কুশীলবদের চরম শাস্তি চান নাছির

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন আ জ ম নাছির উদ্দীন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: মহানগর আওয়ামী লীগের সভা

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা যদি বুঝতে চেষ্টা না করি এখনও কেউ নিরাপদ নই, তাহলে নিঃশেষ হয়ে যাবো। তখন আমাদের সকল অর্জন ব্যর্থ হয়ে যাবে। কেননা আগস্ট ট্র্যাজেডির নেপথ্যের কুশীলবেরা যে-কোনো মুহূর্তে ফণা তুলবে। ওদের বিষাক্ত ছোবলে আমাদের রক্ত নীল হয়ে যাবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আরাধ্য সোনার বাংলা বাস্তবায়নের যে-স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্ন যদি ধূলিসাৎ হয়ে যায়, তা হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাসের পাতায় অভিশপ্ত হয়ে থাকবো। তাই আজ আমাদের একটাই শপথ ও অঙ্গীকার হোক, কোনো পাপ যেন আমাদের স্পর্শ না করে।
তিনি গতকাল বিকেলে রীমা কনভেনশন হলে ২১ আগস্ট ট্র্যাজেডির ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ’৭৫-এর আগস্টের অসম্পূর্ণ নীলনকশা সম্পূর্ণ করতেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করা। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। যারা এই মিশনের কুশীলব তারা নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা ও বাঙালির জাতিসত্তা অরক্ষিত থেকে যাবে।
তিনি বলেন, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলসহ হত্যা-ক্যু-প্রাসাদ চক্রান্তের জাল ছিন্ন করতে হবে। যারা আমাদের সরাসরি প্রতিপক্ষ, তাদের চিনি এবং তারা দৃশ্যমান। এদের প্রতিহত করা অবশ্যই অসম্ভব নয়। কিন্তু অদৃশ্য ও চোরাবালির মত ফাঁদ সৃষ্টিকারীদের নির্মূল করা সহজ নয়। তারা আমাদের বুকে-পিঠে ছুরি বসাতে মুখিয়ে আছে। তাই প্রথমে ঘরশত্রুদের কাছ থেকে নিজেদের রাহুমুক্ত করার পর দৃশ্যমান প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করাটা সহজ হবে। তিনি সকল রক্তাক্ত অঘটনের নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে চরম শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
মহানগর আওয়ামী লীগর সহসভাপতি ও চসিক প্রশাসক আলহাজ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, রাজনৈতিক চেতনাহীন কেউ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। পরিস্থিতির কারণে জিয়াউর রহমানের মতো যারা মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে, তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে। এই জিয়াউর রহমানই ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রধান কুশীলব।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আগস্ট মাস এলেই বাঙালির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এ মাসেই একাত্তরের পরাজিতশক্তি বা পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নকামীরা ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ট্র্যাজেডি ঘটিয়েছে। ষড়যন্ত্র ও হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে শেষ করতে চেয়েছে। তবে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেনো শক্তিই কখনো রুখতে পারবে না।
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় ২১ আগস্ট ট্র্যাজেডির ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ, সহসভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা শেখ মোহাম্মদ ইসহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, আইন সম্পাদক এডভোকেট শেখ ইফতেখার সায়মুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, শ্রম সম্পাদক আবদুল আহাদ, কার্যনির্বাহী সদস্য এম. এ জাফর, থানা আওয়ামী লীগের আলহাজ শাহাবউদ্দিন আহমদ, হাজি ছিদ্দিক আলম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ সামসুল আলম, আবুল হাশেম বাবুল, আবদুল্লাহ আল ইব্রাহিম, সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ রশীদ, আলহাজ শফর আলী, সম্পাদকম-লীর সদস্য চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ শমসের, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজি মো. হোসেন, হাজি জহুর আহমদ, আবু তাহের, শহীদুল আলম, নির্বাহী সদস্য আবুল মনছুর, গাজী শফিউল আজিম, আলহাজ পেয়ার মোহাম্মদ, সৈয়দ আমিনুল হক, বখতিয়ার উদ্দিন খান, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কিষাণ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মোহব্বত আলী খান, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, ডা. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, হাজি বেলাল আহমেদ।
আলোচসভার পূর্বে ২১ আগস্টে শহিদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক আইভী রহমানসহ শাহাদাত বরণকারী ২৪ নেতাকর্মীর আত্মার শান্তি কামনা করে মাওলানা হারুন অর রশীদের পরিচালনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞপ্তি