Blog Page 2759

কক্সবাজারে একদিনেই ১৮৪ টেস্টে ২১ করোনা রোগী শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে ৩ রোহিঙ্গাসহ ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

শুক্রবার (১৫মে) ১৮৪ জনের স্যাম্পল টেস্টের মধ্যে তাদের রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ পাওয়া গেছে। এছাড়া রামু’র ২ জন পুরাতন করোনা রোগীর ফলোআপ রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ হয়েছে।

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক (ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ) ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার (১৫ মে) ‘পজেটিভ’ শনাক্ত হওয়া ২১ জনের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ১ জন, চকরিয়া উপজেলায় ১৫ জন, পেকুয়া উপজেলায় ১ জন, কুতুবদিয়ায় ১ জন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ৩ জন।

এ নিয়ে কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো ১৫০ জন।

সেখানে চকরিয়া উপজেলায় ৫২ জন, কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৩৬ জন, পেকুয়া উপজেলায় ২১ জন, মহেশখালী উপজেলায় ১২ জন, উখিয়া উপজেলায় ১৪ জন, টেকনাফ উপজেলায় ৭ জন, রামু উপজেলায় ৪ জন, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১ জন এবং রোহিঙ্গা শরনার্থী ৪ জন। কুতুবদিয়া উপজেলায় ১ জন করোনা ভাইরাস জীবাণু শনাক্ত করা হলো।

কক্সবাজারে করোনা শনাক্ত একজন মারা গেছেন। তিনি রামু উপজেলার কাউয়ার খোপ ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ার খোপ গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহর স্ত্রী।

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৩ জন করোনা রোগী।

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

বাসস :

আজিমপুর কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে বাবার কবরে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
দাফনের আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় তার ছেলে আনন্দ জামান, ভাই আক্তারুজ্জামানসহ পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়রা অংশগ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাংলা একাডেমির আজীবন সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতা, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং প্রোস্টেটের সমস্যার পাশাপাশি শেষ দিকে তার রক্তেও ইনফেকশন দেখা দিয়েছিল।

অসুস্থতা বাড়তে থাকায় গত ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ মে তাকে নেয়া হয়েছিল ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষাসংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী, সংবিধানের অনুবাদক, দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবর্তী মানুষ।
জাতির বিবেকসম এ মানুষটি ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বশিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন আনিসুজ্জামান। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।

এই ভূখন্ডে ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদবিরোধী নানা আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত গণআদালতে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের তিনি সদস্য ছিলেন। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে তার গবেষণা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।

আনিসুজ্জামান শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। প্রবন্ধ গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। শিক্ষায় অবদানের জন্য তাকে ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তাকে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পদক প্রদান করা হয়। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।

এছাড়া, তিনি ১৯৯৩ ও ২০১৭ সালে দুইবার আনন্দবাজার পত্রিকা কর্তৃক প্রদত্ত আনন্দ পুরস্কার, ২০০৫ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট. ডিগ্রি এবং ২০১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী পদক লাভ করেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
আনিসুজ্জামানের রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য রচনাবলির মধ্যে রয়েছে- ‘মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য’, ‘স্বরূপের সন্ধানে’, ‘পুরোনো বাংলা গদ্য’, ‘আঠারো শতকের বাংলা চিঠি’, ‘কালনিরবধি’, ‘বিপুলা পৃথিবী’, ‘আমার একাত্তর’, ‘স্মৃতিপটে সিরাজুদ্দীন হোসেন’, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্মারকগ্রন্থ’, ‘নারীর কথা’, ‘মধুদা, ফতোয়া’, ‘ওগুস্তে ওসাঁর বাংলা-ফারসি শব্দসংগ্রহ’ ও আইন-শব্দকোষ।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অলক্ত পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও ডিগ্রিতে ভূষিত হয়েছেন।

জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ ও বৃদ্ধের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ সদস্য নাইমুল হক (৪১) ও সলিল বিশ্বাস (৭৫) মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত নাইমুল করোনা উপসর্গ নিয়ে এবং সলিল বিশ্বাস কোভিড-১৯ পজেটিভ আসায় জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক জামাল মোস্তফা।
তিনি বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) দুপুরে একজন পুলিশ সদস্য এবং বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সলিল বিশ্বাস নামে ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন। সলিল বিশ্বাসের কোভিড-১৯ পজিটিভ আসায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এছাড়া পুলিশ সদস্যটি গতকাল (বৃহস্পতিবার) জ্বর-সর্দিসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। আজ সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই দুপুর ১২ টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা তার নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইডিতে ( াংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস) পাঠিয়েছি।’
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০ জন নারী-পুরুষ। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ২০ জনের বেশি। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২৪ জন রোগী।

নিম্নচাপে পরিণত হলো লঘুচাপটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নিম্নচাপে পরিণত হলো সেই লঘুচাপ। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি আজ সকালে নিম্নচাপে রুপ নিয়েছে। এর প্রভাবে গভীর বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়া বইছে এবং এটি ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক নম্বর বিশেষ বুলেটিনের তথ্যমতে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হচ্ছে। আজ দুপুর ১২টায় নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা থেকে ১৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা খেকে ১২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে ঘনীভূত হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে বলে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে চলতি মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা একাধিক নিম্নচাপ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। এসব নিম্নচাপ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনাও বলা হয়েছে। বছরের এসময়ে সাগরে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে। এপ্রিল-মে ও সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম।

করোনাভাইরাস: দেশে আক্রান্ত বিশ হাজার ছাড়ালো, মৃত্যু ২৯৮ জন

আনোয়ারায় করোনা আক্রান্তের দাফন করা হচ্ছে

সুপ্রভাত ডেস্ক

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ২০২ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা এ পর্যন্ত দিনের হিসেবে সর্বোচ্চ।

আর এ সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫ জন, ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন ২৯৮।

নিহতদের মধ্যে পুরুষ সাত জন ও মহিলা আটজন।

অন্যদিকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২০ হাজার ৬৫।

নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৯ জন সুস্থ হয়েছে এবং এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৩ হাজার ৮৮২ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ৫৮২ টি নমুনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্তের এসব ফলাফল পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৪১টি প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনে ১০,০০০ নমুনা পরীক্ষার টার্গেট করা হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি।

কর্মকর্তারা বলেছেন, নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে লোকবলের সমস্যার কারণে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশে এই পরীক্ষা শুরুর পর দুই মাসেও এর সংখ্যা বাড়াতে না পারলে সংক্রমণের সঠিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে না।

বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের কথা জানানো হয় ৮ই মার্চ। তবে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয় ১৮ই মার্চ।

 

ধপ করে চারিদিকে অন্ধকার

আবদুল মান্নান

১৪ মে বুহষ্পতিবার । 4:55 pm!! RIP Abba! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও আমার মোবাইলে আনন্দের ক্ষুদে বার্তা। আনন্দ জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের একমাত্র ছেলে । বাবার মৃত্যু সংবাদটা এই ভাবেই দিল। মনে হল ধপ করে সব বাতিগুলো নিভে গেল, চারিদিকে সব অন্ধকার । দেশে ও দেশের বাইরে বাংলা ভাষাভাষি মানুষ যেখানেই থাকুন না কেন তারা প্রফেসর আনিসুজ্জামানকে চিনেন না তেমন কাউকে পাওয়া যাবে না । দীর্ঘদিন ভুগছিলেন বার্ধক্য জনিত রোগে । কবে বৃহষ্পতিবার রাতে জানা গেল স্যার করোনা পজিটিভ ছিল । ভর্তি হয়েছিলেন একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে । প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ও পারিবারিক ইচ্ছায়  কয়েক দিন আগে তাঁকে সিএমএইচএ ভর্তি করানো হয় । প্রধানমন্ত্রী তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ আবদুল্লাহকে নিয়োজিত করেছিলেন তাঁর চিকিৎসার জন্য । প্রফেসর আনিসুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি শিক্ষকও ছিলেন । শুধু প্রধানমন্ত্রী কেন বলি তিনি জাতির প্রগতিশীল অংশের প্রতিটি মানুষের শিক্ষক ছিলেন প্রফেসর আনিসুজ্জামন। প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা  করতেন তাঁর শিক্ষককে অসম্ভব রকমের ।  সব কিছু ছেড়ে তাঁর হাজারো গুণমুগ্ধকে ছেড়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি ছিলেন বাংলার একজন বাতিঘর। সেই বাতিঘর চিরতরে নিভে গেল । ক’দিন আগে আর এক বাতিঘর প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন । দেশটা এখন বামানে ভরে যাচ্ছে ।

প্রফেসর আনিসুজ্জামানের সাথে আমার প্রথম পরিচয় ১৯৬৯ সালে তাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র এক অনুষ্ঠানে । তখন আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র । একই সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন রিডার হিসেবে (সহযোগী অধ্যাপক)। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর যোগ দেয়ার পিছনে কারণ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রমোশন পাওয়ার সহজে সুযোগ হচ্ছিল না কারণ কোন পোস্ট ছিল না । তখন একটা পোস্ট সৃষ্টি করা কত দুরুহ ছিল তা আজকের প্রজন্মকে বুঝানো যাবে না । আর আপগ্রেডেশন শব্দটি ছিল অজানা । ১৯৭৩ সালে আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিলে তাঁর সাথে আমার  ঘনিষ্ট হওয়ার সুযোগ হয় । তিনি এত সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও আমাদের মতো এত জুনিয়রদের কাছে টেনে নিতে পারতেন তা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর আনিসুজ্জামান যোগ দেয়ার পর তিনি শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়কেই আলোকিত করেন নি তিনি চট্টগ্রামের সাহিত্য ও সাংষ্কৃতিক জগৎকেও সমৃদ্ধ করেছিলেন, আরোকিত করেছিলেন  । সেই সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন প্রফেসর আনিসুজ্জামান ছাড়াও সৈয়দ আলি হাসান, আবু হেনা মোস্তাফা কামাল, এখলাসউদ্দিন আহমদে, শামসুল হক (পদার্থ বিজ্ঞান), আবদুল করিম, আলমগির মোহাম্মদ সিরাজুদ্দিন, মোঃ ইউনুস, রশিদ চৌধুরী, মুরতাজা বশির, দেবদাস চক্রবর্তি, মোহাম্মদ আলি, আলি ইমদাদ খান প্রমূখরা । এঁদের অনেকেই আজ আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তাঁরা আমাদের প্রজন্মের জন্য এক একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সহ আরো বেশ ক’জন সিনিয়র শিক্ষক ক্যাম্পাস ছেড়ে সপরিবারে ভারতে চলে যান । পথে তাঁরা এক রাতের জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন গহিরা গ্রামের দানবীর নূতন চন্দ্র সিংহের বাড়িতে । । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এক রাতের আশ্রয় দেয়ার অজুহাতে রাউজানের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী নিজ হাতে নূতন চন্দ্র সিংহকে  গুলি করে হত্যা করে । প্রফেসর আনিসুজ্জামান মানবতা বিরোধী অপরাধ  ট্রাইবুনালে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার চলাকালিন সময়ে সেখানে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময় তিনি প্রবাসী সরকারের পরিকল্পনা কমিশনে একজন সদস্য হিসেবে যোগ দেন, দেশ ত্যাগী শিক্ষকদের একটি জোট গঠন করার জন্য চেষ্টা করেন।

দেশ স্বাধীন হলে প্রফেসর আনিসুজ্জামান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার শিক্ষক হিসেবে ফিরে আসেন । তখন হতেই তিনি হয়ে উঠেন সকলের আনিস স্যার । কোন অনুষ্ঠান হলে হতে পারে তা সাহিত্য বিষয়ক অথবা কোন সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান, আনিস স্যার অবধারিত ভাবে তাতে প্রধান অতিথি । তিনি আমাকে অসম্ভব স্নেহ করতেন । মনে করতেন কোন একটি কাজ অন্যকে দিয়ে না হলেও আমাকে দিয়ে হতে পারে । হোক না তাঁর গুরু প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক স্যারের জন্য শুঁটকি কেনা অথবা রেল ষ্টেশনে গিয়ে কোন একটা জরুরী চিঠি রেল ডাক সার্ভিসে দিয়ে আসা । একবার জানালেন তিনি জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে একটি আন্তজার্তিক সেমিনার করবেন । আমাকে ডেকে বললেন চট্টগ্রামেতো এই রকম সেমিনার করার কোন অডিটোরিয়াম নেই, কোথায় করা যেতে পারে? বললাম চট্টগ্রামের আমেরিকান সেন্টারে একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম আছে, তিনি অনুমতি দিলে আমি কথা বলে দেখতে পারি । পরিচালকের সাথে আমার ভাল জানা শোনা আছে । তাঁর অনুমতি নিয়ে পরিচালকের সাথে কথা বলতেই তিনি রাজি হয়ে গেলেন । আরো কিছু জুনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে সেই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল অত্যন্ত সুচারু ভাবে ।  বাংলা বিভাগ আর আমাদের বিভাগ ছিল পাশাপাশি । হঠাৎ দেখি সেমিনার শেষ হওয়ার পর দিন  বেলা দশটার দিকে স্যার আমাদের কক্ষে এসে হাজির । আমি কিছুটা অবাক । তিনি  বললেন ‘মান্নান সম্মেলনের আয়োজন ও সব কিছু দেখে সকলে খুশি । আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছি’। এক অজ্ঞাত কারণে তিনি আমাকে সব সময় আপনি করে কথা বলতেন । অনেকবার বলেছি আমাকে তুমি বলতে কারণ আমি তাঁর আপনি সম্বোধনে অস্বস্তি বোধ করতাম । তিনি কখনো আমাকে তুমি বলতে রাজি হন নি ।

