এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া »
সম্প্রতি অব্যাহত ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার বেশিরভাগ এলাকায় গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা তৈরি হয়েছে। সড়কের পাশে ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই ভাঙা সড়কে পানি জমে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য খানাখন্দ আবার সেখানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল তো দুরের কথা জনগনের হেটে চলাও দায় হয়ে পড়ছে। তাতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সর্বসাধারণকে। এ অবস্থায় দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুতসময়ে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক গুলো সংস্কার করে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসি। সরেজমিনে উপজেলার একাধিক ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, ভঙ্কুর সড়কের এমন বেহালদশা। স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ, গ্রামীণ জনপদের একাধিক সড়ক আছে, যেখানে দীর্ঘদিন কোন সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। সড়কের এমন অবস্থার কারণে রাস্তার পাশের দোকান ও মার্কেটের বেচাকেনাও কমে গেছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি তাদের।চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন। এটি উপজেলার উপকুলীয় অঞ্চলের একটি গুরুত্বপুর্ণ জনপদ। বদরখালী বাজারকে ঘিরে প্রতিদিন স্থানীয় জনগনের পাশাপাশি পাশের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া, মাতারবাড়ি ধলঘাট এলাকা থেকে বাজার সওদা করতে কয়েক হাজার মানুষের আনা-গোনা থাকে। সরকার প্রতিবছর বাজারটি ইজারা দিয়ে ৫০ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আয় করলেও বাজারের প্রধান সড়কটির বেহাল দশা দেখলে যে কেউ হতবাক হয়ে যাবে। বর্তমানে বাজারটি সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দুরের কথা জনগনের হেটে চলাও দায় হয়ে পড়ছে।সম্প্রতি সময়ের অব্যাহত ভারী বর্ষণে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য খানাখন্দ তৈরী হয়েছে। আবার সেখানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে বাজারটি সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দুরের কথা জনগনের হেটে চলাও দায় হয়ে পড়ছে। একইধরণের অবস্থা বিরাজ করছে বদরখালী ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামীন জনপদের আভ্যন্তরিন সড়কগুলোতে। জানা গেছে, বদরখালী ইউনিয়নের মতো কমবেশি গ্রামীণ সড়কগুলোর এধরনের বেহালদশা তৈরি হয়েছে উপজেলার অপর ১৭টি ইউনিয়নে। প্রতিটি ইউনিয়নে আছে সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসাসহ গুরুত্বপূর্ণ। দিনের পর দিন এসব এলাকার অতীব গুরুত্বপুর্ণ সংযোগ সড়কগুলো সংস্কার না হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থার অসুবিধার কারনে ছাত্রছাত্রীসহ সর্বসাধারণকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হালকাকারা বটতল এলাকার বাসিন্দা ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চকরিয়া উপজেলা কমিটির সদস্য জিয়াউদ্দিন বলেন, অল্পবৃষ্টির পানিতে চকরিয়া জনতা মার্কেট বাঘগুজারা সড়কের হালকাকারা বটতল এলাকার অংশটি রীতিমত পুকুরে পরিণত হয়েছে। কয়েকমাস ধরে বৃষ্টির পানি সড়কে প্রবাহিত হচ্ছে। তার উপর বালু ভর্তি ভারী যানবাচন চলাচলের কারণে বর্তমানে সড়কটিতে একাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে টেন্ডার হলেও সড়কের মেরামত কাজ শুরু করতে বিলম্ব হওয়ায় বর্তমানে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিরপাড়া এলাকার শতাধিক পরিবার। দুইবছর আগে চকরিয়া পৌরসভা থেকে কাজিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কটি সংস্কারে কয়েকদফা পরিমাপ ও মাটির সয়েল টেস্ট করা হয়েছে।জানতে চাইলে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের জনতামার্কেট বাঘগুজারা সড়কটি কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের। এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেবে সড়ক বিভাগ। আমাদের পক্ষথেকে সড়কটি দ্রুতসময়ে সংস্কার করতে নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কাজিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কটির উন্নয়নে ইতোমধ্যে টেন্ডার হয়ে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে মেরামত কাজ শুরু করবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। আশাকরি সহসা জনদুর্ভোগ কেটে যাবে।চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহালদশা প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের অতিরিক্ত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামীণ সড়কের ভঙ্কুর অবস্থা তৈরী হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। এব্যাপারে উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভার সিদ্বান্তের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলোর উন্নয়নে জরুরী ভিত্তিতে প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।