-
চকরিয়ার নয়াচর
ত্রুটিপূর্ণ বীজকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
চকরিয়া উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের আনিছপাড়া গ্রামের বেশিরভাগ কৃষক চাষাবাদ করেন নদীর এপারে। নদীতে জেগেউঠা এই চরকে তাঁরা নাম দিয়েছেন নয়াচর। এবছর সেই নয়াচরের কৃষকের মুখে হাসি নেই। নয়াচরের কৃষক জাহাংগীর আলম অন্যান্য বছরের মতো এবারও দুই কানি জমি ৬০ হাজার টাকা দিয়ে লাগিয়ত নিয়ে চাষ করেছেন মরিচ ক্ষেতের। প্রতিকানিতে চাষ বাবদ খরচ পড়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে। কিন্তু নিম্মমানের মরিচ বীজ রোপন করে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন চকরিয়া উপজেলার পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নের আনিসপাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, বেতুয়া বাজারের আলতাফ হোছাইনের বীজের দোকান থেকে সান ড্রপ কোম্পানির মরিচের বীজ ক্রয় করে তার জমিতে রোপন করেছেন। ভাল বীজের কথা বলে ভেজাল বীজ দিয়ে সব মরিচ গাছ মরে গেছে। সার-বিষ প্রয়োগ করেও বাঁচাতে পারেনি।তার অন্তত দুই লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করেন কৃষক জাহাঙ্গীর আলম।পথে বসেছেন অর্ধশতাধিক কৃষক। এসব কৃষকের অন্তত অর্ধকোটি টাকা ক্ষতি সাধিত হয়েছে। অভিযুক্ত বীজ ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ কৃষকের অভিযোগ, শহীদ অ্যাগ্রো সিড ও সুপ্রিম সিড কোম্পানির নিম্নমানের বীজ দিয়ে প্রতারণা করে তাদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।অভিযোগ অস্বীকার করে শহীদ অ্যাগ্রো সিডের পরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, তার কোম্পানির বীজ উন্নত মানের। মরিচ বীজ সমস্যার হওয়ার কথা না। বিদেশ থেকে আমদানি করা বীজ বিক্রি করছেন। এরপরও তদন্ত করার কথা জানান তিনি। একই কথা বললেন সানড্রপ কোম্পানির চকরিয়ার বিক্রয় প্রতিনিধি আরফাত। তিনি বলেন, আমরা ভেজাল বীজ বিক্রি করিনা। আমার কোম্পানি উত্তর কোরিয়া থেকে উন্নত মানের বীজ আমদানি করে। সেখানে ভেজাল করার কোন সুযোগ নেই। বেতুয়াবাজারের বীজ ও কীটনাশক বিক্রেতা আলতাফ হোছাইন বলেন, অনেক বছর ধরে কীটনাশক ও বীজ বিক্রি করছি। এবার সানড্রপ কোম্পানির বীজ বিক্রি করে এ সমস্যা পড়ছে হয়েছে।
নয়াচর ব্লকে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা জনী নন্দী বলেন, চাষের শুরু থেকে ফলন উঠাপর্যন্ত কৃষকদেরকে চাষের সব বিষয়ে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন ক্ষেতের সব মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। মুলত এটি বীজ কোম্পানির ভেজাল বীজ বিক্রির কারণে ঘটেছে।
কৃষকের অভিযোগ প্রসঙ্গে সুপ্রীম সীডের কক্সবাজার অঞ্চলের (চকরিয়া) সেলস্ ম্যানেজার আরাফাত হোসেন বলেন, আমাদের বীজ মুলত আমদানি করা হয় চীন থেকে। তিনি বলেন, অতিবৃষ্টিতে পানি জমে থাকার কারণে মরিচ গাছে পচন ধরে। এরপর গাছ মরে যাচ্ছে। বিষয়টি অবগত করা হলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, লিখিত অভিযোগ ভেজাল বীজ বিক্রিতে জড়িতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।