এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া »
উত্তাল সাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে কক্সবাজার জেলাজুড়ে। গেল তিনদিনের অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার অন্যতম সষ্যভান্ডার খ্যাত চকরিয়া উপজেলার বির্স্তীণ জমির আমন ধান, সবজি ও তামাক ক্ষেত ডুবে গেছে হাঁটুসমান পানিতে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় প্লাবিত এলাকার মাঠের ধান, বর্ষাকালীন শাকসবজি, পানের বরজ, ও বিভিন্ন জাতের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কোন জমিতে হাঁটুসমান ও কোন জমিতে কোমর সমান পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় মাঠের ধান, সবজি ও তামাক ক্ষেত নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকেরা। টানা বৃষ্টিপাতে শঙ্কা রয়েছে পাহাড় ধসেরও। এতে উদ্বিগ্ন পাহাড়ে বসবাসরত মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকেরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু ভারী বৃষ্টিপাত শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থার কারণে বেশির ভাগ ধান ও সবজিক্ষেত অন্তত হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, ফাসিয়াখালী, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, বিএমচর, কোনাখালী, পুর্ববড় ভেওলা, সাহারবিল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ আমন ধান, রকমারি সবজি ও তামাকক্ষেত বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন ইউনিয়নে ড্রেনের ময়লা আর্বজনা উঠে এসেছে এসব এলাকার রাস্তায়। বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। রাস্তার বেহালদশায় বৃষ্টিপাতে জন ও যান চলাচলে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়েছে।ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে রয়েছে। আউশ ও আমন ধানের জমিতে জমে গেছে পানি। এতে হতাশা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এতে নিচু এলাকাগুলো পানির নিচে রয়েছে কয়েকদিন ধরে। চিংড়ি ঘেরে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষিরা। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, গত তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে ইউনিয়নের বেশিরভাগ আমন ধান, সবজি ও তামাক ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কোন জমিতে হাঁটুসমান ও কোন জমিতে কোমর সমান পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় মাঠের ধান, সবজি ও তামাক ক্ষেত নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকেরা। তিনি বলেন, বৃষ্টিপাতের পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় জমিতে রোপনকৃত বীজ এবং ফসলেও পচন ধরেছে। জমে থাকা পানি দ্রুতসময়ে না সরলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকেরা। ভারী বর্ষণে মাঠের আমন ধান ও বিপুল সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাছিম হোসেন।
তিনি বলেন, অব্যাহত ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার আমন ধান এবং রকমারি সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। শনিবার পর্যন্ত কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫০ থেকে ৬০ হেক্টর ধান ক্ষেত এবং ১৫ থেকে ২০ হেক্টর সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে এবং জলাবদ্ধতা কয়েকদিন স্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি অবশ্য তেমন হবেনা।
গ্রাম