১৯৮৫ সালে খবর রটলো স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ছোট খাট একটি আন্দোলন গড়ে তুললেন  এই সিদ্ধানেতর বিরুদ্ধে ।  স্যারকে কিছুতেই ঢাকা যেতে দেবেনা  না । পরবর্তিকালে এই আন্দোলনে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই  না যোগ দিল শিক্ষক আর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও । যাবার দিন ক্ষণ যখন ঘনিয়ে এলো তখন আন্দোলন তাঁর ক্যাম্পাসের বাস ভবন পর্যন্ত পৌঁছে গেল । একদিন এক ছাত্র বোতল ভর্তি কেরোসিন নিয়ে স্যারের বাসার সামনে গিয়ে বললেন স্যার মত না পাল্টালে সে আত্মহুতি দেবে । স্যার ভীতর হয়ে এসে তাকে নিভৃত করলেন ।

আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে ১৯৮৫ সালের ১৭ আগষ্ট তিনি রাতের ঢাকা মেইল যোগে ঢাকা যাবেন বলে  যখন সপরিবারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে উপস্থিত হয়েছেন তখন স্টেশনে তাঁর ছাত্র-ছাত্রী, গুণগ্রাহী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপচে পড়েছে । আমরা কয়েকজন তাঁর মালপত্র তাঁর বগিতে তুলে দিতে সাহায্য করলাম । তিনি তখন স্টেশনে সকলের কাছ হতে বিদায় নিচ্ছেন । বললেন তিনি নিয়মিত আসবেন । কেউ কেউতো অনেকটা বিলাপ করে কাঁদছেন । এমন দৃশ্য কদাচিৎ দেখা যায় । সময় ঘনিয়ে এলে ট্রেনের হুইসেল বাজলো । স্যার ট্রেনে উঠলেন । আমি ছিলাম সেই চলন্ত ট্রেন হতে নামা শেষ ব্যক্তি । এক সময় ট্রেনখানি রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল । নিরবে আমার চোখ হতে দু’ফোটা অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পরলো ।

১৯ আগস্ট ১৯৮৫ সালে আনিস স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রফেসর হিসেবে যোগ দেন । এর পর যখনই ঢাকা এসেছি তখনই স্যার ও ভাবির সাথে দেখা করেছি। ভাবির পিড়াপিড়িতে অনেক দিন খেয়ে এসেছি । তখন তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কোয়ার্টারে থাকতেন । ২০০৩ সালের ৩০ জুন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অবসর নিয়ে প্রথমে গুলশানে পরে মহাখালিতে বসবাস শুরু করেন । অন্তত প্রতিমাসে একবার স্যারের বাসায় যাওয়া হোত । মাঝে মধ্যে তিনি কোন একটা কিছু তথ্যের জন্য আমাকে ফোনও করতেন । হাসপতালে  হওয়ার ক’দিন আগেও তাঁর বাসায় গিয়েছি । বেশ দুর্বল । ভাবি জানালেন কিছু খেতে পারেন না । স্যারের একটা অভ্যাস নিয়ে ভাবিতো বলতেনই, আমিও অনেক সময় বলতাম । স্যার কোন অনুষ্ঠানে কেউ ডাকলে না করতে পারতেন না । বলতেন এতদিন না করি নি এখন কি ভাবে না করি?

আনিসুজ্জামান স্যারের অসংখ্য ছাত্রছাত্রি ও গুণগ্রাহীকে কাঁদিয়ে তিনি আজ না ফেরার দেশে চলে গেলেন । প্রধানমন্ত্রী তাঁর আর একজন বিশ্বস্ত অভিভাবককে কয়েকদিনের ব্যবধানে হারালেন । আর দেশের প্রগতিশীল মানুষ হারালো আর একজন সদা উজ্জ্বল বাতিঘরকে । স্যার আপনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন । এই দেশ ও তার মানুষ আপনার কাছে অনেক কারণে ঋণী ।

 

লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক । ১৪ মে ২০২০

শিক্ষক থেকে জাতির বিবেক

শিক্ষাবিদ, লেখক, বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ড. আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে সমস্ত জাতি শোকাহত। চট্টগ্রামে তিনি জীবনের উল্লেখযোগ্য অংশ কাটিয়েছিলেন।  অনেকেই তাঁর সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে ড. ভুঁইয়া ইকবাল. ড. মাহবুবুল হক, আবুল মোমেন ও অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ধারণ করা হয়েছিল ফোনে। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো। স্বাক্ষাৎকার গ্রহণ: কামরুল হাসান বাদল, সহযোগী সম্পাদক, সুপ্রভাত বাংলাদেশ

তাঁর অভাব কখনো পূরণ হবার নয়

ড. ভূঁইয়া ইকবাল

গবেষক, প্রাক্তন অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়

আমি তাঁকে চিনতাম অর্ধ শতকেরও বেশি কাল ধরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ছাত্র ছিলাম। তাঁর আকর্ষণেই আমি চট্টগ্রামে এসেছি। তাঁর মত অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল মানুষের অভাব আমরা বহুদিন বোধ করব। তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। দেশের সব সংকটকালে তিনি উপযুক্ত ভূমিকা পালন করেছেন। দেশ ও জাতি তাঁর অবদানের কথা চিরকাল মনে রাখবেন। তাঁর মত গুণীর অভাব কখনো পূরণ হবার নয়।


