শেষ হাসি ডা. কামাল খান একাদশের

এ জেড এম হায়দার :

ডা. কামাল এ খান একাদশের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মুজিববর্ষ ফুটবল টুর্নামেন্ট। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে গতকাল সন্ধ্যায় ফাইনালে তারা টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে অঅবু তাহের পুতু একাদশকে পরাজিত করে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কেউ বল জালে পাঠাতে পারেনি। টাইব্রেকারে কামাল এ খান দলের জমিরউদ্দিন, পাভেল ও সজিব এবং পুতু একাদশের শুভ শীল গোল করেন। পুতু একাদশের শাহেদুলের শট কিপার উত্তম বড়–য়া প্রতিহত করেন এবং রহিমউদ্দিন ও মানিকের শট পোষ্টে স্থান পায়নি। ম্যাচসেরা জমিরের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সিজেকেএস কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

১৬ অক্টোবর ফাইনালের প্রস্তুতি ম্যাচ হিসেবে পরিনত প্রথম পর্বে এ দু’দলের খেলায় নিয়মিত একাদশের অনেকে বিশ্রামে ছিলেন। ১-১ গোলে ড্র হলে টাইব্রেকারে জয় পেয়ে পুতু একাদশ একমাত্র অপরাজিত থাকে। আর গতকাল আসল লড়াইয়ে উল্টো ফলাফলে ট্রফি নিয়ে উৎসবে মাতে টিপু-নাজু’র শির্ষ্যরা।
বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে উভয় দলের খেলোয়াড়রা মানসিক চাপে থেকে অগোছালোভাবে অঅক্রমণ করতে থাকে। বিশেষ করে প্রথমার্ধ ছিল একেবারে নিস্প্রভ। এ সময় তাদের আক্রমণে ছিল না তেমন চমক। ২৭ মিনিটে পুতু একাদশের রুম্মনের শট কিপার প্রতিহত করেন। আরেকবার ইরজুরি সময়ে তৌহিদের ফ্রি-কি ফিরে এে ফাঁকায় পেয়ে ইয়াসিনের দূর্দান্ত শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি কামাল একাদশের। তবে প্রশিক্ষকদের পরামর্শ পেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টে যায় খেলার চরিত্র। শুরু থেকে গোছালো আক্রমণে দু’দলেই একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করতে সক্ষম হয়। কিন্তু অনেকটা দৈহিক শক্তি প্রয়োগ করতে গিয়ে খেলোয়াড়রা মেজাজ হারিয়ে খেলার সৌর্ন্দয্য নষ্ট করেছেন। এ অর্ধের ২৩ মিনিটে ফাউলের দায়ে দ্বিতীয় দফা হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় কামাল খান দলের নির্ভরযোগ্য তারকা মুন্নাকে। এ ঘটনায় পুতু একাদশের পাওয়া ফ্রি কিক (রহিমের শট) কিপার কর্নার করে বিপদমুক্ত করেন। এর আগে বক্সে ফাঁকায় থেকেও সাকিব যথার্থভাবে হেড করতে না পারায় সুযোগ হাতছাড়া হয় তাদের। আবারো ২৮ মিনিটে একই দলের শাহেদুলের পাওয়ার শট অল্পের জন্য জালের ঠিকানা খুজে পায়নি। ৪০ মিনিটে বদলি মহিবুল্লার সেন্টার থেকে জাহেদুলের বিপজ্জনক শট কিপার সোহেল পাঞ্চ করে প্রতিহত করেন। ইনজুরি সময়ে মহিবুল্লার দর্শনীয় শট ক্রসবার উচিয়ে চলে গেলে খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়।

বাংলাদেশের ফুটবল কিংবদন্তী ও বাফুফের সভাপতি কাজি সালাউদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সকালে অসুস্থতা বোধ করায় চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে থাকায় আসতে পারেন নি। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরউদ্দীন বিজীয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। সংস্থার নির্বাহী সদস্য হাসান মুরাদ বিপ্লবের সঞ্চালনায় ও উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) ও সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান এস এম মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য ও সাংগঠনিক কমিটির সদস্য-সচিব মো. শাহজাহান। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল এ) মো. আবু হাসান সিদ্দিক, সিজেকেএস সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী দিদারুল আলম চৌধুরী, সিজেকেএস সহ-সভাপতি এ কে এম এহসানুল হায়দার চৌধুরী (বাবুল), চট্টগ্রাম ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম, সিজেকেএস যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও মো. মশিউর রহমান চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য ওয়াহিদ দুলাল, আবদুল হান্নান আকবর, মোহাম্মদ ইউসুফ, গোলাম মহিউদ্দীন হাসান, অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, জমির উদ্দীন (বুলু), নাসির মিঞা, মো. হারুন আল রশীদ, রেখা আলম চৌধুরী, রেজিয়া বেগম ছবি, মনোরঞ্জন দে ও সিজেকেএস‘র প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদকের পরিবারবর্গের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতার পর থেকে দায়িত্ব পালন করা প্রয়াত চারজন সাধারণ সম্পাদকের নামে এ টুর্নামেন্টে দলের নামকরণ করা হয়। চার দলের খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষকদের আর্থিক সম্মানী হিসেবে প্রায় ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়। চার দল সিঙ্গেল লিগ ভিত্তিতে খেলেছে এবং শীর্ষস্থানীয় দুই দল ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এখন সংস্থার উদ্যোগে আগামী ডিসেম্বরে শুরু হবে মুজিববর্ষ টি-টুয়োন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।