ফলন বেশি হলেও ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে কৃষকের শঙ্কা
মো. জাহেদ হোসাইন, সাতকানিয়া :
সাতকানিয়া উপজেলায় কৃষকরা অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসূমে একটু আগেভাগেই আমন ধান কাটা শুরু করেছে। ফলে কৃষক-কৃষাণিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার আমনের ফলন বেশি হলেও অস্থিতিশীল বাজারে সঠিক দাম পাওয়া যাবে কিনা তা’ শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে কৃষকরা। আমন উৎপাদন করে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় কৃষকরা এ বছর অনেক বেশি জমিতে আমন লাগিয়েছে। সাতকানিয়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৭ টি ইউনিয়নে আমন ধান উৎপাদনের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ১শ হেক্টর। তন্মধ্যে স্থানীয় ২শ’ ৫০ হেক্টর, হাইব্রিড ৬শ’ হেক্টর এবং উফশী ১১ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর। ইতোমধ্যে আনুমানিক ১ হেক্টর জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাতকানিয়ার ১টি পৌরসভা ও ১৭ ইউনিয়নের জমিতে সোনালি ধানে ভরে গেছে। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর জমিতে তারা ব্রি-৭৫, ফাতেমা, কালোজিরা, পাইজাম, বিনা-৭, ১৭, ২০, হাইব্রিড, ব্রি-ধান-৭২, ৪০, ৩৩, ৪১, ৪৯, ৫২, বিআর-১১, ১০, ২২, ২৩, বিনি জাতের ধান, ধানী গোল্ড, তেজ ও এজেড জাতের ধান বপন করেছেন। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও বললেন একই কথা। উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের কালামিয়া পাড়ার আমন ধান চাষি মোহাম্মদ ইউসুফ, মোরশেদুল আলম, মো. জাকের হোসেন, বোর্ড অফিস এলাকার আইয়ুব জমাদার, আহমদ হোসেন, সদর ইউনিয়নের মহি উদ্দিন, হাতিয়ারকুলের জাহাংগীর আলম, মো. ইসলাম, জিয়াবুল হক, মো.ইউনুচ জানান, তাদের ক্ষেতের আমন এখনো পুরো পরিপক্ক হয়নি। তাদের আমন কাটা শুরু করতে আরো কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। এ পর্যন্ত কেউ ১ কানি আবার কেউ ৪-৫ গন্ডার মত জমির ধান কেটেছেন। অধিকাংশ জমিতে ধান কাটা বাকি রয়েছে। তারা আরো জানান, জমিতে বিআর, ব্রি, হাইব্রিড জাতের ধানসহ অন্যান্য ধানও লাগিয়েছেন। যেসব কৃষক কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সারিবদ্ধভাবে ধান বপন করেছেন তাদের ফলন অন্যদের তুলনায় একটু বেশি হয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস এম জহির ও মুজিবুর রহমান জানান, আমন ধান কাটার সময় এখনও আসেনি। তবে এ মৌসূমে একটু আগেই ধান পেকেছে সে কারণে এ এলাকার কৃষকরা একটু আগে ভাগেই কাটা শুরু করেছে। ধানের বাজার দাম নিয়ে কৃষকের শঙ্কার কথা স্বীকার করে তারা জানান, এবছর আমন চাষিরা অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হবেন যদি সরকারি গুদামে ন্যায্যমুল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন। খোলা বাজারে ধানের দাম কি রকম থাকবে সেটা নিয়ে কৃষকদের শঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়। সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, যে সমস্ত কৃষকরা একটু আগে আমন ধান রোপন করেছেন এবং যাদের জমিগুলো একটু উচু এলাকায় তাদের বেশির ভাগ ধান পেকে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে মাঠের সব ধান কাটতে পারবে। তাছাড়া এবছর আমন ক্ষেতের ফলনও চোখে পড়ার মত। আমি নিজে উপস্থিত হয়ে ক্ষেতের যে সমস্ত ধান কাটা হয়েছে তার ফলন পরিমাপ করে দেখেছি। সে হিসেবে ৪০ শতক জমিতে ৮০ আড়ি বা ৮ মণের উপরে ফলন হয়েছে।