 

ভবিষ্যত নির্মাণের অগ্রনায়ক তিনি

ড. মাহবুবুল হক

লেখক ও গবেষক, প্রাক্তন অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

আনিসুজ্জামান স্যারকে আমি ছাত্রজীবনে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি। শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন অসাধারণ। তাঁর প্রজ্ঞা, বিষয়জ্ঞান, উপস্থাপনা, বিশেষ করে জটিল বিষয়ে সরল এবং সাবলীল বাক্য উপস্থাপনা এগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে। তখন থেকেই আমি তাঁর ভক্ত। আনিস স্যার যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন যাওয়ার পথে তিনি কুমিল্লায় দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছিলেন। তখন রেলওয়ের এক কর্মকর্তা আলী সাহেবের বাসায় এসে উঠেছিলেন চট্টগ্রামে। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। সেই পরিবেশে তিনি অসুস্থ অবস্থায় আমাদের সাথে যে আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছিলেন সেটাও আমাদের মুগ্ধ করেছে। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি তাঁকে শিক্ষক হিসেবে পাই। শিক্ষক হিসেবে তিনি যে শুধু ছাত্রদের পাঠ দিতেন তেমন নয়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা উন্নয়ন ও নানা কাজকর্মে নেতৃত্ব দিয়েছেন।  শিক্ষকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রতিকূল পরিবেশে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন এবং আগরতলায় তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছি। তাঁর গাড়ি নিয়ে তিনি আগরতলায় গিয়েছিলেন। সেই গাড়িতে চড়ার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের কাজে। পরে তিনি কলকাতায় চলে যান এবং জাতীয় কার্যক্রমে অংশ নেন সেগুলোর কথা আমরা সবাই জানি।

আনিস স্যার তাঁর সারাজীবনে সবসময় গণমুখী ও মানবতাবাদী ভাবনায় ভাবিত ছিলেন। তিনি সাংস্কৃতিক বহুত্বে বিশ্বাস করতেন এবং বহুত্বের ব্যাপারটা আমাদের জানা ছিল না। সেটার বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক পরিম-লে প্রবন্ধ লিখেছেন, বাংলা ভাষায়ও প্রবন্ধ লিখেছেন। সাংস্কৃতিক বহুত্বের মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং সবাই মিলে মানবসমাজের বাঁচার যে আকাক্সক্ষা সেটা তিনি তুলে ধরেছেন এবং সেটাকে একটি আন্দোলনে রূপ দেওয়ার জন্য নানাভাবে কাজ করেছেন।

তিনি লেখক ও গবেষক ছিলেন। লেখা এবং গবেষণায় তিনি অসাধারণ পা-িত্যের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি এই বাঙালি মুসলমানের পত্র-পত্রিকায় সাধনার বিষয়ে মুসলিম বাংলা সাময়িকপত্র বই লিখে গবেষণা কিভাবে করতে হয় এবং এই গবেষণার মাধ্যমে কিভাবে তত্ত্ব অনুসাধন করতে হয় ও তত্ত্বনিষ্ঠ হতে হয় সেটা তিনি আমাদের বিশদভাবে দেখিয়েছেন।

তাঁর অসাধারণ কাজগুলো হচ্ছে আত্মজীবনী, স্মৃতিচারণমূলক রচনা। তিনি আমার একাত্তর বইটা লিখেছেন এবং এরপর তিনি আর দুটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ লিখেছেন। বইগুলোর ভাষা, সরল উপস্থাপনা, বিষয়জ্ঞান, তত্ত্বনিষ্ঠা অসাধারণ এবং সুপাঠ্য। সবমিলিয়ে বলা যায় আনিসুজ্জামান স্যার একজন বিশাল মাপের মানুষ। তাঁর স্বীকৃতি তিনি পেয়েছেন। দেশে-বিদেশে নানা পুরস্কার পেয়েছেন। এসব পুরস্কারের ভেতর দিয়ে তিনি কখনো আত্মগড়িমা প্রকাশ করেন নাই। কখনো এসব পুরস্কারের কথা নিজে উল্লেখ করতেন না। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও সৌজন্যপরায়ন ছিলেন। তাঁর বাসায় আমরা যতবার গেছি তাঁর ও ভাবীর সৌজন্যে আমরা মুগ্ধ হয়েছি এবং তাঁর পুত্র কন্যারাও তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। এরা সরল, বিনয়ী ও সহজ মানুষ।

আনিস স্যার জীবনে আরো অনেক কাজ ও লেখালেখি করতে পারতেন। কিন্তু জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় নানা সমস্যার মধ্যে তিনি যেভাবে হাল ধরেছেন। বিশেষ করে সাম্প্রদায়িকতা শক্তির যখন উত্থান ঘটেছে তার বিরুদ্ধে তিনি নিজে যেমন মাঠে নেমেছেন সেটা সবাইকে বিস্মিত করে। সময়ের তিনি একজন সাহসী যোদ্ধা এবং ভবিষ্যত নির্মাণের একজন অগ্রনায়ক তাকে আমরা বলতে পারি।

আমি প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর শোকে সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার নাই। কারণ এই প্রতিকূল পরিবেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসায় তিনি উদ্বেলিত হতেন। কিন্তু সেখানে আমরা সবাই বিচ্ছিন্ন। সবাই এককভাবে তাঁর কথা ভাবছি। সবাই সম্বলিতভাবে তাঁর জন্য ভাবার সুযোগ পাচ্ছি না। কারণ এক মহামারি কবলে পড়ে আমরা সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি। তবুও আমি ব্যক্তিগতভাবে স্যারের প্রতি পরম শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।


 

উনি একজন বিরল মানুষ

আবুল মোমেন

কবি, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

আনিসুজ্জামান স্যারের সাথে আমার স্মৃতি এতে বেশি যে, তাকে হারানোর মুহূর্তে সবকিছু গুছিয়ে বলা সম্ভব নয়। ওনার সঙ্গে তো এমনিভাবে পারিবারিক যোগাযোগটা ছিল। কিন্তু ’৬৭ সালে তিনি যখন চট্টগ্রাম এলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে তারপর থেকে আমরা বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজে এবং আরও পরে গিয়ে আন্দোলনের কাজে একসঙ্গে যুক্ত ছিলাম। উনি প্রথম আমাদের সথে ফিল্ম সোসাইটিতে যুক্ত হন। সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। আমি ছিলাম সম্পাদক। সেই সুবাদে তাঁকে মাঝেমধ্যে শহরে আসতে হতো। ছোটখাটো মিটিংয়েও তিনি নিজে গাড়ি চালিয়ে চলে আসতেন। তারপরে ফুলকি যখন করি ’৭৮ সন থেকে তিনি চট্টগ্রামে থাকা অবদি এর সভাপতি ছিলেন। এরপরে আমরা একটি ট্রাস্ট করেছিলাম বিদ্যাসাগর রোকেয়া শিক্ষা ট্রাস্ট। এটাতে তিনি মৃত্যুপর্যন্ত সভাপতি ছিলেন।

