি।
উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম জানান, ভৌগোলিক দিক থেকে মিরসরাই বিভিন্ন প্রকার শস্য উৎপাদনের উপযোগী স্থান। তবে এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় ডালের ফলন কম হয়েছে। তাই উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা রয়েছে।