থানা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জনবান্ধব হয়ে উঠুক পুলিশও

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আয়তন বাড়িয়ে নতুন আরও ৮টি থানা গঠন করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রস্তাব বর্তমানে বিবেচনায় রয়েছে। ২১ জানুয়ারি সিএমপির উপকমিশনার এসএম মোস্তাইন হোসাইন গণমাধ্যমে খবরটি নিশ্চিত করেন।
বর্তমানে সিএমপির আয়তন ৩০৪ দশমিক ৬৬ বর্গকিলোমিটার। থানার সংখ্যা হচ্ছে ১৬টি। এখন সেটি বাড়ানোর জন্য দুটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম প্রস্তাবনায় কর্ণফুলী, আকবরশাহ ও চান্দগাঁও থানা এলাকায় নতুন চারটি থানার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ চারটি থানা হলো বঙ্গবন্ধু টানেলের দুই প্রান্তে দুটি থানা, মোহরা থানা ও কাট্টলী থানা। এ প্রস্তাবটি কেবিনেট সেক্রেটারির দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় চট্টগ্রাম মহানগর ও হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, পটিয়া থানার অংশে চারটি থানা গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুনভাবে আটটি থানা সৃষ্টির ক্ষেত্রে পুলিশ সদর দপ্তরের সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন সিএমপির এই কর্মকর্তা।
১৯৭৮ সালে প্রায় ২০৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছয়টি থানা নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। ২২ বছর পর ২০০০ সালের ২৭ মে সিএমপিতে নতুন আরও ছয়টি থানা যুক্ত হয়। এগুলো হচ্ছে খুলশী, বায়েজিদ বোস্তামী, পতেঙ্গা, বাকলিয়া, হালিশহর ও কর্ণফুলী থানা। এর ১৩ বছর পর ২০১৩ সালের ৩০ মে নতুন আরও চার থানা গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে আকবরশাহ, সদরঘাট, চকবাজার ও ইপিজেড। এ নিয়ে বর্তমানে সিএমপির আওতাধীন থানার সংখ্যা হচ্ছে ১৬টি।
বিশ্বের দশটি দ্রুত বর্ধনশীল নগরের মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। বর্তমানে নগরের জনসংখ্যা ৭০ লাখের বেশি বলে দাবি করে বিভিন্ন সংস্থা। জনসংখ্যার সঙ্গে এই নগরের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে বে-টার্মিনালের কাজ শুরু হবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালে। মিরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে উৎপাদনে যাবে বেশকিছু শিল্পকারখানা। সবকিছু মিলে সামনে শহর এবং শহরতলীতে মানুষের বসবাস বাড়বে। ফলে এত প্রতিষ্ঠান ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন থানার প্রয়োজন। সে সঙ্গে প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে আরও দক্ষ জনবল যুক্ত করা।
সমাজে অপরাধ বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অপরাধ দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে অবশ্যই। তাই সঙ্গত কারণে সিএমপির নতুন থানা বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। সে সঙ্গে আশা করি শুধু থানা বাড়ানোই নয় পুলিশবাহিনী যেন আরও জনবান্ধব হয়ে ওঠে সেদিকেও নজর রাখবে কর্তৃপক্ষ।