নয়শ’ পোশাকশ্রমিক বিপাকে, বিক্ষোভ

অর্ডার না থাকায় কর্মী ছাঁটাই

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরের বাকলিয়া থানাধীন চাক্তাই এলাকার ডিপ অ্যাপারেলস নামের একটি পোশাক কারখানার দুটি শাখা একসাথে বন্ধ হয়ে যায়। গত ৩ মাস ১৮দিন ধরে শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এর প্রতিবাদে দুটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে ওই অ্যাপারেলস’র প্রায় ৯ শতাধিক শ্রমিক।

এতে নতুন চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা পড়েন ভোগান্তিতে।

গতকাল বৃহস্পতিবারসকাল থেকে নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকার মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও নতুন চাক্তাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলরত শ্রমিকরা।

বিক্ষোভরত শ্রমিকরা জানান, গার্মেন্টস মালিকপক্ষ যতক্ষণ বৈঠকে বসে তাদের চারমাসের বকেয়াবেতন পরিশোধের আশ্বাস দেবে না ততক্ষণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন তারা। এসময় পুলিশ গিয়ে তাদেরকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও তারা শুনছেন না।

আরও জানা গেছে, নগরের বাকলিয়া এলাকায় ডিপ অ্যাপারেলস নামের প্রতিষ্ঠানটির দুটি কারখানা রয়েছে। সেখানে প্রায় ৯ শতাধিক শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু হঠাৎ কোন ধরনের নোটিশ বা কাউকে না জানিয়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তে রীতিমত বিপাকে পড়েনশ্রমিকরা। এসময় শাহ আমানত সেতু এলাকার মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও নতুন চাক্তাই সড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা।

মো.পারভেজ নামক এক গার্মেন্টস কর্মী বলেন, ‘আমরা গতকালও কাজ করেছি। আমাদেরকে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ কিছুই জানায়নি। সকালে এসে দেখি গার্মেন্টসের গেইটে তালা ঝুলানো। হঠাৎ করে আমাদেরকে ছাঁটাই করলে আমরা কোথায় যাবো।’

কারখানার শ্রমিক রুবেল হোসেন বলেন, ‘গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে আগে থেকে কোন কিছুই জানানো হয়নি। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে এসে নোটিশ দেখতে পাই। কারখানা নাকি মালিক বন্ধ করে দেবেন। আমাদের এখনো প্রায় ৩মাস ১৮ দিনের বেতন বকেয়া আছে। তার উপর অন্য কারখানাগুলোতে এখন লোক নিচ্ছে না। আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। জানি না কিভাবে ঘর সংসার সামলাবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আসলে এটি যদি আইন অনুসারে ধরা হয়, ডিপ অ্যাপারেলস কর্মী ছাঁটাইয়ের নোটিশ দিয়েছে। সেই অনুসারে কর্মীরা ছাঁটায়ের সুবিধা পাবে। ছাঁটাইয়ের আইন অনুযায়ী যত বছর চাকরি করছে ততবছর হিসাব করে বেসিক সুবিধা পাবে। এটি যেদিন গার্মেন্টস বন্ধ হয়েছে সেদিন থেকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করবে। নোটিশে উল্লেখ করেছে ডিসেম্বরের ১২ তারিখ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করবে।’

কারখানা মালিকের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘বর্তমানে ডিপ অ্যাপারেলস নামক পোশাক কারখানাটিতে কোনকাজের অর্ডার নেই। আয় না থাকায় ৯শ শ্রমিকের বেতন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মালিক। তাই তারা কারখানা বন্ধ করে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।’