চট্টগ্রামে তিনমাস পর মৃত্যুহীন দিন

একদিনে ১১ উপজেলায় নেই নতুন রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক »
টানা তিনমাস পর করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন পার করলো চট্টগ্রাম। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪ মাসের সর্বনিম্ন ৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্তের হার সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম ২ দশমিক ৭১ শতাংশ। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রামে সর্বশেষ মৃত্যুশূন্য দিন কেটেছে গত ১৪ জুন। এদিন ১৫৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ১৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে কম নতুন রোগী পাওয়া যায় ১৬ মে। এদিন ৩৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৭ জনের দেহে করোনা ভাইরাস মিলে। সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত ১ জন মারা যান। তবে চট্টগ্রামে গতকালের আক্রান্তের হার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণ হার এর চেয়ে কম, ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ পাওয়া গিয়েছিল।
চট্টগ্রাম জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু শূন্য দিনে ১৫১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪১ জনের।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবসহ চট্টগ্রামের ১১টি ল্যাবে ১ হাজার ৫১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৩৪ জন নগরের এবং ৭ জন উপজেলার। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে সর্বমোট ১ লাখ ১ হাজার ১৭২ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে নগরের ৭৩ হাজার ৩২৮ জন এবং উপজেলার ২৭ হাজার ৮৪৪ জন।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু পৌছেছে শূণ্যের ঘরে। তবে এনিয়ে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ২৭৯ জনে। যার মধ্যে নগরে ৭০৬ জন এবং উপজেলায় ৫৭৩ জন।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ জন, বিআইটিআইডি ল্যাবে ৪৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতেল ল্যাবে ১৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯ জন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি ল্যাবে ১৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর মধ্যে ইমপেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ জন, শেভরণ হাসপাতাল ল্যাবে ৪৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ জন, ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ জন, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, জেনারেল হাসপাতাল আর টি আর এল ল্যাবে ৪ জন এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় কারোর করোনা শনাক্ত হয়নি।
এদিকে ১৪ উপজেলার মধ্যে ১১ উপজেলায় নতুন করোনা রোগী পাওয়া যায়নি। উপজেলায় শনাক্ত ৭ রোগীর মধ্যে হাটহাজারীতে ৩ জন, মিরসরাইয়ে ২ জন, সীতাকুণ্ড ১ ও বোয়ালখালীতে ১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন লকডাউন, টিকাদানের কারণে সংক্রমণ কমছে। এছাড়া অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। সেকারণেও কমছে সংক্রমণ। চিকিৎসকরা বলছেন টিকা নিলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে টানা দুই থেকে তিন সপ্তাহ করোনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে ‘স্ট্যাবল ট্রান্সমিশন’ বলা যাবে। মানে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চট্টগ্রামে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে করোনা সংক্রমণ কমছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, করোনা সংক্রমণ কমলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানায় অবহেলা করলে সংক্রমণ আবারো বাড়বে।