কাস্টমসের জনবল বাড়াতে উদ্যোগ নেবে এনবিআর

সেমিনারে ড. মইনুল

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম কাস্টমসের জনবল ও অবকাঠামো সংকট নিরসনে এনবিআরের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক: বাস্তবায়ন ও আইটি) ড. মইনুল খান। তিনি বলেন, টিআরএসের (টাইম রিলিজ স্টাডি) কারণে কাস্টমস অংশে সময়ক্ষেপণ কমেছে। এখানে ৮ হাজার ডকুমেন্টেশন হয়। সে তুলনায় জনবল ও অবকাঠামো কম। অথচ এখান থেকে দেশের ৭০ শতাংশ রাজস্ব আসে। তাই জনবল ও অবকাঠামো উন্নয়নে এনবিআর উদ্যোগ নেবে।’
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিটোরিয়ামে উদযাপিত আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসের সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে যখন থেকে কম্পিউটার ও অটোমেশনের প্রচলন শুরু হয় আমরা তখন থেকে এই প্র্যাকটিসে আছি। তবে কিছু সময় যেসব সমস্যা হয়, তা নিরসনে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। দেশে অটোমেশনে কাস্টমস পাইওনিয়ার। কাস্টমসের মূল ফোকাস এখন আর শুধু রাজস্ব নয়। ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা এখন কাজ করছি। কাস্টমসের সঙ্গে ভ্যাট ও করের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পণ্য উৎপাদন যথাযথ হলে আয়কর ও ভ্যাট আদায় বাড়বে। তাই ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন যথাযথভাবে হলে রাজস্ব আরও বাড়বে।’
‘মিলে নবীন-পুরনো অংশীজন, কাস্টমস করবে লক্ষ্য অর্জন’- এ প্রতিপাদ্য নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান এবং মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনারেটের কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১ কর অঞ্চলের কর কমিশনার মো. শাহাদাৎ হোসেন শিকদার, দ্যা চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক একেএম আকতার হোসেন, চিটাগং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এএম মাহাবুব চৌধুরী এবং উইম্যান চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবিদা মোস্তফা।
মূল প্রবন্ধে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, ‘বাণিজ্য সহজীকরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, চোরাচালান রোধ, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রতিরোধ, দেশি শিল্পের বিকাশসহ কাস্টমসের অনেক দায়িত্ব। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজস্ব আহরণ। দেশের ২৮ শতাংশ রাজস্ব আসে কাস্টমস থেকে। কাস্টমসের মূল ফোকাস এখন ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন।’
ভ্যাট কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীর পরিবর্তন হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। কাস্টমস দিবসে আমরা দেশপ্রেমের শপথ নিয়ে থাকি। আমাদের চেষ্টা থাকবে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই। এ যাত্রা হবে সম্মিলিত-সমন্বিত।’
এএম মাহাবুব চৌধুরী বলেন, ‘দেশে দিনে ১৭ হাজার বিল অব এন্ট্রি হয়। এর সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা জড়িত। সীমিত জনবল দিয়ে এসব সামাল দিচ্ছে কাস্টমস। তাই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি সরকার ও এনবিআরের প্রতি অনুরোধ রইলো, এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় যেন লোকবল আরও বাড়ানো হয়।’
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘কাস্টমস ১৯৯৬ সাল থেকে অ্যাসাইকুডা ব্যবহার করছে। এটি দেশের তথ্যভাণ্ডার। কাস্টমস বর্ডার প্রটেকশনের কাজও করছে। আমাদের স্টেক হোল্ডারদের ৩৯টি জায়গা থেকে সার্টিফিকেট নিতে হয়। এটিকে আমরা একটি ছাতার নিচে নিয়ে আসতে চাই। আজকে আমরা যেখানে এ সেমিনার করছি, আগামী দুই-তিন বছর পরে সেটি হয়তো অন্য জায়গায় করবো। কারণ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ইতিমধ্যে ১৩ তলা ভবন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।’