অবৈধ বালি, মাটি পরিবহনের অভিযোগ
রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া :
উখিয়ার বিভিন্ন জনপদে বসবাসরত বৃহত্তর জনসাধারণের যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন গ্রামীণ সড়কগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
চলমান বর্ষায় পাহাড়ী ঢলের পানিতে জনপদগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দুর্ভোগ, সংকট, সমস্যার অন্ত নেই। পাহাড় কাটা মাটি ও অবৈধ বালি পাচারে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এমন পরিণতি স্থানীয় গ্রামবাসীদের ভোগ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় প্রত্যেক্ষদর্শী ভুক্তভোগী মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়- খাল, ছড়া, পাহাড় অধ্যুষিত ২৫৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলা শহর উখিয়ার অধিকাংশ গ্রামীণ জনপদ লন্ডভন্ড করে দেয়ার অন্যতম কারণ ভারী যানবাহন চলাচল।
রাজাপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ হরিণমারা গ্রামের রিক্সা শ্রমিক শাহাব উদ্দিন জানান, মাটির তৈরি কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করে মাটি ও বালি ভর্তি ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে তাদের একমাত্র আয়ের উৎস ভাড়ায় চালিত রিক্সা রাস্তায় নামানো সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান জানায়, হরিণমারা ৩নং ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ জনপদে অবস্থিত বনবিভাগের পাহাড় কেটে বালি ও মাটি পাচার কাজে ব্যবহৃত প্রায় অর্ধশতাধিক ডাম্পার গাড়ি দিনরাত বেপরোয় চলাচল করায় জনস্বার্থে ব্যবহৃত গ্রামীণ সড়কগুলোর অধিকতর অংশে খানাখন্দকে একাকার হয়ে পড়েছে। বর্ষায় এ ভাঙন আরো তীব্রতর হওয়ায় মাটি কাদার মিশ্রণে ভর্তি অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। রিকশা চলাচল তো দূরের কথা মানুষ হাঁটাহাঁটি করতে পারছে না।
হরিণমারা ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সুপার মুহাম্মদ নুরুল হক জানায়, প্রধান সড়কের রাজাপালং জাদিমুরা হয়ে দোছরী বড় খাল পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ হরিণমারা অংশের প্রায় ১ কিলোমিটার সহ সংযোগ সড়কের দুই কিলোমিটার ব্রিক সলিন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে হরিণমারা এলাকার ৫টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে ঘরবন্দি অবস্থায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এভাবে এ উপজেলার রতœাপালং ইউপির ইউসুফ আলী সড়ক, তেলীপাড়া সড়ক, ভালূকিয়া সড়ক, রাজাপালং ইউপি’র ফলিয়াপাড়া সড়ক, কোর্টবাজার সৈকত সড়ক, হাজীরপাড়া সড়ক, দোছরী সড়ক, পালংখালীর আনজুমানপাড়া সড়ক, থাইংখালী ঘোনারপাড়া সড়ক, পালংখালী তেলখোলা সড়ক, বটতলীসড়ক সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর অভিযোগ অবৈধ বালি, মাটি ও ইট পরিবহনে ব্যবহৃত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে আঞ্চলিক সড়ক গুলো অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজাপালং ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহ কামাল চৌধুরী জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি কার্পেটিংয়ের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার আবেদন নিবেদন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে কাজ হয়নি। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, হরিণমারা এলাকায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের উন্নয়নের আওতায় আনার ব্যাপারে যাবতীয় দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। উখিয়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মো. শফিউল আলম জানান, জনবল সংকটের কারণে বালি ও মাটি পাচারকারী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম থামানো যাচ্ছে না। তথাপিও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় মাটি ও বালি পাচারে ব্যবহৃত ডাম্পার গাড়ি জব্দ করে সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, অবৈধ বালি ও মাটি পাচার প্রতিরোধে প্রশাসন সক্রিয়।
























































