নিজস্ব প্রতিনিধি,পটিয়া »
পটিয়ায় করোনার টিকা সরানোর অভিযোগ ওঠেছে। সিনোফার্মের টিকা নিবন্ধন ছাড়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নে গণহারে মানুষকে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টেকনেশিয়ান রবিউল হোসেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর বাড়ির পাশে এই কাজটি করেন। শোভনদন্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ব্যানারে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন ছাড়া গণহারে টিকা প্রদানের বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়।
এর প্রেক্ষিতে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো, সার্জারি) ডা. অজয় দাশকে সভাপতি, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আসিফ খানকে সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নুরুল হায়দারকে সদস্য করে এ তদন্ত কমিটি করে।
রবিবার দুপুরে এই তদন্ত কমিটি উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের অস্থায়ী ক্যাম্প এলাকা পরিদর্শন করেন। গণহারে টিকা দেওয়ার বিষয়টি শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হক নিজেও জানেন না।
জানা গেছে, সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নে করোনা টিকা নিজ উদ্যাগে টেকনেশিয়ান রবিউল চালু করে।
শোভনদন্ডী স্কুল এন্ড কলেজ ও আরফা করিম উচ্চ বিদ্যালয়ে গণহারে টিকাদানের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে তোলপাড় হয়। এ কারণে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন সুষ্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ দাখিল করতে বলা হয়।
চিঠিতে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে উপজেলা, জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মো. রবিউল হোসেন ৩০ জুলাই ও ৩১ জুলাই সিনোফার্মের ভ্যাকসিন অন্যত্র নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে রেজিস্ট্রেশনবিহীন লোকদের প্রদান করা হয়।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টেকনেশিয়ান রবিউল আলম জানিয়েছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা টিকা নিতে প্রতিদিন লোকজন ভিড় করছেন। মূলত চাপ কমাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মৌখিক আলাপ করে প্রায় ২ হাজার টিকা শোভনদন্ডী ইউনিয়নে দুটি ক্যাম্পের মাধ্যমে নিবন্ধনসহ লোকজনকে দেওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সব্যচাষী নাথ জানিয়েছেন, শোভনদন্ডীতে বিনা অনুমতিতে ২টি ক্যাম্প করে টিকা প্রদানের বিষয়টি তিনি জানেন না। ইপিআই রবিউল একক সিদ্ধান্তে কাজটি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। এতে যদি কোন ধরনের অনিয়ম ও টিকা সরানোর সত্যতা মেলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি ব্যবস্থা নেবেন।