কাজুবাদাম চাষ
নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া, বান্দরবান ঘুরে এসে :
পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদে কাজু বাদাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছড়িয়ে পড়েছে। অধিক লাভবান হচ্ছে দেখে কৃষকদের মাঝেও এই চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। ইতোমধ্যে বান্দরবান অঞ্চলে সরকারি বেসরকারি ভাবে কাজু বাদামের চাষ শুরু হয়েছে, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে কৃযি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প খাতের উন্নয়নে আগ্রহী চাষিদের দিচ্ছে প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা। তাছাড়া অনেক নতুন তরুন উদ্যোক্তারা ও সম্ভাবনাময়ী এই খাতটি দিকে এগিয়ে আসছে।জানা গেছে, অল্পখরচে স্বল্প পরিসরে পাহাড়ি জমিতে কাজু বাদাম চাষ হলেও অপার সম্ভাবনা রয়েছে এ চাষে। সরকারি এই সহযোগিতা চলমান থাকলে অদুর ভবিষ্যতে এই পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত কাজুবাদাম দিয়ে উন্নতশীল অনেক দেশে রফতানির শীর্ষ তালিকায় নাম লেখাতে পারে বাংলাদেশ। বান্দরবানের আজিজনগর হর্টিকালচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো.সালাহ উদ্দিন বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় এক লাখ হেক্টরের বেশি পতিত জমি রয়েছে। সরকারি সহযোগিতায় এই জায়গাগুলো চাষাবাদের আওতায় আনা গেলে,এই জমিতেই ন্যূনতম এক লাখ মেট্রিকটন উন্নতমানের কাজুবাদাম ফলন করা সম্ভব। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশেই সহজলভ্য হয়ে উঠবে তা। কাজু বাদাম চাষ সম্প্রসারণের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের দেশে। ধান চাষের চেয়ে বাদাম চাষ সহজ ও পরিশ্রম কম হওয়ায় এবং কম দামে বীজ পাওয়ায় অনেক কৃষকেরা এর চাষ করে। আমাদের দেশে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে কাজু বাদাম চাষ হতে পারে সমৃদ্ধির নতুন দিগন্ত। পাহাড়ি ঢালুতে এ চাষ সহজেই করা যায়। জুমভিত্তিক চাষাবাদ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে পাহাড়িরা এ চাষ করতে পারে। প্রচুর লাভবান হবে চাষিরা। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে কাজু বাদামের ব্যাপক চাহিদা বাড়ছে। সরকারি নির্দেশনানুযায়ী আমরা চাষিদের কাজু বাদাম চাষে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছি। জানা যায়, পার্বত্য অঞ্চলেই উন্নতমানের কাজু বাদাম চাষ করা সম্ভব। এখানকার মাটি ও আবহওয়া বাদাম ফলনের জন্য খুবই উপযুক্ত। কাজু বাদাম চাষে তেমন শ্রম দিতে হয় না। প্রতি হেক্টর কাজু বাদামের বাগান থেকে ১.৫ টন থেকে ১.৮ টন কাজু বাদাম পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
কাজু বাদাম চাষে বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। এসব নিয়মকানুনের মধ্যে রয়েছে উন্নতজাতের বাদামের চারা লাগানো, আগাছা পরিষ্কার করা, সঠিক সময়ে কাজু বাদাম সংগ্রহ করা, সঠিকভাবে শুকনো এবং সঠিকভাবে কাজু বাদাম সংরক্ষণ করা, গাছকে রোগ বালাই থেকে রক্ষা করা। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো.সালাহ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে কাজু বাদাম চাষ হতে পারে সমৃদ্ধির নতুন দিগন্ত।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, উৎপাদিত পণ্য বিক্রির বাজার তৈরি, লাভজনক ফল-ফসলের ব্যাপক ফলন, প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে পাহাড়ি এলাকায়।তিনি বলেন, আমদানিনির্ভর এ ফলটি নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে পাহাড়ে।
বাধা শুধু সংরক্ষণে সমস্যা আর পোস্ট প্রসেসিং বা উৎপাদনের পর খাওয়ার উপযোগী করে প্রস্তুতকরণে। উৎপাদন ও চাষাবাদ যে হারে বাড়ছে তাতে খুব শিগগিরই পাহাড়ে “কাজু ইন্ডাস্ট্রি” গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করি।