রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া :
শীতকাল দরজায় কড়া নাড়ছে, এ সময় হাটবাজারে মৌসুমী সবজিতে ভরাডুবি থাকলেও দরদামে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী তাদের ইচ্ছামতো দাম হাকছে, আদায়ও করছে। ক্রেতারা অসহায়ের মতো দাম দিয়ে সবজি কিনছে তবে পাশাপাশি প্রশাসনের দায়িত্বহীন কর্মকান্ডকে দোষারোপ করতে দেখা গেছে। বলছে ঠিকমতো বাজার মনিটরিং করা হলে ক্রেতারা এমন অসহনীয় পরিবেশের শিকার হতো না। প্রশাসন বলছে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার সুবাধে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। যে কারণে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে না। বাজারের একজন নিয়মিত ক্রেতা হাজি আব্দুল মান্নান জানালেন, শীতকালকে সবজির মৌসুম বলা হলেও বাস্তবে তা নেই। জলবায়ূ পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় প্রায় মৌসুমের পরিবর্তন ঘটেছে অস্বাভাবিক। এবারের আসন্ন শীতেও বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। মুলা ছাড়া সকল প্রকার সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০/৭০ টাকা। তবে টমেটোর দাম আরও বেশি।এঅঞ্চলের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা উখিয়ার দারোগা বাজারে শুধু সবজি নয় সব ধরনের নিত্য পণ্যের দাম বেড়েছে বলে ক্রেতা সাধারনের অভিযোগ। ভরা মৌসুমে ৮০টাকা দরে পেয়াঁজ বিক্রি হওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রসাশনের বাজার নিয়ন্ত্রনের অক্ষমতাকে দায়ী করছেন বৃহত্তর ক্রেতা সাধারন। রবিবার উখিয়া বাজার ঘুরে সবজি বিক্রেতা শামসুল আলম, নুরুল বশরসহ একাধিক খুচরা ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করা হলে তারা জানান, রোহিঙ্গার কারনে সবজির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আসন্ন শীত মৌসুমেও সবজির দাম বেড়েছে। তারা বলেন, চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জ, লোহাগাড়া, দোহাজারী থেকে যেসব সবজি আসছে তা সরাসরি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাজারে চলে যাচ্ছে। তারা বলছেন, যে সবজি ২০/৩০ টাকা দরে বিক্রি করার কথা তা ক্যাম্প বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৭০/৮০ টাকা দরে। যে কারণে আড়তদার সবজি ব্যবসায়ীরা এখন ক্যাম্প মুখী। তারা স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে সবজি সরবরাহ করতে তেমন আগ্রহী নয় বলে সবজি বিক্রেতাদের অভিমত।
এছাড়াও মাছ মাংসের বাজারেও অস্থির অবস্থা। গরুর মাংস কেজি প্রতি ৫শ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও তারা গরু সংকটের অজুহাত দেখিয়ে কেজি প্রতি ৬/৭শ টাকা দরে বিক্রি করছে। মাছের বাজারে গিয়ে ক্রেতা সাধারন এদিক সেদিক ঘুরে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। বাজারে নিয়মিত ক্রেতা আব্দুল হক ও শামশুল আলমসহ অসংখ্য ক্রেতা সাধারনের অভিযোগ দালাল, ফড়িয়াদের কারণে মাছের দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে না। তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত খুচরা বিক্রেতা থেকে কম দামে মাছ ক্রয় করে সেখানে আবার পানি মিশিয়ে ওজনে ভারি করে অধিক মূল্যে বিক্রি করছে। এ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতা সাধারনের মধ্যে তর্ক বির্তক হতে দেখা গেছে। উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিমুল এহসান খান বলেন, সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ, এনজিও মনিটরিং, সমন্বয় সভা ও দাপ্তরিক কর্মকান্ডে সময় দিতে গিয়ে কখন যে দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে তাও মনে থাকে না। ব্যাপক ব্যস্ততার কারণে হাটবাজার গুলো মনিটরিং করতে না পারার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো তরিতরকারি, নিত্যপণ্য ও মাছ মাংসের দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে।