কোরবানি পশুর চামড়া

চামড়া পচনশীল ও তাৎক্ষণিকভাবেই তা কিনতে হয় বলে কোরবানির পশুর চামড়া কেনার জন্য ঋণ দরকার হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও কোরবানির ঈদে চামড়া সংগ্রহের জন্য ট্যানারিশিল্পের অনুকূলে ৫০০ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করতে তাদের চিঠি দেয় বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। তাই তারা ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ জানায়। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়। এ আলোকেই ব্যাংকগুলো ২৫৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে।
ঋণের পরিমাণ কেন কমে যাচ্ছে, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চামড়া খাতের আগের ঋণের বড় অংশই খেলাপি। এ কারণে ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে চায় না। লক্ষ্যমাত্রা যতই রাখা হোক না কেন, ঋণ বিতরণ ১০০ কোটি টাকার সীমাও ছাড়াতে পারে না অনেক বছর। যেমন ২০২০ সালে ৬৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও বিতরণ হয়েছিল মাত্র ৬৫ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলো বলছে, নতুন ঋণের বড় অংশই তারা ব্যবসায়ীদের আগের বকেয়া শোধ বাবদ কেটে রাখে। ফলে প্রকৃত ঋণ খুবই কম পান ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বাস্তবে নতুন ঋণ বেশি পান না তাঁরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে পশুর চামড়ার প্রায় ৭০ শতাংশের জোগান আসে কোরবানির ঈদে। তবে ব্যবসায়ীদের হাতে নগদ টাকা না থাকায় তাঁরা সব চামড়া সংগ্রহ করতে পারেন না। এ সুযোগটি নেয় একশ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী।
বিটিএ সূত্র জানায়, সংগঠনটিতে ৮০০-এর কাছাকাছি সদস্য রয়েছেন। আর সারা দেশে দুই হাজারের কাছাকাছি বৃহৎ ও মাঝারি আড়ত রয়েছে। আড়তদারেরা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে নিজেরাই লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেন। পরে সেগুলো তাঁরা বড় ট্যানারির কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা বলেন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিবছর প্রায় ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়।
কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কাঁচা চামড়া প্রাথমিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শুধু কোরবানির ঈদে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন লবণের চাহিদা রয়েছে। এ বছর লবণ উৎপাদনে রেকর্ড হওয়ার পরও লবণের দাম বাড়ছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি এবং লবণের দাম যাতে বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে সারা দেশে প্রয়োজনীয় পরিমাণ লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।