নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দনাইশ :
চন্দনাইশ উপজেলায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় বি ধান ৬৭ জাতের নমুনা শস্য কর্তনের মধ্য দিয়ে বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা।
চন্দনাইশে বোরোধানের ফলন বাম্পার হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে রয়েছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশির ভাগ জমির ধানই পাকতে শুরু করেছে। ধান ঘরে তুলতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন কৃষক-কৃষাণিরা। তবে বাজারে ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই দাম কমতে শুরু করায় ভরা মৌসুমে ধানের ন্যায মূল্য পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে কৃষকরা। এছাড়াও করোনা ভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট শ্রমিক সংকট ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে এক মাসের মধ্যে চন্দনাইশ উপজেলার সব ধান ঘরে তোলা সম্ভব।
গতকাল ১৯ এপ্রিল চন্দনাইশ উপজেলার বরকল ইউনিয়নের কানাইমাদারী এলাকায় উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে নমুনা শস্য কর্তনের মধ্য দিয়ে ধান কাটা শুরু হয়েছে।
এছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে। চন্দনাইশ উপজেলার কৃষকরা যেন বছরের একটিমাত্র ফসল বোরো ধান নিরাপদে-নির্বিঘেœ ঘরে তুলতে পারেন সে লক্ষ্যে নানা ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
উপজেলার কানাইমাদারী গ্রামের আবদুর ছমদ জানান, ২ একর বোরো ৬৭ জাতের ধান কেটেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো। তবে ভরা মৌসুমে ধানের ন্যায মূল্য পেলে কৃষকরা লাভবান হবে।
পরবর্তীতে ধান উৎপাদনের ব্যাপারে সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বললে অধিকাংশ কৃষক বলেন, তাদের বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। পাশাপাশি যেকোন ধরনের অসুবিধার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করার কথাও বলেন।
চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন ব্রি ধান ৬৭ সম্পর্কে বলেন, এই ধানের জাত লবণাক্ততা সহনশীল এবং এ ধানের চাল মাঝারী চিকন, ভাত সাদা ও ঝরঝরে তাই খেতেও সুস্বাদু। প্রচলিত অন্যান্য জাতের চেয়ে এ ধানে রোগবালাই এবং পোকার আক্রমণ কম হয়। তাই কৃষক ফলনও বেশী পায়।
চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিসার স্মৃতি রাণী সরকার জানান, এবার চন্দনাইশ উপজেলায় ব্রি ধান ৬৭ জাতের বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলা চলে। আজকে সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে সব ধান ঘরে তোলা সম্ভব। চলতি বোরো মৌসুমে ২টি পৌরসভাসহ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে এবার ৪০ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ৬৭ জাতের বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ব্রি ধান ৬৭ জাতের বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। এ বছর ধানে রোগবালাই যথেষ্ট কম হয়েছে।