তারের জঞ্জাল থেকে মিলতে পারে মুক্তি

পাইলট প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরের প্রায় শতভাগ বৈদ্যুতিক খুঁটি দখল করে রেখেছে ডিস ও ইন্টারনেট লাইনের তার। আনুমানিক ২৬ বছর ধরে জমে থাকা এই তারগুলো একীভূত করে জঞ্জালমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)।

নগরের আন্দরকিল্লা, টেরিবাজার, কোতোয়ালী মোড়, জামালখান, লালখান বাজার, ওয়াসার মোড় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জটলা পাকানো অবস্থায় বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে ঝুলে আছে অনেকগুলো তার। প্রায় শতাধিক ঝুলে থাকা এসব তারে বোঝার উপায় নেই কোন তার কিসের। কেননা প্রায় সবগুলো একই রকম। এছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় দেখা যায়, কিছু তার ছেঁড়া। আর ছেড়া তারগুলো ঝুলে আছে মাটি স্পর্শ করে।

এ তারগুলো নিয়ে কাজীর দেউড়ি এ্যাপোলা মার্কেটের সামনে নির্ঝর নামে এক পথচারী বলেন, ‘মাথার উপরে যে তারগুলো ঝুলে আছে, কোনো সময় আগুন লাগলেই বোঝা যায়। আগুন লাগলে দুই-একদিন অনেক সতর্কতা থাকে। পরে আর কারো খবর থাকে না। এখানে এখন তার ঝুলে আছে। সৌন্দর্য তো বিষয় না। ঝুলে থাকা তারে আছে বিপদ।’

এ প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ঝুলন দাশ বলেন, ‘আমাদের তারগুলো সড়কের মাঝে থাকে। ওখানেও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের ইন্টারনেটের তার ঝুলিয়ে দেয়। ওগুলো আমরা দেখামাত্র সরিয়ে দিই। নগরের সৌন্দর্য যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয়, সেদিকে আমাদের সবসময় নজর থাকে। কিন্তু বৈদ্যুতিক পিলারে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের তার ঝুলে থাকে। ওগুলোর ব্যাপারে পিডিবি বলতে পারবে।’

একই প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বৈদ্যুতিক পিলারের সঙ্গে ঝুলে থাকা তারগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কারণে অগ্নিকা-ের ঝুঁকিও বাড়ে। তাই আমরা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার ও ডিশ ব্যবসায়ীদের তারগুলো সরানোর বিষয়ে কথা বলেছি। তারা বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে তারগুলো সরিয়ে নিবে বলে আশ্বাসও দিয়েছে।’

এসব তার কবে সরিয়ে নিবে জানতে চেয়ে কথা হয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সচিব রাজিব দাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সার্ভিস প্রোভাইডারদের তাদের তারগুলো গুছিয়ে নিতে বলেছি। তবে শুরুতে আমরা বারেক বিল্ডিং মোড় থেকে শেখ মুজিব রোড হয়ে দেওয়ান হাট পর্যন্ত একটা পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এটি সফলভাবে করতে পারলে পুরো নগরে আর তারের জঞ্জাল থাকবে না।’

প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে প্রায় ২৬ বছর ধরে তার ঝুলানো হয়েছে। ঝুলে থাকা ৮০ শতাংশ তারের প্রতিষ্ঠানও এখন নাই। বর্তমানে চারশ’র অধিক প্রতিষ্ঠানের তার রয়েছে। ওগুলো সব একীভূত করে বৈদ্যুতিক তারের আড়াই থেকে তিন ফুট নিচে রাখা হবে। এতে বৈদ্যুতিক তার বা সংযোগের সঙ্গে আর কোনো ঝামেলা হবে না। এছাড়া তারগুলো দেখতেও আর দৃষ্টিকটু হবে না। এ প্রকল্পের সব ধরনের কাজ শেষ হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সবগুলো সংযোগকে এমনভাবে একটা লাইনে আনবো, যেন বৈদ্যুতিক তারের মতো তারগুলো শক্তভাবে বাঁধা থাকবে। এছাড়া জটলা পাকানো কোনো তার থাকবে না।’