আলাদা বাসটার্নিমাল হলেও লেগে আছে ভোগান্তি
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
যানজটের ভোগান্তি লেগেই আছে চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গা- সোসাইটিতে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক শহর চিরিঙ্গা-সোসাইটির দুপাশের ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্থাপনা, ভাসমান দোকান ও অভ্যন্তরীণ সড়কের গাড়িস্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। কিছুদিন পর পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান করলেও তা কাজে আসছে না।সময়ের পরিক্রমায় চকরিয়া পৌরশহরে গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল মার্কেট, বহুমুখী বাণিজ্যিক ও নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ কারণে সরকার ১৯৯৪ সালে চকরিয়া পৌর এলাকাকে পৌরসভায় উন্নীত করে। প্রতিষ্ঠার পর ইতোমধ্যে ২৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও যানজটের ভয়াবহতা থেকে নিস্তার পাচ্ছেন পৌরবাসীসহ সর্বসাধারণ। পৌরশহরে বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ির পার্কিং এবং ফুটপাতে ভাসমান হকারদের দখলে থাকার কারণে দীর্ঘ যানজট লেগে রয়েছে প্রতিদিন।অবশ্য পৌরশহরের যানজটের এই অভিশাপ থেকে সর্বসাধারণকে রেহায় দিতে দুইযুগ আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পৌরশহরের পুরাতন এসআলম কাউন্টার থেকে থানা রাস্তার মাথা পর্যন্ত মুল সড়ককে ভাগ করে ত্রি-ওয়ে সড়ক নির্মাণ করে। সেইসময় মহাসড়কের দুপাশে দুটি ওয়ানওয়ে রোড নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে নির্মাণ করেন পৌরবাস টার্মিনাল। উদ্দেশ্য ছিল পৌরশহর থেকে যানজট দুর করা। চকরিয়া শহর থেকে অনতিদুরে শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাসটার্মিনাল নির্মিত হওয়ার পর পৌরবাসী মনে করেছিলেন যানজটের ভয়াবহতা কমে আসবে। কিন্তু শহরজুড়ে ভাসমান হকার, লোকাল বাস স্ট্যান্ড, রিকশা, সিএনজি, চাঁদেরগাড়ি, টমটম গাড়ির দখলে চলে যাওয়ায় কার্যত শহর থেকে সহজে যানজট নিরশন হচ্ছেনা। প্রতিনিয়ত তা পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় প্রভাবশালী লোকজন মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে ভাসমান হকারদের বসার সুযোগ করে দেয়। বেশ কয়েকজন হকার বলেন, আমরা টাকা দিয়ে ‘অনুমতি’ নিয়ে দোকান খুলে ব্যবসা করছি। প্রশাসন মাঝে-মধ্যে উচ্ছেদ করলেও ফের আমরা ঠিকই দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারি।
জানা গেছে, চকরিয়া শপিং কমপ্লেক্সের সামনে বরইতলীগামী সিএনসি ও প্রাইভেট মাইক্রোবাস, পুরাতন এসআলম কাউন্টারের সামনে দূরপাল্লার যানবাহন, ট্রাক, পিকআপ, বাস, মাইক্রোবাস এবং চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বদরখালীগামী চাঁদেরগাড়ি ও সিএনজি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তাছাড়া রাস্তার উভয় পাশে ভাসমান হকার বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকে। ফলে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রী অফিসগামী লোক, হাসপাতালগামী রোগীসহ সর্বসাধারণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উল্লেখ্য, চকরিয়ার চিরিঙ্গা বাণিজ্যিক কেন্দ্রের মার্কেটগুলো গড়ে ওঠেছে মহাসড়ক ঘেঁষেই। এখানে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক, বিমা, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া প্রতিদিন মহেশখালী, কুতুবদিয়া, লামা, আলীকদম ও পেকুয়ার অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ চিরিঙ্গা স্টেশন হয়ে যাতায়াত করে। এসব কারণে সকাল থেকে চিরিঙ্গা শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু তীব্র যানজটে এখানে আসা মানুষগুলো অতিষ্ঠ। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘ফুটপাতে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁরা সবাই গরিব। এর পরও কোনো অবস্থাতেই চিরিঙ্গা-সোসাইটিকে যানজটের শহরে পরিণত হতে দেওয়া হবে না। সাধারণ মানুষের চলাচলে যাতে কোনো বিঘœ না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কাঁচামালের আড়তগুলো শহর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’