বদলে যাবে চার উপজেলাবাসীর জীবন
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
সড়ক ও জনপথ বিভাগের অর্থায়নে ৩শ৬১ কোটি টাকা বরাদ্দে চকরিয়া একতাবাজার পহরচাঁদা হয়ে মগনামাঘাঁট বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোগ সম্প্রসারণ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এই একটি সড়কের বদৌলতে জীবনচিত্র বদলের নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে উপকূলীয় চার উপজেলাবাসির। সড়কটি নির্মাণের ফলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পাশাপাশি উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর জনগনের ঝীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছে স্থানীয়রা। দেশের একমাত্র কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামায় প্রথমবারের মতো নির্মিতব্য শেখ হাসিনা বানৌজা সাবমেরিন ঘাঁটিতে যাতায়াত নির্বিঘœ করতে বর্তমান বিদ্যমান চকরিয়া উপজেলার বরইতলী একতাবাজার থেকে মগনামা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ কিলোমিটার সড়ককে ১০ দশমিক ৩ পয়েন্টে উন্নীত করা হবে। তিন প্যাকেজে সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে আগামী ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে। সড়কটির বর্তমান প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট থেকে ১০ দশমিক ৩ পয়েন্ট উন্নীতের কাজ শেষ হলে আমূল পরিবর্তন ঘটবে উপকূলীয় চারটি উপজেলার।সড়কটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘একতা বাজার হতে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি’ সংযোগ সড়ক। গত ২২ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সড়কটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
সওজ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ১ কিলোমিটার হতে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কাংশ প্রশস্তকর, ৬ কিলোমিটার হতে ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কাংশের পেভমেন্ট উঁচুকরণ, প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ। আবার ২০ কিলোমিটার থেকে ২৩ কিলোমিটার পর্যন্ত নতুন করে সড়ক নির্মাণ করা হবে। নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত সড়কাংশ সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনাতে’ যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়ক এবং যা বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়িবাঁধ। প্রকল্পের গাইডবুকে উল্লেখ করা হয়েছে, সড়কটি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার জনসাধারণের যাতায়াতের এবং চকরিয়া, পেকুয়া ও কুতুবদিয়ায় উৎপাদিত লবণ এবং আহরিত চিংড়ি ও সামুদ্রিক সম্পদ দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহনের জন্য একমাত্র এই সড়ক ব্যবহার হবে। এছাড়া মগনামা ঘাঁট হতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে ৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটিতে যাতায়াত একেবারে সহজ হবে। এতে উপকৃত হবেন উপকূলীয় এলাকার অন্তত ১০ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী। প্রকল্পের অন্যতম অঙ্গসমূহ হলো- ২ দশমিক ৮৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। সড়ক বাঁধে মাটির কাজ করা হবে ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৮ দশমিক ৬৮ ঘনমিটার। ৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে নতুন পেভমেন্ট। প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন পায় ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর। সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হবে আগামী ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু কুমার চাকমা বলেন, ‘বিদ্যমান পুরোনো সড়কটিই প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। দুই লেনের বাইরেও এই সড়কের বিভিন্ন অংশে নির্মাণ করা হবে ছোট ছোট সার্ভিস লেনও। যাতে লোকাল গাড়িগুলোও ওয়ানওয়ে চলতে পারে। পানি চলাচলের জন্যও সড়কটিতে থাকবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা।’জানতে চাইলে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম বলেন, ‘ এই সড়কটিই হয়ে উঠবে চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর মানুষের অর্থনীতির চাকা সচলের। একইসাথে প্রধানমন্ত্রীর নামে মগনামায় দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি তথা ‘বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটিতে’ যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হবে এই সড়কটি।
এটির নির্মাণকাজ শেষে সম্ভাবনার নতুন দূয়ার খুলবে চার উপজেলাবাসীর’।