এর বাইরে ওনার সম্পর্কে বলব, উনি একজন বিরল মানুষ, সবসময় একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে তিনি তার অবস্থান থেকে কাজ করেছেন। তিনি খুব কৃতী ছাত্র, সফল অধ্যাপক এবং অত্যন্ত খ্যাতিমান গবেষক। প-িত মহলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আছে। এটা সত্ত্বেও তিনি দেশের সংস্কৃতকর্মী, লেখক, সংগঠকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং যারা তার ঘনিষ্ঠ পরিচিত তাদের পরিবার-পরিজন-সন্তান সবার খোঁজখবর রাখতেন। প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে দাম দিতেন। এরকম একজন মানুষ কিন্তু পাওয়া খুবই মুশকিল যিনি সর্বোচ্চ সম্মান, এমনকি ভারত রাষ্ট্রের সম্মাননা অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজেও তিনি ব্যস্ত থেকেছেন। তিনি সংবিধানের বাংলাভাষ্য রচনা করেছেন। তিনি প্রথম শিক্ষা কমিশনে ছিলেন। এছাড়া বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু আবার বন্ধুবৎসল, আড্ডাপ্রিয় মানুষ হিসেবে তাঁকে আমরা পেয়েছি। আর বাংলাদেশের যে অভিযাত্রা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ সেখানে কিন্তু তিনি তাঁর অবস্থানটি সঠিক ও সুদৃঢ় রেখেছেন। তাঁর একটি অবস্থান স্পষ্ট ছিল। কিন্তু এজন্য বিরোধিতার তিক্ততা, বৈরিতা, ক্ষোভ তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। তার ব্যক্তিত্বের প্রসন্নতা এবং ¯িœগ্ধতা বরাবর বজায় ছিল। তাঁর শূন্যতা অপূরণীয়, নির্দ্ধিধায় বলা যায়।

 


 

তিনি সমগ্র জাতির অভিভাবক ছিলেন

গোলাম মুস্তাফা

প্রাক্তন অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যু আমাদের জাতি ও দেশের জন্য আক্ষরিক অর্থে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের কৃতী অধ্যাপক ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে অধ্যাপনার বাইরেও তিনি সমগ্র জাতির অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর পরিচ্ছন্ন চিন্তা, পরিণত বুদ্ধি এবং দেশ  মানুষের প্রতি তাঁর যে সহজত ভালোবাসা ছিল সেটি তাঁর সমস্ত কর্মে প্রতিফলিত হয়েছে।

তিনি বাংলা সাহিত্যে গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারার সূচনা করেছিলেন। সমাজের প্রেক্ষাপটে, সাহিত্যের বিবর্তনে এবং সাহিত্যে প্রতিফলিত জনমানুষের যে চিত্র আবিষ্কার করা যায় সেটি আনিসুজ্জামান স্যার বাংলা সাহিত্যে আমাদের দেখিয়েছেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের যে একটি বিখ্যাত গ্রন্থ আছে স্বরূপে সন্ধানে। সেখানে তিনি বাঙালি জাতিসত্তা নিয়ে আমাদের মধ্যে যে বিভ্রান্তি ও নানা ধরনের অপচেষ্টা বা অপরিকল্পনা অনেকসময় ছিল সেগুলো তিনি নিরসনের চেষ্টা করেছেন এবং তিনি বাঙালি জাতিসত্তার প্রকৃতরূপটি সেখানে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন। আমরা মনেকরি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে গবেষণার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অবদান অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের। তিনি ইতিহাসের ও সমাজের নানা বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন এবং মানুষের যে মুক্তির সংগ্রাম তার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন।

১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিসংগ্রামের সাথে যুক্ত ছিলেন। আমার মনে পড়ে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে ১৯৭১ সালের ১৫ মার্চ চট্টগ্রামের বুদ্ধিজীবীদের উদ্যোগে যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেখানে আনিসুজ্জামান সংক্ষিপ্ত অথচ অত্যন্ত মূল্যবান বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আজকের যে আন্দোলন সে আন্দোলনে জনগণ আমাদের চাইতে অনেক এগিয়ে গেছে। জনগণের কাছে আমাদের আবেদন আমরা আপনাদের সঙ্গে চলতে চাই, দয়া করে আমাদের সঙ্গে নিন। এই যে জনগণের শক্তি এবং তাদের আন্দোলনে অগ্রগামিতা এটা আনিসুজ্জামান খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং বুদ্ধিজীবীর অহমিকা বাদ দিয়ে জনগণের সংগ্রামী যে গৌরব সেটিকে তিনি স্বীকার করে নিয়েছিলেন।

আমরা জানি যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে তিনি অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন। সেটি হলো বাংলাদেশের সংবিধান বাংলাভাষায় রচনা করা। সেটি গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে পৃথিবীতে একটি মাত্র সংবিধান আছে যেটা বলা হচ্ছে বাংলা ভাষায় তার যে প্রাধান্য সেটি বজায় থাকবে। সংবিধানের ১৯২ অর্থাৎ সর্বশেষ ধারায় বলা আছে যে এই সংবিধানের একটি বাংলা পাঠ ও একটি ইংরেজী পাঠ থাকবে। বাংলা ও ইংরেজী মধ্যে কোনো বিরোধ উপস্থিত হলে বাংলা পাঠই প্রাধান্য পাবে। এটি সংবিধান রচনার ইতিহাসে একটি বড় ধরনের অর্জন বলে আমরা মনে করি। বিচারপতি মো. হাবিবুর রহমান লন্ডনের একটি আলোচনা সভায় বলেছিলেন এই যে বাংলায় সংবিধান প্রণয়ন হলো। এটি আমাদের বিচার বিভাগ ও সংবিধান চর্চার সংস্কৃতিতে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের অবদান এই সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ করা যাবে না। কিন্তু তাঁর অবদানকে যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে আমরা দেখব তিনি বিদ্যাচর্চার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি মানুষের মুক্তির কথা, দেশের কল্যাণের কথা বলেছেন। এখানেই আনিসুজ্জামানের অনন্যতা।

