চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থ সংরক্ষণ করেই কাজ করব

বন্দরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্বের যে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য কাজ করতে চায়, আমরা তাদের স্বাগত জানাবো। এটাই হচ্ছে সরকারের নীতি। আমরা দেশের স্বার্থ, চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থ সংরক্ষণ করেই তাদের সঙ্গে কাজ করব।’

তিনি রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ইকুইপমেন্ট, অফিসার্স ডরমেটরি ভবন ও ট্রেনিং সিমুলেটর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা করেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল মো. সোহায়েলের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর করছি, পায়রা বন্দর করেছি। মোংলা পোর্ট আপডেটগ্রেশন করছি। বে-টার্মিনালের কার্যক্রম অনেকদূর এগিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের আপডেট ইকুইপমেন্ট দিয়ে পণ্য ওঠানামা করানো হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে আমাদের সক্ষমতা। এ সক্ষমতায় আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। আমরা দেশ-বিদেশ নয়, সারা বিশ্বের সঙ্গে থাকতে চাই। পৃথিবীর সকল বিখ্যাত অপারেটর আমাদের কাছে প্রপোজাল (প্রস্তাবনা) দিয়েছে।

টানেলের সুফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সমুদ্র আজ অবারিত। কোথাও কোনো বাধা নেই। এ অবারিত সমুদ্র পথেই সমগ্র পৃথিবী আমাদের এখানে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করতে চাচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর সূদুর প্রসারী চিন্তার ফসল। এটারই একটি অংশ কর্ণফুলী টানেল। এটা পদ্মা সেতুর মতো আমাদের গর্ব এবং অহংকারের জায়গা আরও বাড়িয়ে দেবে। যেহেতু এটা চট্টগ্রামে; সেহেতু এপারের ব্যবসা ওপারে চলে যাবে। এটার সুফল শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, সমগ্র দেশবাসী ভোগ করবে।’

স্বার্থান্বেষী মহলের অপচেষ্টার কথা উল্লেখ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যখন উন্নয়নের রোডম্যাপে এগিয়ে যাচ্ছে এমন সময় স্বার্থান্বেষীরা দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা মানবাধিকারের কথা বলে উন্নয়নকে টেনে ধরতে চায়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ফিলিস্তিনে পাখির মতো মানুষ মারছে। সেখানে মানবাধিকারের কথা বলার লোক নাই। দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কোনো অপশক্তিকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।’

পরে নৌপ্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরে সাত ধরনের ২৪টি যন্ত্রপাতির উদ্বোধন করেন। সেগুলো হলো- ২০২২ সালে সংগ্রহ করা ২৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার ৪টি কি-গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৭০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ৬টি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ২টি কনটেইনার মুভার এবং ২০২৩ সালে সংগ্রহ করা ১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকার ৪টি রিচ স্টেকার, ২৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ৪টি ভেরিয়েবল রিচ ট্রাক, ২০২১ সালে সংগ্রহ করা ২০ কোটি ৯ লাখ টাকার ১০০ টন ক্ষমতার ২টি মোবাইল ক্রেন, ১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ৫০ টন ক্ষমতার ২টি মোবাইল ক্রেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম বন্দরের অফিসার্স ডরমেটরি ভবন ও ট্রেনিং সিমুলেটর উদ্বোধন করেন।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী সকালে চট্টগ্রামে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের (এনএমআই) ২৫তম ও এনএমআই, মাদারীপুরের ১৪তম ব্যাচের পাসিং আউট অনুষ্ঠান এবং বন্দরের অনুষ্ঠান শেষে কৈবল্যধাম এলাকায় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) নির্মিত আনসার ক্যাম্প উদ্বোধন করেন।