নগরের অলি-গলিতে বেড়েছে কেনাবেচা

লাখ টাকার নিচে নেই ছোট গরুও

নিজস্ব প্রতিবেদক »

কোরবানি ঈদের আর মাত্র ২দিন বাকি। কিন্তু নগরীর স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটগুলোতে কোরবানির পশুর বেচা-কেনা এখনো পুরোভাবে জমে ওঠেনি। লাখ টাকার নিচে গরু মিলছে না হাটগুলোতে। তবে অলিগলিতে বেশ বেড়েছে গরুর কেনাবেচা। হাটে গিয়ে বিরক্তিকর পরিবেশ এড়াতে অনেক ক্রেতা অলি-গলি থেকে কিনে নিচ্ছেন কোরবানির পশু।

গতকাল নগরীর কর্ণফুলী মইজ্জারটেক বাজার, নূরনগর হাউজিং এস্টেট, সল্টগোলার বিভিন্ন অলিগলিসহ পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তিনটি স্থায়ী পশুর হাট হচ্ছে- সাগরিকা গরুর বাজার, বিবিরহাট গরুরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। এবার কোরবানি উপলক্ষে অনুমতি পাওয়া অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের কর্ণফুলী গরুর বাজার (নূরনগর হাউজিং এস্টেট), ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠসহ দশটি অস্থায়ী বাজারের অনুমোদন দেওয়া হলেও যার মধ্যে ১টি অস্থায়ী বাজারের পশু কেনাবেচা বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া নগরীতে বিভিন্ন এগ্রোফার্মের পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক সামিয়ানা টাঙিয়ে নগরীর অলিতে গলিতে প্রায় শতাধিক পয়েন্টে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু।

নগরীর বিবিরহাট স্থায়ী গরুর বাজারে গরু ব্যাপাারি মোহাম্মদ রশিদ আহমদ বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। অন্যান্য বছর এ সময়ে গরু বেচাকেনায় ক্রেতাদের যে চাপ থাকে এবার তা নেই। ১২টি গরু হাটে তুলেছি যার দুটি বিক্রি হয়েছে। আগামী দুই দিনে ক্রেতার চাপ বাড়তে পারে।

একই বাজারের আরেক গরু ব্যবসায়ী দোলন পাল বলেন, তিনটি গরু এনেছি। একটিও বিক্রি হয়নি। ক্রেতারা অলিগলি থেকে কিনছে, বাজারমুখী হচ্ছে না।

নুর নগর হাউজিং এস্টেট গরুর বাজারে গরু কিনতে আসা মঞ্জুর রহমান বলেন, প্রতিবছর দুটি গরু কোরবানি দিতে হয়। একটি কিনেছি। আরেকটা লাগবে। কিন্তু লাখের নিচে পছন্দনীয় কোন গরু নেই। একেকটি গরু দর দিচ্ছে এক থেকে দেড় লাখ। আমার বাজেট হলো ৬০ থেকে ৭০ হাজার।

এদিকে, পশুর হাটগুলোতে ক্রেতার ভিড় না থাকলেও নগরীর অলি-গলিতে বেশ বেচাকেনা হচ্ছে কোরবানির পশু।

নগরীর বাকলিয়া, কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ, খুলশী, ডবলমুরিংসহ নগরীর আনাচে-কানাচে শতাধিকের উপরে সামিয়ানা টাঙিয়ে গরু বিক্রি করছেন স্থানীয় খামারি ও পশু বিক্রেতারা।

বাকলিয়ার কোরবানিগঞ্জের একটি স্কুলের সামনে ২০ থেকে ৩০টি গরু বিক্রি করছে স্থানীয়রা। বিক্রেতারা বলেন, ‘পশুর হাটে পশু নিয়ে আসা-যাওয়া ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের জন্য অনেকটা বিরক্তিকর। ক্রেতাদের বিরক্তি এড়াতে আমরা এখানে বিক্রয় করছি। তবে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।’

ডবলমুরিংয়ের গোসাইলডাঙ্গা এলাকার খোলা স্থানে বিক্রি করছে পশু বিক্রেতারা।

মো. আলমগীর নামের এক বিক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘গত পাঁচদিনে আমরা ১৮টি গরু বিক্রি করেছি। স্থানীয় ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। ক্রেতারা নিরাপদে গরু কিনতে পারছে।’

এদিকে, নগরীর বাইরে জেলার ১৫ উপজেলায় স্থায়ী ৫৮টি পশুর হাট রয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে ১৫৫টি। এর মধ্যে জেলার মিরসরাই উপজেলায় ২১টি, সীতাকু-ে ১০টি, সন্দ্বীপে ১৪টি, ফটিকছড়িতে ৩০টি, রাউজানে ২২টি, রাঙ্গুনিয়ায় ২০টি, হাটহাজারীতে ৭টি, বোয়ালখালীতে ১২টি, পটিয়ায় ১০টি, চন্দনাইশে ১৪টি, আনোয়ারায় ১৫টি, সাতকানিয়ায় ৭টি, লোহাগাড়ায় ১৬টি, বাঁশখালীতে ১১টি এবং কর্ণফুলীতে দুটি হাট বসেছে। এসব গরু হাটে গরু বেচাকেনা হবে শেষ দিন বুধবার পর্যন্ত।