শিল্পপুলিশসহ আক্রান্ত ৬১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
টানা তিনদিন পর কিছুটা কমলো করোনা রোগীর সংখ্যা। গত সোমবার ৬৫ জন, মঙ্গলবার ৮৫ জন ও বুধবার ৯৫ জন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার শনাক্ত হলো ৬১ জন। এদের মধ্যে তিনজন শিল্পপুলিশও রয়েছেন। এর আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল দপ্তরের সদস্য করোনায় আক্রান্ত হলেও শিল্পপুলিশের কেউ আক্রান্ত হয়নি। এবার তারাও আক্রান্ত হলো। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে ৬১ জন শনাক্ত হওয়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৭৫ জন। এদের মধ্যে মারা গিয়েছে ২৮ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ৯৩ জন।
এদিকে গতকাল চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের করোনা শনাক্ত হওয়া ৬১ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৫১ জন ও উপজেলার ১০ জন। উপজেলার ১০ জনের মধ্যে পটিয়ার ৬ জন, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকু-, বোয়ালখালী ও বাঁশখালীর একজন করে চার জন রয়েছেন।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে জানা যায়, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট বিআইটিআইডিতে ২৫৭টি নমুনার মধ্যে ৩৩টি পজিটিভ পাওয়া গেছে। এই ৩৩টি পজিটিভের মধ্যে চট্টগ্রামের ২৯টি ও অন্যজেলার চারটি। চট্টগ্রামের ২৯টির মধ্যে মহানগরীর ২৬টি ও উপজেলার তিনটি (সীতাকু-, বোয়ালখালী ও বাঁশখালীর একজন করে)। মহানগরীর ২৬টির মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যোল কলেজ হাসপাতালের ৪০ বছরের এক নারী, শিকলবাহার ৩৫ বছরের যুবক, শিল্পপুলিশের ৩৫, ১৯ ও ১৯ বছর বয়সী তিন সদস্য, পতেঙ্গা খেজুরতলার ৪২ বছরের পুরুষ, বায়েজীদ বার্মা কলোনির ২১ বছরের যুবক, ইপিজেড এলাকার ৩২ বছরের যুবক, অক্সিজেনের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ, অক্সিজেন কালাপোল এলাকার ৩৪ বছরের যুবক, পাথরঘাটার ৫০ বছর বয়সী নারী, পতেঙ্গা কাঠঘরের ৩৫ বছর বয়সী যুবক, নতুন চান্দগাঁও থানা এলাকার ৬৫ বছরের বৃদ্ধ, ফিরিঙ্গীবাজারের ৫৩ বছর বয়সী বৃদ্ধ, ফৌজদারহাটের ৩০ বছর বয়সী নারী, আলকরণের ৪২ বছরের পুরুষ, বন্দর এলাকার ১৪ বছরের কিশোর, ফিল্ড হাসপাতালের ১৯ বছরের যুবক, চশমা হিলের ৫৫ বছর বয়সী পুরুষ, ফিরোজশাহ কলোনীর ৩৮ বছর বয়সী পুরুষ, আলকরনে একই পরিবারের তিন সদস্য, এদের মধ্যে ১২ বছরের কিশোরী ৪৩ বছরের নারী ও ৮৫ বছরের বৃদ্ধা রয়েছে।
অপরদিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৬৬ টি নমুনার মধ্যে ২৬টি পজিটিভ হয়েছে। এই ২৬টির মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর একজন ও রাঙ্গুনিয়ার একজন রয়েছে। এরা হলেন- নিউমুরিং এলাকার ১৮ বছর বয়সী যুবতী, ফিরঙ্গিবাজারের ৭১ বছর বয়সী পুরুষ, হালিশহরে ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ, ডবলমুরিং এলাকার ৫৫ বছর বয়সী পুরুষ, লালখানবাজারের ৫০ বছর বয়সী নারী, কর্ণফুলীর ৬০ বছর বয়সী পুরুষ, চান্দগাঁও এলাকার ৪৫ বছর বয়ষী পরুষ, চমেক হাসপাতালের ৩৬ বছর বয়সী এক মহিলা ডাক্তার, পতেঙ্গার ৩৩ বছর বয়সী পুরুষ ও একই এলাকার ৩৭ বছর বয়সী নারী, নন্দনকানন এলাকার ৭৫ বছর বয়সী পুরুষ, চকবাজারের ২৭ বছর বয়সী এক নারী ডাক্তার, অক্সিজেন এলাকার ২৭ বছর বয়সী পুরুষ, কোতোয়ালীতে ৫২ বছর বয়সী নারী, ১৬ বছর বয়সী যুবতী ও ৪৫ বছর বয়সী নারীসহ তিনজন, গোসাইলডাঙ্গার ২৩ বছর বয়সী যুবক ও একই এলাকার ৫৫ বছর বয়সী পুরুষ, আসাদগঞ্জের ১৭ বছর বয়সী যুবতী, আগ্রাবাদের ৫৩ বছর বয়সী নারী, টেরীবাজারের ৬২ বছর বয়সী পুরুষ, কোরবানীগঞ্জের ৪৩ বছর বয়সী পুরুষ, বাকলিয়ার ৭২ বছর বয়সী পুরুষ, ৩৩ বছর বয়সী এক পুরুষ ও রাঙ্গুনিয়ার ৩৮ বছর বয়সী পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৩ মে বুধবার ৭১টি নমুনার মধ্যে ১৭টি পজিটিভ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ভিন্ন জেলার ১১টি ও চট্টগ্রামের পটিয়ার ৬ জন রয়েছে। অপরদিকে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজে বৃহস্পতিবার ৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয় সেগুলোর মধ্যে সবগুলোই নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
এদিকে আজ নতুন করে ৬১ জন করোনায় শনাক্ত হওয়ায় মোট রোগীর সংখ্যা হলো ৫৭৫ জন। এর আগে ১৩ মে শনাক্ত হয়েছিল ৯৫ জন, ১২ মে ৭৫ জন, ১১ মে ৬৫ জন, ১০ মে ৪৮ জন, ৯ মে শনিবার ১৩ জন, মে শুক্রবার ১১ জন, ৭ মে বৃহস্পতিবার ভেটেরিনারিতে ৩৮ জন ও বিআইটিডিতে ১৯ জন (কক্সবাজারে একজনসহ) করোনা শনাক্ত হওয়ায় একদিনে ৫৭ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল চট্টগ্রামে। ৬ মে ১১ জন করোনা পজিটিভ হওয়ার আগে ৫ মে সোমবারের ভেটেরিনারি রিপোর্টের ১৩ জন, ৫ মে বিআইটিআইডি এর রিপোর্টে ৯ জন (ঢাকা, কুমিল্লা ও কক্সবাজার থেকে আসা তিনজন রোগী সহ), ৪মে ১৬ জন, ৩ মে ১৩ জন, ২ মে তিনজন, ১ মে তিনজন, ৩০ এপ্রিল একজন, ২৯ এপ্রিল ৪ জন, ২৮ এপ্রিল তিনজন, ২৭ এপ্রিল নয়জন, ২৬ এপ্রিল সাতজন ( রাজবাড়ী থেকে আসে একজন), ২৫ এপ্রিল দুই জন ( ঢাকা থেকে আসে একজন), ২৪ এপ্রিল একজন, ২২ এপ্রিল তিনজন, ২১ এপ্রিল একজন, ১৩ এপ্রিল চারজন, ১৮ এপ্রিল একজন, ১৭ এপ্রিল একজন, ১৬ এপ্রিল একজন, ১৫ এপ্রিল পাঁচজন, ১৪ এপ্রিল ১১ জন, ১৩ এপ্রিল দুইজন, ১২ এপ্রিল পাঁচজন, ১১ এপ্রিল দুইজন, ১০ এপ্রিল দুই জন, ৭ এপ্রিল তিনজন, ৫ এপ্রিল একজন ও ৩ এপ্রিল একজন আক্রান্ত হয়েছিল। এরমধ্যে সাতকানিয়ার এক বৃদ্ধ একজন মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হয়েছেন, পটিয়ায় ৬ বছরের এক শিশু মারা গেছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দেড় ঘন্টার মধ্যে, সরাইপাড়া লোহারপুল এলাকার এক নারী মারা যাওয়ার পর করোনায় শনাক্ত হয়েছেন, নিমতলা এলাকার এক নারী মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হয়েছেন, সরাইপাড়া লোহারপুল এলাকায় এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হয়েছেন, সাগরিকার এক নাইটগার্ড মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হয়েছেন, মোহরার এক নারী মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হয়েছেন এবং সর্বশেষ এনায়েত বাজারের লোকটি মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হলো। এছাড়া ৬ মে পাহাড়তলী লাকী হোটেল মোড় এলাকার বাসিন্দা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এছাড়া গত ৬ মে মারা যাওয়ার পর নমুনা রিপোর্টে করোনা শনাক্ত হয়েছেন তিনজন, ৭মে বৃহস্পতিবার সাগরিকা এলাকার এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হয়েছেন। ৮মে রাতে বিআইটিআইডিতে আইসোলেসনে থাকা অবস্থায় মারা গেল ৫৫ বছর বয়সী এক পুরুষ। এছাড়া গত ১২ মে মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা গেল হাটহাজারির এক নারী। করোনা শনাক্ত নিয়ে ৩৭ নম্বর হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গতকাল ১৩ মে সকালে মারা যাওয়ার পর রিপোর্টে করোনা পজিটিভ এসেছে। এছাড়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে আরো একজন। এনিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৮ জনে দাঁড়ালো। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ৯৩ জন।

