রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ ও স্কুল বাস

রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ

আমাদের পরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে গণমালিকনির্ভর গণপরিবহন – যেটা বিশৃঙ্খল, নিয়ন্ত্রণের অসাধ্য। শৃঙ্খলায় আনতে হলে সব গণপরিবহনকে এক ছাতার নিচে কয়েকটি কোম্পানির অধীনে নিয়ে আসতে হবে।

গণপরিবহন হল যে কোনো শহরের মেরুদন্ড। তাই এর পরিকল্পনাটা হতে হয় চৌকস। কৌশলগতভাবে এ পরিকল্পনা এমনভাবে করা হয়, যাতে নগরের যানজট দূর করার জন্য এটা কৌশলগত হাতিয়ার হয়। এর মাধ্যমে আমজনতা যেন সবচেয়ে বেশি সুবিধা পায়।

নগরীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনার জন্য ‘বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ’ করার কোন বিকল্প নেই। বিশেষ এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে নেওয়া। সহজ শর্তের ঋণে নতুন বাস নামানো। বাস চলবে ৫-৬টি কোম্পানির অধীনে। মালিকেরা বিনিয়োগের হার অনুসারে লভ্যাংশ পাবেন। ফলে বাসের সঙ্গে বাসের প্রতিযোগিতাও কমবে।

গণপরিবহন ব্যবস্থায় আর নৈরাজ্য থাকবে না, থাকবে না যাত্রী ধরার অসম প্রতিযোগিতা। নির্দিষ্ট রুটে নির্দিষ্ট রং-এর বাস চলবে। অনেকগুলো কোম্পানির বাস এক ছাতার নিচে নিয়ে আসাই বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ এর অন্যতম লক্ষ্য।

স্কুল বাস

যানজট অসহনীয় পর্যায়ে বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি। ব্যক্তিগত গাড়ির বড় একটি অংশ রাস্তায় চলাচল করছে স্কুলের শিশুদের আনা নেওয়ার কাজে। অনেক স্কুলে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এর ফলে অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) একই সময়ে রাস্তায় নামে ও চলাচল করে।  যদি স্কুল বাস সার্ভিস চালু করা যায়, তবে এ যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে।

দূরবর্তী স্কুলগুলো যদি বাস সার্ভিস চালু করে, তাহলে অভিভাবকরা যেমন নিজেদের সন্তানদের নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন, তেমনি একটি বড় খরচ ও সময় বেঁচে যাবে তাদের।

সন্তান প্রত্যেক মা-বাবার কাছে মূল্যবান সম্পদ। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলবাসে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থাকতে হবে। অ্যাপের মাধ্যমে ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকবে। কখন বাসে উঠল, বাস থেকে কখন নামল, স্কুলে কখন প্রবেশ করল – সবই অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই অভিভাবকেরা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

স্কুলবাসে থাকতে হবে প্রশিক্ষিত বাসচালক ও কর্মী। জরুরি প্রয়োজনের জন্য একটি হটলাইন নম্বর থাকবে, যেখানে অভিভাবকেরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।

একজন শিক্ষার্থী যে সময় স্কুলবাসে উঠবে, ওই সময় থেকেই শিক্ষার্থীর উপস্থিতি গণ্য করা হবে। বাস দেরি করলেও কোনো শিক্ষার্থীর স্কুলে প্রবেশে সমস্যা হবে না।

ছাত্রছাত্রীরা অনেকে একসঙ্গে বাসে যাতায়াত করলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে, সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হবে।