করোনা ভাইরাসের কারণে গৃহবন্দি থাকা বাংলাদেশ অটো রিকশা হালকাজান পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। আজ ১৩ মেয় বিকালে নগরীর দেওয়ানহাট মোড়, একে খান মোড়, বাদুরতলা বড় গ্যারেজ ও জিইসি রুটে চলাচলরত এসব হালকা অটো রিকশা পরিবহন শ্রমিকদের এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, মোরশেদ আলম, জহুরুল আলম জসিম, শ্রমিক নেতা আনোয়ার হোসেন, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চল কমিটির নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ অটো রিকশা হালকাজান পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার, নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ সোলাইমান, ইয়াছিন মিয়াজী, মোহাম্মদ মনির প্রমুখ।
এ সময় মেয়র বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে পরিবহন শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় রয়েছেন। পাশাপাশি অনেক পরিবহন মালিকও অভাব অনটনে রয়েছেন। এসব পরিবারগুলোর কথা বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। আমাদের সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই কার্যকর ব্যবস্থা। বিগত ৩-৪ দিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ৫ দিনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চট্টগ্রামে আশক্সক্ষাজনকভাবে করোনা শনাক্ত হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি
হালকাযান পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
মো. হোসেন মুরাদ’র মৃত্যুতে খোরশেদ আলম সুজনের শোক
৩৭ নম্বর হালিশহর মুনির নগর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. হোসেন মুরাদ আজ সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন মরহুম মো. হোসেন মুরাদ আওয়ামী লীগের দায়িত্ব থাকাকালীন অবস্থায় সবসময় দলের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতেন। সম্প্রতি স্থগিত হওয়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থী ছিলেন মো. হোসেন মুরাদ।
সুজন মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে না পারায় জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় অবস্থিত এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট মারক্স কোম্পানিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখতে পারায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালানোর সময় জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার ঠোকতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে এ অভিয়ান চালানো হয়। এসময় ৫ জন ব্যক্তিকে ২শ টাকা করে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক সুপ্রভাতকে বলেন, করোনার প্রভাব ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আগ্রাবাদের মারক্স কোম্পানিকে ৫ হাজার, একই অপরাধে ৫ জন গ্রহককে ২শ টাকা করে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে নগরীর বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা, পাহাড়তলী ও আকবরশাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২টি মামলায় ৬ হাজার, খুলশি ও বায়েজিদ এলাকায় বাজার মনিটরিং করার সময় ৩টি মামলা ২ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
রাঙামাটিতে আরো পাঁচ জনের করোনা শনাক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি
রাঙামাটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসকসহ পাঁচ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এই নিয়ে মোট ১০ জনের করেনা করোনা পজিটিভ পাওয়া গেলো এ জেলায়।
বুধবার রাতে রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, আক্রান্ত নতুন পাঁচজনের গত ৭ মে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে রাঙামাটি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দুইজন, রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে ভর্তি থাকা ১ জন, বাকি দুইজন বিলাইছড়ি উপজেলার।
সিভিল সার্জন অফিসের করোনা সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, আক্রান্তরা সবাই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন এবং তাদের দ্বিতীয় দফা নমুনা সংগ্রহ করা হবে আবার।
বুধবার রাতে আসা রিপোর্টে আক্রান্ত এই পাঁচজনের মধ্যে একজন রাঙামাটি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, একজন ব্যক্তিগতভাবে নিজের চেম্বারে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। বিলাইছড়িতে আক্রান্ত দুইজনই মা ও ছেলে এবং রাজস্থলীতে আক্রান্ত ব্যক্তি আইসোলেশনে থাকা তিনজনের একজন।
এই প্রথমবারের মতো সিভাসুতে পরীক্ষার পর রিপোর্ট আসলো রাঙামাটিতে এবং একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী পাওয়া গেলো।
এর আগে গত ৬ মে ৪ জনের পজিজটিভ পাওয়ার পর ৭ মে দ্বিতীয় দফা নমুনা পাঠানোর পর ১০ ও ১১ মে তাদের করোনা নেগেটিভ ফলাফল আসে এবং তৃতীয় দফা আবারো নমুনা প্রেরণ করা হয়। ১২ মে আরেকজেনর পজিটিভ আসে। রাঙামাটি জেলায় এ পর্যন্ত ৪৯০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে ফলাফল পাওয়া গেছে ৩০৪ জনের।
করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন আওয়ামী লীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবার চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হোসেন মুরাদ (৫০)।
বুধবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুন্সিপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান। মাত্র ৫০ বছর বয়সে মারা যাওয়া স্থানীয় এ আওয়ামী লীগ নেতা মৃত্যুকালে এক সন্তান রেখে যান।
মো. হোসেন মুরাদ স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩৭ নম্বর মুনির নগর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে হোসেন মুরাদ ভাইয়ের জ্বর ছিল। গত রোববার করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনেও ছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে হতাশা ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘মান্নান জ্বরও কমছে না, পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পাইনি।’
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১ জন। এছাড়াও করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড ও বাড়িতে মারা গেছেন আরও ২০ জনের বেশি মানুষ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ৭০ জন। বর্তমানে ২৩২ জন রোগী আইসোলেশনে আছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২৩৮ জন।
করোনার হটস্পট : নারায়ণগঞ্জের পরই চট্টগ্রাম
সালাহ উদ্দিন সায়েম :
এক মাস আগে অর্থাৎ গত ১৩ মে চট্টগ্রামে নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ জন। গত ৮ দিন আগে ৫ মে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে ১১১ জনে। মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১৭ জনে। ৮ দিন পর আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানে ১১ মে পর্যন্ত দেশে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল গাজীপুর। গাজীপুরকে ফেলে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে এসেছে চট্টগ্রাম। প্রথমে রয়েছে করোনার হটস্পট খ্যাত নারায়ণগঞ্জ।
১২ মে পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২৮৬ জন। গাজীপুরে হয়েছে ৩৪৭ জন। আর ময়মনসিংহে ২৪৬ জন। ঢাকা জেলায় হয়েছে ২৩৮ জন।
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলছেন, আর কয়েকদিন পর করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানে চট্টগ্রাম নারায়ণগঞ্জকে ছাড়িয়ে যাবে।
হঠাৎ চট্টগ্রামে হু হু করে কেন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে?
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর মনে করছেন, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সাথে চট্টগ্রামের আন্তঃযোগাযোগের কারণে এখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আমরা খবর নিয়ে জেনেছি, নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী এবং কক্সবাজারে অনেক ব্যবসায়ী এসেছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় বিভিন্ন যানবাহন যাতায়াত করছে। এমনকি নগরীতেও বিভিন্ন উপজেলার যানবাহন আসছে। এই আন্তঃযোগাযোগ আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পথে-ঘাটে এখন কোনো বাধা নেই। মানুষ যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাচ্ছে। আন্তঃযোগাযোগ বন্ধ না হলে সামনে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হবে।
ফৌজদারহাট বিআইটিআইডির ল্যাব প্রধান ডা. শাকিল আহমেদ সুপ্রভাতকে বলেন, সারাবিশ্বে যেভাবে করোনা রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে, আমাদের এখানেও বৃদ্ধি পাওয়ার একটা ট্রেন্ড আছে। তাতে আমাদের সময়টা এসে গেছে। ধারণা করছি, মে মাস পর্যন্ত আমাদের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমি মার্চ মাসেই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে করোনায় চট্টগ্রাম হবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এখন চট্টগ্রাম মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সামনে চট্টগ্রামের জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
ভেঙ্গে পড়েছে সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থাপনা
সীমিত আকারে ও শর্তসাপেক্ষে গার্মেন্টস, দোকানপাট, শপিংমল থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সে ধারাবাহিকতায় দোকানপাট খুলছেও। এতে করে স্বাভাবিক কারণেই রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল বেড়েছে।
নগরীতে গত এক সপ্তাহ ধরেই রাস্তাূূয় লোকজন ও যানবাহনের সংখ্যা তুলনামুলক বেশি দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন না চললেও মানুষ নানাভাবে গন্তব্যে যাচ্ছে।
মাস খানেক আগে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সেনাবাহিনীকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। সামাজিক দূরত্ব না মানায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছিলেন মোবাইল কোর্ট। কিন্তু নগরীতে এখন দেখা যাচ্ছে না জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। এ সুযোগটিকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন মানুষ। তারা ইচ্ছেমতো বের হচ্ছেন। এতে ভেঙ্গে পড়েছে সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থাপনা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন সুপ্রভাতকে বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার রিমোর্ট কন্ট্রোল এখন মানুষের হাতে। তাদের জীবন তারাই রক্ষা করবে।
আক্রান্তদের ইতিহাস জানা যাচ্ছে না
গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম দিকে যারা শনাক্ত হয়েছিল চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন তাদের আক্রান্তের ইতিহাস খুঁজে বের করে বলেছিল মৃদু সামাজিক সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহ ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও আক্রান্তকারীদের ইতিহাস জানতে পারছে না স্বাস্থ্য প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বললেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে সব আক্রান্তদের ইতিহাস জানার সক্ষমতা আমাদের নেই। আর এখন আমরা সেটা জানার চেষ্টাও করছি না। সামনে হয়তো এমন পরিস্থিতি আসবে যে প্রতিদিন কতজন আক্রান্ত হবে সেটাও হয়তো আমরা বলতে পারবো না।
রক্তে ভিজিয়ে কলিজার ওজন বৃদ্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরের আগ্রাবাদ বেপারীপাড়ায় রক্তে ভিজিয়ে গরুর কলিজার ওজন বৃদ্ধির অভিযোগে শফি সওদাগর নামে এক মাংস ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বুধবার দুপুরে এক অভিযানে এ জরিমানা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার, পরিচালক (মেট্রো) পাপীয়া সুলতানা লীজা এবং চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে ৯ প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে মোট ২৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে বিভিন্ন এলাকায় অননুমোদিত ওষুধ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কোমল পানীয় ধ্বংস ও ৪টি টিসিবি ট্রাকসেল পয়েন্ট পর্যবেক্ষণ করা হয়।
পশ্চিম বেপারিপাড়ার আল্লাহর দান স্টোরকে নিত্যপণ্যের মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করায় ২ হাজার টাকা, একই এলাকায় বিসমিল্লাহ স্টোরকে অননুমোদিত ইউনানি ওষুধ বিক্রয় ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে বর্ণিত ওষুধ ধ্বংস করা হয়।
কাজীর দেউড়ি এলাকায় ফায়েজ স্টোরকে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই এলাকার ফয়েজ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরকে মেয়াদ উত্তীর্ণ কোমলপানীয় সংরক্ষণ করায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ৭ বোতল কোমলপানীয় ধ্বংস করা হয়।
বন্দর থানা এলাকায় হালনাগাদ মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় খাজা স্টোর,এনাম স্টোর, আমানত শাহ স্টোর ও এস এম ট্রেডার্সকে ১ হাজার করে মোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
রকি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে চার মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কারাবন্দি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির জন্য সাঈদীপুত্র ও তারেক মনোয়ারের সঙ্গে বৈঠক করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রকি বড়ুয়া (৪০) ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে র্যাব-৭। বুধবার নগরের পাঁচলাইশ থানায় এসব মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়া।
ওসি বলেন, রকি বড়ুয়াসহ গ্রেফতার ৭ জন ও পলাতক একজনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে র্যাব-৭ এর ডিএডি মো. রুপ মিয়া চারটি মামলা করেছেন।
একটি বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। অবৈধভাবে বিদেশি মদ রাখায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫.বি ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।
ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়া আরও জানান, দ-বিধির ৪২০, ৪১৬ ও ৫১১ ধারায় আরও একটি মামলা হয়েছে রকি বড়ুয়া ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে ছবি তুলে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো, বেকার যুবকদের চাকরি দেয়ার নাম করে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেক গ্রহণ ও যোগদানপত্র দিয়ে প্রতারণা করা বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া দেশের প্রচলিত আইন ও আদালতকে তোয়াক্কা না করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বেআইনি ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুক্ত করার লক্ষ্যে গোপন বৈঠকের ঘটনায় রকি ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ৬(২), ৮, ৯, ১০ ও ১২ ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ মে রাতে রকি বড়ুয়াকে ধরতে নগরের মোহাম্মদপুর এলাকার নুর ম্যানশন ভবনের একটি বাসা ঘিরে ফেলে র্যাবের একটি দল। এসময় রকি বড়ুয়া তিন তলার কার্নিশ থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু র্যাবের চৌকস দল রকি বড়ুয়া ও তার ৫ সহযোগীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরে লালখান বাজার এলাকায় মেরিন কে এইচ টাওয়ারে রকি বড়ুয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে রকি বড়ুয়ার কথিত রক্ষিতা এক নারীকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতার হওয়া রকি বড়ুয়ার সহযোগিরা হলেন-সফিউল আজম শহীদ (৪০), ছগির আহমদ (৪০), রুবেল বড়ুয়া (২৭), সাইফুল ইসলাম প্রকাশ নয়ন (৩৮), নারায়ন মল্লিক (৩৪) ও শাহিনা ইসলাম প্রিয়া ওরফে আমেনা (২৪)।
অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৬ রাউন্ড গুলি, ৩৫ লাখ টাকার টাকার এফডিআরের কাগজপত্র, ৬ বোতল বিদেশি মদ, বিদেশি সিগারেট, ১৩টি স্বাক্ষরযুক্ত ১০০ টাকা মূল্যের খালি স্ট্যাম্পসহ তার তদবির বাণিজ্য ও প্রতারণার কাগজপত্র জব্দ করে র্যাব।