যেভাবে লড়ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

বিআইটিআইডি হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতে এক করোনাযোদ্ধা- সুপ্রভাত

শুভ্রজিৎ বড়ুয়া :
‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু, পথে যদি পিছিয়ে পড়ি কভু।’ কবিগুরু কবিতার এ বাক্য যেন রীতিমতো বলে চলছেন আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা। কেননা তাদের যুদ্ধ করতে হচ্ছে করানো আক্রান্তদের সুস্থ করার জন্য। তাদের সেবা-শুশ্রুষার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনাররা। এ কাজ করতে গিয়ে তাদের প্রথমে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হয়। এজন্য টানা আট ঘণ্টা পর্যন্ত সুরক্ষার পোশাক (পিপিই) পরে থাকতে হয়। করোনাকে হার মানাতে কাঠফাটা গরমে এ পোশাকে তারা লড়ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলেন ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘পিপিই অনেক ধরনের হতে পারে। এ ১২০ ন্যানোমিটারের একটি ভাইরাস থেকে আমাদেরকে যে পোশাক সুরক্ষা দেয় তা অবশ্য গরমে খুব অস্বস্তিকর । কিন্তু নিজের সুরক্ষা প্রথমে চিন্তা না করলে অন্যকে আরোগ্য করে তোলা খুব কঠিন ব্যাপার হয়ে যায়। তাই গরম হলেও এই পোশাকটি আমাদেরকে যতক্ষণ ডিউটিতে থাকতে হয় ততক্ষণ করতে হয়। পিপিই একবার পরার পর ডিউটি শেষ না করে খোলার কোনো সুযোগ নেই। কেননা পিপিই’র সংকট শুধুমাত্র আমাদের দেশে নয় সারা বিশ্বে।’
একবার পিপিই পরিধান করার পর খাওয়া-দাওয়া কিংবা ওয়াশরুমে যাওয়ার ব্যাপারে কী করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে একবার পিপিই পরিধান করার পর খাওয়া-দাওয়া কিংবা ওয়াশরুমে যাওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। ফলে ডাক্তার নার্স ও হাসপাতালের অন্যান্য সকল স্টাফ, যারা করোনা রোগীদের ট্রিটমেন্ট দিচ্ছেন তারা অল্প খেয়ে বা একদম না খেয়ে ডিউটি করেন। ডিউটি শেষে তারপর তারা খাওয়া-দাওয়া করেন। আসলে এটি সুরক্ষার প্রয়োজনে করতে হচ্ছে। আর পিপিই খুলে ওয়াশরুমে যাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় অনেকে ডায়পার ব্যবহার করেন।’
এ বিষয়ে সরাসরি বিআইটিআইডি হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এক শিফটে একজন ডাক্তার দুইজন সিস্টার ও দুইজন ওয়ার্ড বয় একসাথে কাজ করেন। কাজের শুরুতে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হয়। পরে আমরা রুমে এসে বসি। এরপর কোনো কল আসলে আমাদের আবার যেতে হয়। আর এ পিপিই পড়ে এক ঘণ্টা থাকতেও অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু আমাদের কর্তব্যরত সময়ে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে পিপিই পরে থাকতে হয়। তবে আমরা বাঙালিরা ছোটবেলা থেকেই এডজাস্ট (মানিয়ে নিতে) করতে শিখে গেছি বলে আমাদের যে কোন কিছুতেই প্রথমদিকে সমস্যা হলেও পরে সেটা আর সমস্যা থাকে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আসলে এখানে শুধু ডাক্তার নন, নার্স ওয়ার্ড বয় ও অন্যান্য স্টাফদের কথাও বলা প্রয়োজন। কেননা তারা এই গরমের মধ্যে পিপিই পরেই না খেয়ে ডিউটি করে।’
এ নিয়ে কথা হয় বিআইটিআইডি হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স তানজিমা চৌধুরীর সাথে। তিনি বলেন, ‘আসলে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করে আমাদের রোগীদের সুস্থ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের বেশ কিছু অসুবিধা হয়। কিন্তু আমাদের তা মানিয়ে নিতে হয়। কেননা পিপিই নিয়ে সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও সংকট আছে। আমরা বিআইটিআইডিতে এন-৯৫ মাস্ক এখনো পাইনি। কেএন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করছি। তাই এর নিচে ও উপরে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করি। এখন সব জায়গাতেই সবকিছুর সংকট। তাই কোন একটা কিছু খুলে দ্বিতীয়বার ব্যবহার করার কোন সুযোগ আমাদের নেই। ফলে আমরা পানি বা অন্য কোন কিছু খেতে পারি না। এমনকি ওয়াশরুমে যাওয়ারও সুযোগ থাকে না। তবে আমরা ডায়াপার ব্যবহার করার চিন্তা করছি। এটা আমাদের নিজেদের কিনে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে। নিজেদের সুরক্ষার পাশাপাশি শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি আমাদের ভাবতে হচ্ছে। এছাড়া কাজ করলেই তো ক্লান্তি আসে। তবু আমরা ক্লান্তিকে পিছনে ফেলে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি হাসপাতালে আসা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করার জন্য।’

