জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর লক্ষ্য বাংলাদেশের

সুপ্রভাত ডেস্ক »

ব্যাট-বল হাতে জ্বলে উঠে জয় দিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরুর লক্ষ্য নিয়ে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। ধর্মশালায় বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

বিশ্বকাপের আগ মুর্হূতে মাঠ ও মাঠের বাইরের বিভিন্ন ঘটনায় বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে ভারতে পৌঁছার পর পিছনের সব বিতর্ক পিছনে ফেলে টাইগাররা মাঠে নামতে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। খবর বাসসের।

তামিম ইকবালের ১২ মিনিটের একিট ভিডিও এবং এর প্রেক্ষিতে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের আক্রমণাত্মক জবাবের কারণে মাঠের বাইরের পরিস্থিতি তথা ড্রেসিংরুমের পরিবেশে

প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিলো। তবে সুজন জানিয়েছেন, বিশ^কাপে বড় অর্জনের জন্য বাংলাদেশ দল ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় মাঠের বাইরের সব কিছুই ঢাকা পড়ে গেছে।

কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবতই মাঠের পারফরমেন্সে আশানুরূপ ফল নেই বাংলাদেশের। এ বছর ২০টি ম্যাচ খেলে সমান ৯টি করে ম্যাচে জয় ও হারের পাশাপাশি দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে টাইগারদের। ওয়ানডে ফরম্যাটে শক্তিশালী দলে পরিণত হবার পরও পরিসংখ্যান মোটেও ভালো নয় বাংলাদেশের। এ বছর ঘরের মাঠে তিনটি ওয়ানডে সিরিজ হারের (ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে) কারণে চিন্তার ভাঁজ বাংলাদেশের কপালে। অথচ ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ঘরের মাঠে মাত্র একটি সিরিজ হেরেছিলো টাইগাররা।

এ বছরই প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মত ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছেও ওয়ানডে সিরিজ হারে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপের আগে এই দু’টি সিরিজ হার অবশ্যই চাপে রাখবে বাংলাদেশকে। যদিও বিশ^কাপের প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে সহজেই জয় পেয়েছে টাইগাররা। কিন্তু দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচেবর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে হারের কারণে আত্মবিশ^াসে ঘাটতি নিয়েই বিশ^কাপের মঞ্চে খেলতে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

বিশ্বকাপে দলের ভরসার প্রতীক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। যদিও গত মাসে শেষ হওয়া এশিয়া কাপের পর আর কোন ম্যাচ খেলেননি তিনি। গোড়ালির ইনজুরির কারনে বিশ্বকাপের আগে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচেও খেলতে পারেননি সাকিব।

ফিট হয়ে উঠায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলবেন সাকিব। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হারের স্মৃতি নিয়ে আফগানিস্তান বাঁধা টপকাতে পারবে কিনা বাংলাদেশ, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

বিশ^কাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলংকাকে হারালেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায় আফগানিস্তানের।
বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতে, অতীত নিয়ে না ভেবে লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগী হতে চান।

হাথুরুসিংহে বলেন, ‘এই বিশ্বকাপে আমরা চার বা পাঁচটি ম্যাচ জয়ের সামর্থ্য রাখি এবং সেটা পারলে আমাদের সেমিফাইনালে যাবার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি।’

যদিও আইসিসি বিশ্বকাপের এক আসরে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচের বেশি জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ নিয়মের কারণে তিনটি ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলো টাইগাররা। যা বিশ^কাপের মঞ্চে এ যাবত কালে বাংলাদেশের সেরা পারফরমেন্স হিসেবে বিবেচিত।

দশ দলের বিশ্বকাপ ফরম্যাটে একে অপরের বিপক্ষে ম্যাচ থাকার কারনে সেমিফাইনালে উঠার পথটা বেশ প্রতিন্দ্বন্দিতাপূর্ণ। এই ফরম্যাট খেলোয়াড়দের শক্তি, একাগ্রতা এবং দৃঢ়তার পরীক্ষা মেলে।

২০১৫ বিশ^কাপে বাংলাদেশের কোচ ছিলেন হাথুরুসিংহে। ঐ আসরেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিলো টাইগাররা। হাথুরু বলেন, ‘সব দলকে হারানোর অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। আমাদের প্রতিভাবান ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। মূল বিষয় হচ্ছে- নির্দিষ্ট দিনে ভালো খেলা।’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১৫টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। জয়ের পাল্লা ভারী টাইগারদেরই। ৯টিতে জয় ও ৬টিতে হেরেছে বাংলাদেশ।

এখনও প্রথম ম্যাচের একাদশ চুড়ান্ত করেনি বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে সুযোগ পাবার দৌঁড়ে তানজিদ হাসান তামিম এগিয়ে থাকলেও নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন, উইকেট ব্যাটিং সহায়কা হওয়ায় হাই-স্কোরিং ম্যাচ হবে। বোলিং বিভাগকে শক্তিশালী করতে বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে একাদশে রাখতে পারে বাংলাদেশ। যদি নাসুম খেলেন এবং ইনিংসের শুরুতেই তানজিদকে দেখা যায় তাহলে একাদশে সুযোগ পাওয়া কঠিন মাহমুদুল্লাহর জন্য। বাকীরা ইতোমধ্যে একাদশে নিজেদের জায়গা পাকা করেছেন।