প্রকল্পের ডিজাইন রিভিউ করা প্রয়োজন

জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম

বিভাগীয় কমিশনারকে আহবায়ক করে মনিটরিং কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক »
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ডিজাইন রিভিউ করার কথা বললেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রকল্প ডিজাইন করার সময় যেভাবে করা হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে কাজ করতে গিয়ে তা পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। চাক্তাই খাল দিয়ে এক সময় বড় বড় নৌকা প্রবেশ করতো, কিন্তু বর্তমান ডিজাইনে আর নৌকা প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু চাক্তাই খাল নয়, নগরীর আরও খালেও একই চিত্র দেখা গেছে। গতকাল সার্কিট হাউজে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে এমন কথা বলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরো বলেন,খালের চওড়া আরো বেশি হওয়ার কথা, কিন্তু কম কেন হবে? এজন্য খালের ডিজাইনে সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করা প্রয়োজন। এজন্য বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি প্রতিমাসে মিটিং করে এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখবে।
তিনি আরো বলেন, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি কেন শেষ হচ্ছে না। আগামীতে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে কিনা তা নিশ্চিত করতেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আমাকে এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে প্রকল্পের অগ্রগতি অবহিত করবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতা নিয়ে চট্টগ্রামে তিনটি প্রকল্প চলমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে আন্তরিক বলেই এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের উন্নয়ন হলেই সারাদেশের উন্নয়ন হবে। চট্টগ্রামের মানুষ ভাল থাকলে সারাদেশের মানুষও ভাল থাকবে।
জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় খালগুলোর চওড়া কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালগুলো দিয়ে একসময় পণ্যবাহী নৌকা শহরের ভেতরে আসতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এসব খাল ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে।
দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনীতির উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের ভোগও বেড়েছে। আর ভোগ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন বর্জ্যও বেড়েছে। এর প্রমান পাওয়া যাচ্ছে নদী ও খালগুলো বিভিন্ন বর্জ্যে ভরাট হয়ে যাওয়া। কর্ণফুলী নদীর ২০ ফুট গভীর পর্যন্ত পলিথিন পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি নিয়মিত ড্রেজিং করতো তাহলে আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। এখন ক্যাপিটেল ড্রেজিং করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গায় যাতে অবাধে শিল্প কারখানাকে লিজ দেয়া না হয়। মানুষ যাতে কর্ণফুলী নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারে সেই সুযোগও দিতে হবে।
বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনটি প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
## ২৬ জুন ২০২১ ##