বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিটের আয়োজন করবে চেম্বার

কাস্টমসের জটিলতা সহজতর হলে বিনিয়োগ বাড়বে : ইউজি আন্দো

নিজস্ব প্রতিবেদক »

দেশের বর্তমান অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ রয়েছে জাপানের। সেদেশের বিনিয়োগকারীদের সকল ধরনের সহায়তা করতে জাপান ডেস্ক চালু করেছে চিটাগাং চেম্বার। পাশাপাশি চেম্বার আগামী বছর ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজনের পরিকল্পনা নিচ্ছে বলে জানান চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ।

গতকাল সোমবার দুপুরে নগরের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) এবং জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) মধ্যকার আয়োজিত বিজনেস টু বিজনেস মিটিংয়ে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। দেশের বর্তমান অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ রয়েছে জাপানের। এর মধ্যে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, ঢাকা মেট্রোরেল এবং শাহজালাল বিমান বন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল অন্যতম। চেম্বার আগামী বছর ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজনের পরিকল্পনা নিচ্ছে। চেম্বার থেকে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল জাপান সফর করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত ৫১ বছর ধরে জাপানের অব্যাহত উন্নয়ন সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করার লক্ষ্যে জাপানে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের অনুরোধ জানাচ্ছি। এ দক্ষ জনশক্তি যাতে জাপানের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য কারিগরি ইনস্টিটিউটসমূহের সাথে চুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সেক্টরভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি তৈরির আহ্বান করছি।’

বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বে জাপানের বিভিন্ন বিনিয়োগ ও জাপানি কোম্পানীর বিনিয়োগের তথ্যচিত্র তুলে ধরেন জেটরোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো। চেম্বারের নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ৪০টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে ৫টি কোম্পানির সঙ্গে ভূমি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে স্থানীয় বাজারের জন্য পণ্য তৈরি করা হবে। চট্টগ্রামের ইপিজেডেই প্রথম জাপানি বিনিয়োগে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। জাপানি বিনিয়োগকারীরা সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখে শিল্প স্থাপন করে। তাই তারা চট্টগ্রামের মিরসরাই এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলতে চায় রপ্তানিমুখী বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান।

তিনি আরো বলেন, জাপানি বিনিয়োগকারীরা আশা করেন ২০২৫ সালের মধ্যে জাপান-বাংলাদেশ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) সম্পন্ন হবে। এছাড়া কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রসিডিউরের জটিলতা সহজতর করা গেলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আরো বেশি আগ্রহী হবে। চেম্বার সভাপতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আগামী বছর জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজনে সহযোগিতার কথা জানান ইউজি আন্দো।

এ সময় চেম্বার সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব বলেন, ‘কোয়ালিটি মেডিসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরে যৌথ বিনিয়োগে শিল্প স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামে জাপানি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান। তিনি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের সহযোগী হিসেবে সকল ধরনের সেবা দিতে চেম্বার প্রস্তুত রয়েছে।’

বক্তব্য রাখছেন চেম্বার পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ

বৈঠকে চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ পর্যটন খাতে জাপানের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেন। চেম্বার পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ অটোমোবাইল সেক্টরে অর্জিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং (ওইএম) মোটর পার্টস উৎপাদনে জাপানের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

সভায় চেম্বার পরিচালক মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম ও চেম্বার সেক্রেটারি ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক অংশগ্রহণ করেন।