নিজস্ব প্রতিনিধি, উখিয়া :
রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। মুদির দোকান থেকে শুরু করে তরিতরকারির বাজারে যত্রতত্র সিলিন্ডার মজুত ও হাতবদল হওয়ার সুবাদে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত গঠন পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশা করছেন সচেতন মহল। কুতুপালং বাজার, টিএন্ডটি, বালুখালী পান বাজার, থাইংখালী, পালংখালীসহ জনগুরুত্বপূর্ণ লোকালয়ের খোলাবাজারে দেদারছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হতে দেখা গেছে। উখিয়ার দক্ষিণ স্টেশনের অনুমোদিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসহাক ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইসহাক জানায়, রোহিঙ্গাদের জ¦ালানী চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে কতিপয় এনজিও সংস্থা ক্যাম্পে গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণ করলেও তা যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। রোহিঙ্গারা এসব গ্যাস সিলিন্ডার স্বল্প মূল্যে বাইরে বিক্রি করে দেওয়ায় হাটবাজারে অহরহ গ্যাস সিলিন্ডার মজুত ও বিক্রি হচ্ছে। এতে সরকার একদিকে যেমন রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। উখিয়া উত্তর স্টেশনে সিলিন্ডার বিক্রয়কারক রাজীব দাশ অভিযোগ করে বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও মজুতকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তর, জ¦ালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সহ জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার বিধি বিধান থাকলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না। অনুমোদিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়কারী নুর মোহাম্মদ জানায়, ত্রাণ হিসেবে বিতরণের পণ্য সিলিন্ডার এখন তরিতরকারি ও মুদির দোকানে নির্ধারিত মূল্যের চাইতে অধিকতর কম দামে বিক্রি হওয়ায় সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়মনীতি উপেক্ষা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা জানায়, রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত খালি গ্যাস সিলিন্ডার গ্রহণ পূর্বক গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার প্রতি মাসে বিতরণ করা হচ্ছে। এসব সিলিন্ডার তারা ব্যবহার করছে না বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে তা জানার বিষয় নয়। উখিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা এমদাদুল হক মিলন জানায়, ২০০৩ সালের অগ্নি নির্বাপক আইনের বিধি অনুযায়ী যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেসব শর্ত অনুযায়ী লাইন্সেস দেওয়া হয়ে থাকে। এর বাইরে যারা খোলা বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে তা প্রতিরোধে ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ জানানোর পর তিনি ভ্রাম্যমান আদালত গঠন পূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^স্ত করলেও তা কার্যকর হয়নি। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো আমিমুল এহসান খান বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রটোকল সামলাতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তাই অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রিকারকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে।