প্রচণ্ড তাপদাহে রাউজানে জনজীবন অচল
নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান :
চলছে প্রচ- তাপদাহ। প্রচ- তাপদাহে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে । ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপগুলোতে পানি উঠছে কম। বেশীর ভাগ নলকূপ থেকে কোন পানি উঠছে না । পুকুর জলাশয় ভরাট করে ঘরবাড়ি ও বাণ্যিজিক ভবন করায় রাউজানে প্রচন্ড তাপাদাহে সাধারণ মানুষ পড়েছে পানি সংকটে।
রমজান মাসে প্রচন্ড গরমের মধ্যে রোজা রেখে রোজাদারগণ গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বৃষ্টির দেখা মিলছে না।
রাউজান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পৌর এলাকায় একসময়ে সড়কের পাশে ও হাট বাজারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় ছিল বটগাছ । গ্রীষ্মকালে এলাকার মানুষ তাপদাহ থেকে স্বস্তি পেতে বটগাছের ছায়ায় বসে বটগাছের নিচে সুশীতল বাতাশে স্বস্তি পেত। গত কয়েক বছর ধরে সড়কের পাশে ও হাট বাজারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় খাকা বটগাছ কেটে সাবার করে ফেলেছে । বটগাছ গুলো কেটে ফেলায় প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে সাধারণ মানুষ আর বটগাছের নিছে বসে গরম থেকে স্বস্তি নিতে পারছে না।
রাউজান উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নির্মাণ পাকা ভবনে এসি লাগানো হয়েছে । প্রচন্ড গরমের মধ্যে ধনাঢ্য ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এসি চালিয়ে গরমের যন্ত্রনা থেকে রক্ষা পেলে ও সাধারন মানুষ তা পাচ্ছে না । দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় রাউজানের খাল ও ছড়া শুকিয়ে গেছে । খাল ও ছড়ায় পানি না থাকায় কৃষকেরা তাদের সব্জি ক্ষেতে সেচের পানি দিতে সক্ষম না হওয়ায় সব্জি ক্ষেত মরে যাচ্ছে । পুকুর জলাশয় যেগুলো রয়েছে সেগুলোর পানি ও শুকিয়ে গেছে । প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ দিনমজুর, রিক্সা, অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে।
গত শনিবার ভোর ৪টার সময়ে একপসলা বৃষ্টি হলে কিছু সময় মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। সকাল থেকে আবারো পুনরায় প্রচন্ড তাপদাহ শুরু হয়। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে মানুষের মধ্যে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি হচ্ছে । রাউজানের ফকির হাট বাজারের মধ্যে বিশাল আয়তনের পুকুর ভরাট করে নির্মাণ হয়েছে বাণ্যিজিক ভবন, রাউজান উপজেলা ডাকঘরের পাশে পুরাতন একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে ।
রাউজান মুন্সির ঘাটা দাশ পাড়া, কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বাইন্যা পুকর এলাকায় একটি পুকুর ভরাট করে নির্মান করা হয়েছে আবসিক ভবন, রাউজানের হলদিয়া আমির হাটে একটি পুকুর ভরাট করে বাণ্যিজিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে । রাউজান নোয়াপাড়া পথের হাট, পাহাড়তলী চৌমুহনী এলাকায় কয়েকটি পুকুর জলাশয় ভরাট করে নির্মান করা হয়েছে বাণ্যিজিক ভবন ।
রাউজান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় গভীর নলকুপ বসানো হলে ও অধিকাংশ নলকুপে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি উঠছেনা। গভীর নলকূপগুলোর মধ্যে অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে । জনস্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় গভীর নলকূপগুলো মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্টান, জনবহুল এলাকার বসানোর নিয়ম রয়েছে । গভীর নলকূপগুলো মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্টানের আঙ্গিনায় বসানোর পাশাপশি জনবহুল এলাকায় বসানো হয়নি।
জনবহুল এলাকার বসানোর নাম দিয়ে এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের পছন্দের রাজনৈতিক নেতা, গুটি কয়েক সাংবাদকর্মীর ঘরের মধ্যে বসানো হয়েছে । ফলে এলাকার সাধারন মানুষ বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে পারছে না । কিছু কিছু স্থানে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাড়ী ও ভবনের পাশে বসানো সরকারী গভীর নলকুপ গুলোতে পাইপের মাধ্যমে লাইন দিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তির বহুতল বাণ্যিজিক ভবন,বহুতল আবাসিক ভবনে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে । বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে রাউজানের বিপুল পরিমান গভীর নলকুপ বসানোর পর গভীর নলকুপ থেকে বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে প্রতিনিয়ত পানি উত্তোলনের ফলে ভগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারন মানুষের পানি ব্যবহারের জন্য বসানো অগভীর নলকুপ থেকে পানি উঠছে না । রাউজান উপজেলা উপ সহকারী প্রকৌশলী রহমত উল্লাহ বলেন, গত কয়েক বৎসরে রাউজানে ৮শতের অধিক গভীর নলকুপ বসানো হয়েছে । বৃষ্টি হলে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর থেকে পানি উঠবে গভীর নলকূপগুলোতে ।