এদিকে তিন তলা থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে দুই পা ভেঙে ফেলা রকি বড়ুয়া এখন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার ৬ সহযোগিকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পটিয়া ঈদ মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়
নিজস্ব প্রতিনিধি, পটিয়া :
পটিয়ায় বিভিন্ন মার্কেটে ও বাজারে লোকজন ভিড় শুরম্ন করেছেন। সকাল থেকে ইফতারির আগ পর্যন্তপ্রতিটি মার্কেটে ঈদের আগাম বেচাকেনা চলছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নারী-পুরম্নষ কাপড়ছোপড়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এই মার্কেট থেকে ওই মার্কেটে ছুটাছুটি করছে। বুধবার সকাল থেকে পটিয়া ছবুর রোড, ক্লাব রোড, স্টেশন রোডে যেন তিল ধারনের জায়গা ছিল না। অথচ এর আগে পটিয়া দোকান মালিক সমিতির এক বৈঠকে ঈদ মার্কেট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও কিছু ব্যবসায়ীর কারণে তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। গত কয়েকদিনে পটিয়াতে একই পরিবারের ৯জনসহ ১৬জন ব্যক্তি করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে উপজেলার হাইদগাঁও এলাকার ৬ বছরের এক শিশু মারাও গেছেন। পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা জাহান উপমা বর্তমান পরিসি’তিতে মানুষের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রতিদিনেই কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রশাসনের বিধিনিষেধ অমান্য করে দোকানপাট খোলার কারণে পটিয়া
পৌরসদর ও উপজেলার কয়েকটি এলাকা বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বুধবারও উপজেলার কোলাগাঁও, মনসা বাদামতল ও কুসুমপুরা এলাকার ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের তোয়াক্কা না করে পটিয়া সদরের বিভিন্ন মার্কেট ও বাজার খোলা রাখা হয়েছে। ফলে ভাইরাস আরো দ্রম্নত ছড়ানোর আশংকা রয়েছে।
এদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে কিছু দোকান মালিক ঈদ মার্কেট চালু করেছে। বর্তমান পরিসি’তিতে পটিয়াকে লকডাউন করা দরকার।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে হলে প্রশাসনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সচেতন হওয়া দরকার। তারা সচেতন না হলে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে। পটিয়াতে দিন দিন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত বাড়ছে।
পটিয়া উপজেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইউছুপ জানিয়েছেন, দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্তছিল সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত কওে যেন ঈদ মার্কেটের দোকান খোলা রাখা হয়। কিন’ কিছু কিছু দোকানদার মানুষের দূরত্ব নিশ্চিত না করে ও সমিতির সিদ্ধান্তঅমান্য করে দোকান খুলেছেন। তাদের বিরম্নদ্ধে কি ব্যবস’া নিবেন সেটা প্রশাসন সিদ্ধান্তনিবেন।
করোনায় চমেক হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার মৃত্যু
আনোয়ারায় দাফন
নিজস্ব প্রতিনিধি, আনোয়ারা :
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন (৭০) করোনায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার ভোর ৬ টায় নগরীর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়।
নিহতের নিজ বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার চাতরী গ্রামের পারিবারিক কবরস্তানে দুপুর আড়াইটায় জানাজার নামাজ শেষে ফটিকছড়ি নানুপুর মাদ্রাসার লোকজন ও স্বজনরা দাফন সম্পন্ন করে । তবে আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের কাউকে দাফনের উপসি’ত থাকতে দেখা যায়নি।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, আশরাফ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে গত ৩১ এপ্রিল নগরীর পার্ক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সেখান থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৬ মে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে তাকে ভর্তি করার পর তার নমুনা পরীড়্গায় করোনা শনাক্ত হয়।
বুধবার ভোর ৬ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আশরাফ উদ্দিন উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের বারিশ মোলস্নার বাড়ির মরহুম আবদুল খালেকের পুত্র। নিহতের স্ত্রী ও ৫ কন্যা সন্তান রয়েছে।
এদিকে আশরাফ উদ্দিনের নগরীতে মৃত্যু হলেও দাফনের জন্য উপজেলার নিজ গ্রামে তার মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসার খবর প্রশাসনকে জানালেও দাফনের সময় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের কাউকে উপসি’ত থাকতে দেখা যায়নি।
চাতরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন হিরু জানান, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির নিজ বাড়িতে দাফনের কথা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তার জানাজা ও দাফন কাজ ফটিকছড়ি নানুপুর মাদ্রাসার লোকজন ও স্বজনেরাই করেছে। এলাকার কেউ ছিলনা।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির লাশ নিয়ে আসার খবর এলাকার লোকজন জানিয়েছে। জানাজা ও দাফনের সময় স্বজন ছাড়া আর কেউ ছিলনা।