ড. আনিসুজ্জামান : শিক্ষক থেকে জাতির অভিভাবক

কামরুল হাসান বাদল:

ড. আনিসুজ্জামানের যে বহুরৈখিক প্রতিভা, পরিচয় এবং অভিধা তার সবটুকু আড়াল করে বড় বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ‘জাতির অভিভাবক’ তাঁর এই পরিচয়টি।
জীবন শুরু করেছিলেন সাধারণত মেধাবী শিক্ষার্থীরা যা করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা দিয়ে। সেই যে শিক্ষকতায় ঢুকলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি মূলত শিক্ষকতাই করে গেলেন। জাতি বা রাষ্ট্রের যেকোনো দুর্যোগে তিনি অভিভাবকের মতো পথ বাৎলে দিয়েছেন, সত্যটুকু নির্ভয়ে প্রকাশ করেছেন তাতে কেউ মনোক্ষুণœ হতে পারে সে ভাবনা তিনি ভাবেননি।
বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের যে সংকট তা তিনি খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন এবং সেই বিষয়ে তিনি অত্যন্ত খোলামেলা মত প্রকাশ করেছেন। তার বক্তব্য ছিল স্পষ্ট এবং দ্বিধাহীন। তিনি যা বলতেন, লিখতেন তা তাঁর বিশ্বাস থেকেই করতেন, যে কারণে তিনি আমৃত্যু অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পক্ষে থেকেছেন এবং এর জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন।

উল্লেখ করার মতো দেশের সমস্ত পুরস্কার এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মানও অর্জন করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি কখনও আত্মপ্রচারে নিমগ্ন হন নি। অন্যের স্বার্থ রক্ষায় যেমন করে সোচ্চার থেকেছেন তেমন করে কিন্তু নিজের বেলায় থাকেননি।
মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন তরুণ শিক্ষক। তবে তার আগেই তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেছিলেন এবং তাঁর গবেষণাকর্মের কারণে ওপার বাংলার সুধীমহলে সুপরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধানের বাংলা অনুলিপি তার হাত দিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল। তিনি প্রথম শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন।

সদালাপী বন্ধুবৎসল ড. আনিসুজ্জামান তাঁর আদর্শের প্রতি অবিচল থেকেও সারাজীবন স্নিগ্ধ ও সংবেদনশীল মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়াও ছিল সংযত কিন্তু অত্যন্ত সংহত। তাঁর পা-িত্য ও ব্যক্তিত্বই তাঁকে জাতির অভিভাবকে পরিণত করেছিল। ‘তাঁর মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি’ এমন প্রতিক্রিয়া সচরাচর উচ্চারিত হলেও ড. আনিসুজ্জামানের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত রুঢ় বাস্তব হয়ে উঠবে কারণ, তার মতো শিক্ষকতুল্য অভিভাবক তেমন একটা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তার মৃত্যুকে অকাল কিংবা আকস্মিক বলা যাবে না। তারপরও তার শূন্যতা বাঙালির বুকে বড় ব্যথা হয়ে বাজবে দীর্ঘদিন। বিশ্বব্যাপী মহামারি দুর্যোগকালে তার মৃত্যুতে এই মুহূর্তে তাঁর অগণিত ভক্ত, অনুগ্রাহী, প্রিয়জনেরা একত্রিত হয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে না বটে কিন্তু বাংলার প্রতিটি ঘর থেকে, বাঙালির অন্তর থেকে তার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের কোনও কমতি হবে না।

এ মুহূর্তের সংবাদ

বিএনপি নেতার গলায় মালা পড়ালেন ওসি

ফজলে করিমকে আরও এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

এনবিআরের ৫ যুগ্ম কমিশনারসহ ৮ কর কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

আগস্ট থেকে ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার

আগস্ট থেকে ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার আসামি নান্নু না.গঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার

সর্বশেষ

বিএনপি নেতার গলায় মালা পড়ালেন ওসি

ফজলে করিমকে আরও এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

এনবিআরের ৫ যুগ্ম কমিশনারসহ ৮ কর কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

আগস্ট থেকে ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার

আগস্ট থেকে ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার আসামি নান্নু না.গঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার