নিজস্ব প্রতিনিধি, আনোয়ারা :
আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম উপাদান পান। এমন কোনো ঘর খুঁজে পাওয়া মুশকিল পান খান না। ঘরের দাদি-নানি, বাবা-মা, মাসি-পিসি, মামা-কাকা কাউকে না কাউকে পাবেন পান খায়। আবার কেউ শখের বসে হলেও খান পান। পান খাওয়ার অভ্যাস নেই যাদের তারাও কোনো অনুষ্ঠানে ভোজের শেষে এক খিলি পান মুখে পুরতে ভালোবাসেন। আর এ পানের ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক ডাকে সকাল থেকেই সরগরম হয়ে উঠে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার পাইকারি দেশি মিষ্টি পানের হাট। প্রতিদিন অন্তত ৭ লাখ টাকার পান বেচা কেনা হয় এ হাটে। পাইকারি এ পানের বাজারে পাওয়া যায় মিষ্টি সুস্বাদু পান।
উপজেলার কালাবিবি দীঘি মোড়ের সপ্তা হের চারদিন সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বসে এ হাট। আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপ জেলা ছাড়াও এখানে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার খুচরা পান বিক্রেতারা আসেন পান কিনতে। আর বাজারে পানের দাম চড়া থাকায় খুশি বিক্রেতারাও। ব্যবসায়ীদের হিসেব মতে, ২০০টি পানে এক বিরা বড় পান ২৫০-৩৫০, ছোট বিরা ১৫০-২০০, মাঝারি ২৫০-৩০০ এবং বড় সাইজের পান বিক্রি হয় ৩৫০-৪০০ টাকায়। পুরানো এ বাজারে মোহাম্মদ সুমন, মো. আবু কালাম, মীর আহমদ সওদাগর, মিজানুর রহমান, আহমদ নুর, মোহাম্মদ এরশাদ এ পানের ব্যবসা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। এখানে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সুমন বলেন, আমরা প্রতিদিন ভোরে মিষ্টি পান কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে কিনে এখানে নিয়ে আসি। পানগুলো সাজানোর পর সকাল ১১টা থেকে শুরু পানের ডাক। মিষ্টি পা নের চাহিদা বেশি থাকায় বিভিন্ন উপ জেলার খুচরা দোকানীরা পান কিনতে এখা নে আসেন।
বাঁশখালী থেকে পান কিনতে আসা মদন ঘোষ বলেন, ভালো মিষ্টি পানের জন্য কষ্ট করে কক্সবাজারের মহেশখালী যেতে হয় না। এখানে পাওয়া যায় ভালো মিষ্টি পান। দামও স্বাভাবিক। তাই অল্প লাভের আশায় এখান থেকে কিনে নিয়ে দোকানে খুচরা বিক্রি করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান জানান, আনোয়ারা উপজেলায় প্রথম বারের মত বৈরাগ ইউনিয়নের মুহাম্মদপুর গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে মিষ্টি পানের। যারা বিভিন্নস্থান থেকে পান নিয়ে এসে এখা নে বিক্রি করছেন তাদের যদি কোনো ধর নের সহযোগিতা প্রয়োজন হয় আমরা করব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, এ উপজেলায় যারা পানের ব্যবসা করছেন তাদের কথা আমি শুনেছি এবং দেখেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তা প্রশাসন করবে।