নিজস্ব প্রতিনিধি,চকরিয়া »
চকরিয়ায় গরু চুরির অপবাদে মা-মেয়েকে রশিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় আলোচিত হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিরানুল ইসলাম মিরানের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু হবার পর বেরিয়ে আসছে নানা অপকর্ম।অনুসন্ধানে জানা গেছে, একসময় মেকানিক হিসেবে কাজ করতেন মিরান। ২০১৬ সালে বনে যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। এরপর নৌকার টিকেটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। শুরু হয় ক্ষমতার অপব্যবহার। চারবছরের ব্যবধানে প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান মিরান এখন বিপুল সম্পদের মালিক। বনে গেছেন কোটিপতি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হারবাং স্টেশনের পূর্ব পাশে বনবিভাগের রিজার্ভ জায়গায় তাঁর আছে ৮টি বিল্ডিং। এসব বাড়ি ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ টাকা। অভিযোগ আছে, জনগনের নামে সরকারি বরাদ্দ থেকে চারটি ডিপ টিউবওয়েল নিয়ে একটি নিজের বাড়িতে, আরেকটি নিজের মার্কেটে এবং বাকি দুইটি নিজের মৎস্যঘেরে বসিয়েছেন চেয়ারম্যান মিরান।২০১৬ সালের জুন মাসে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর ইতোমধ্যে চারটি গাড়ির মালিক হয়েছেন চেয়ারম্যান মিরান। নামে- বেনামে বর্তমানে তিনি মোট ৩১ একর জায়গার মালিক বলে নিশ্চিত করে স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় লোকজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার চার বছরের ব্যবধানে কিভাবে এত সম্পদের মালিক হয়েছেন তা উদঘাটনে দুদুকের অনুসন্ধানের দাবি তুলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পুরনো অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদ অথবা নিজ বাড়িতে সালিশবৈঠকের নামে বিভিন্ন সময় মানুষকে মারধর করার। এমনকি বিচারের নামে ২০১৮ সালের ৪ মে হারবাং শাহ সুফি মাজারের খাদেম মো. ফয়েজ আহমদকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে চেয়ারম্যান নিজ হাতে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যান মিরানসহ দুজনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে একটি হত্যা মামলা হয়েছে।হারবাং লাল ব্রিজ এলাকার গিয়াস উদ্দিন, সোহেল উদ্দিন, ৭নং ওয়ার্ডের রাশেদ ওরফে কালো ড্রাইভারকে সালিশবৈঠকের নামে মারধর করেন। বনবিভাগের রিজার্ভ সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ নিম্পত্তি নামে হারবাংয়ের পশ্চিম ভিলেজারপাড়ার ওবাইদুল হাকিমের ছেলে বাদি মোজাফ্ফর আহমদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়ার পর ফের একই এলাকার কালামিয়ার ছেলে বিবাদি আলী আহমদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তার পক্ষে রায় দেন চেয়ারম্যান মিরান। জানা গেছে, গরু চুরির অপবাদে রশি দিয়ে বেঁধে মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। এর পর রবিবার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হয়। কিন্তু তিনি আত্মগোপনে থাকায় তাঁর মোবাইল ফোনের সংযোগ বন্ধ রয়েছে।