বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ উপচে ২২ গ্রামে সমুদ্রের লোনা পানি

বিভিন্ন স্থানে ফাটল

নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁশখালী
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাঁশখালীর উপকূলীয় ৯ ইউনিয়নের ২২টি গ্রামে বেড়িবাঁধ উপচে বঙ্গোপসাগরের লোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে বির্স্তীণ গ্রামাঞ্চল।
সাগরের পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নগুলো হল খানখানাবাদ, ছনুয়া, শেখেরখীল, চাম্বল, শীলকূপ, গন্ডামারা, সরল, কাথরিয়া, সাধনপুর। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভাটার টানে পানি নামতে থাকলে মানুষের আতংক কাটতে থাকে। তবে বির্স্তীণ এলাকায় নবনির্মিত ও নির্মিতব্য বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধ্বসে পড়েছে বেড়িবাঁধের বিশাল অংশ। ফাটল দেখা দিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে আসন্ন বর্ষায় বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
খানখানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বদরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমার এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে লোনা পানি ঢুকে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। বঙ্গোসাগরের বিশাল এলাকা জুড়ে বালির চর জেগে বিশাল দ্বীপের আকার ধারণ করেছে দীর্ঘদিন ধরে। ওই চরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তীব্রগতির ঢেউ ধাক্কা খেয়ে সরাসরি ওই ঢেউ আঘাত করেছে বেড়িবাঁধে। বালির জেগে ওঠা চরটি ড্রেজিং করা না হলে ভবিষ্যতে যেকোন দুযোর্গে খানখানাবাদ উপকূলে আরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। আসন্ন বর্ষায় আরও ক্ষতি হতে পারে।
ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘ ছনুয়ায় অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে বিভিন্ন গ্রামে সাগরের লোনা পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অভিযোগ করেও বেড়িবাঁধ সংস্কার করাতে পারছি না।’
উপকূলের বিভিন্ন গ্রামে সাগরের লোনা পানি ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে বাঁশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। সাথে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম মিয়াজী।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখেছি। বেড়িবাঁধের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তবে কেউ হতাহত হননি। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তালিকা উপস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি।’
বাঁশখালীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লোনা পানি ঢুকে পড়ার দৃশ্য দেখে আমি হতবাক। এত উচ্চতায় প্লাবিত হবে আমাদের ধারণায় ছিল না। অনেকস্থানে সর্বোচ্চ উচ্চতার বেড়িবাঁধও উপচে লোনা পানি প্লাবিত হয়েছে। পানি নেমে গেলে সঠিক ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হবে।’